আসাদুজ্জামান খান কামাল, আব্দুল আওয়াল মিন্টু, সাইফুল আলম নীরব, সরকার মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ২৪, ২৫, ২৬, ২৭, ৩৫ ও ৩৬ নং ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত ঢাকা-১২ আসন। জাতীয় সংসদের ১৮৫তম এই আসনটি তেজগাঁও, শেরে বাংলা নগর আসন নামে পরিচিত। আরও আছে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল, হাতিরঝিল, শেরেবাংলা নগর ও রমনার এক অংশ। এই আসনে সরকারপ্রধানের বাসভবন গণভবন, জাতীয় সংসদ ভবন, সংসদ সদস্যদের বাসভবন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় অবস্থিত। ফলে আসনটিকে বেশ গুরুত্বের সঙ্গেই বিচার করে সব রাজনৈতিক দল।
এই আসনে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের আসাদুজ্জামান খান কামাল বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হন। একাদশ সংসদ নির্বাচনেও আওয়ামী লীগের আসাদুজ্জামান খান বিজয়ী হন। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের আসাদুজ্জামান খান নৌকা প্রতীকে পান এক লাখ ৯১ হাজার ৮৯৫ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির সাইফুল আলম নীরব ধানের শীষ প্রতীকে পান মাত্র ৩২ হাজার ৬৭৮ ভোট। কারচুপির অভিযোগে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচন বর্জন ও ফল প্রত্যাখ্যান করে।
পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, পঞ্চম, ষষ্ঠ ও অষ্টম সংসদে বিএনপি; সপ্তম, নবম, দশম ও একাদশ সংসদে আওয়ামী লীগ বিজয়ী হয়। এ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। সরকারের টানা তিন মেয়াদের সবচেয়ে বেশি সময় ও সফলতম স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে ধরা হয় তাকে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি আওয়ামী লীগের শক্তিশালী মনোনয়ন প্রত্যাশী।
রাজধানীর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ও আলোচিত এ আসনের নির্বাচনী আমেজ লক্ষ্য করা গেছে। নির্বাচনের তফসিল এখনো ঘোষণা না করা হলেও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ বিএনপি ও জাতীয় পার্টির তৎপরতা চোখে পড়ে। পাড়া-মহল্লায় পোস্টার ও ব্যানারে ছেয়ে গেছে। আসন্ন নির্বাচনে এ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে আলোচনার শীর্ষে রয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এমপি ও আসমা জেরিন ঝুমু, বিএনপির সাইফুল আলম নীরব, আব্দুল আওয়াল মিন্টু, আনোয়ারুজ্জামান আনোয়ার ও জাতীয় পার্টির সরকার মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন। আওয়ামী লীগের বর্তমান এমপিই আবারও মনোনয়ন পাচ্ছেন এমন ধারণাই সবার মনে। কারণ বিগত তিনটি নির্বাচনেই এ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী হিসেবে এমপি নির্বাচিত হবার পর আসাদুজ্জামান খান কামাল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
এ আসনে আওয়ামী লীগের আর প্রভাবশালী তেমন কোনো প্রার্থী না থাকলেও মহিলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আসমা জেরিন ঝুমুও বেশ আলোচনায় রয়েছেন। তিনি এবার মনোনয়নের জন্য কোমর বেঁধে মাঠে নেমেছেন। মগবাজারের সরদার পরিবারের মেয়ে হিসেবে আওয়ামী লীগের হাইকমান্ডের সঙ্গেও রয়েছে তার বিশেষ যোগাযোগ ও আশীর্বাদ। তার পরিবারের ওসমান গনি সরদার, আক্তার সরদার ও মোক্তার সরদার আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠালগ্নের ত্যাগী ও দাতা হিসেবে পরিচিত। মগবাজারসহ রমনা তেজগাঁও এলাকায় পারিবারিক প্রভাবও কম নয়। ছাত্রলীগের হাতেখড়ি নিয়ে শুরু করা দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে তিনি কেন্দ্রীয় মহিলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
বিগত ওয়ান ইলেভেনের সময় রাজপথের আন্দোলন-সংগ্রামে তুখোড় ভূমিকা পালনকারী ঝুমু পরে জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত আসন (লক্ষ্মীপুর) থেকে মহিলা এমপি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলায় আহত ঝুমু মনে করেন, এ আসনে তিনিই আওয়ামী লীগের যোগ্য প্রার্থী। তাকে মনোনয়ন দেওয়া হলে ত্যাগী নেতাদের প্রতিই মূল্যায়ন করা হবে বলে উল্লেখ করে ঝুমু বলেন, সারাজীবন আমার বাপ- দাদার গোষ্ঠী আওয়ামী লীগের জন্য ত্যাগ করে গেছেন। আমিও বিগত বিএনপি-জামায়াতের সময় নির্যাতিত-নিষ্পেষিত হয়েছিলাম। আমাদের জমিজমা বাড়িঘর দখল করে নিয়েছে। একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলায় আহত হয়েও আইভি আপাকে টেনে ধরে গাড়িতে তুলে দিয়েছি। দলের দুর্দিনে থাকলেও সুদিনে মূল্যায়ন পাবার আশা তো করতেই পারি। আশা করি দল এবার আমাকেই মনোনীত করবে।
এ বিষয়ে এলাকাবাসীর সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়- বর্তমানে আসাদুজ্জামান খান কামালেরই আবারও মনোনয়ন পাবার সম্ভাবনা উজ্জ্বল। এলাকার কাউন্সিলর শফিউল্লাহ জানালেন, এমন হেভিওয়েট প্রার্থী বাদ দিয়ে আর কাউকে মনোনয়ন দেওয়ার সম্ভাবনা একেবারেই নেই। বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিলেও জোট মহাজোটের যোগ-বিয়োগেও তিনিই ঠিক যোগ্য প্রার্থী হিসেবে বিবেচিত হবেন। তিনি বলেন, তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল হচ্ছে আওয়ামী লীগের ঘাঁটি। আসন্ন নির্বাচনেও আওয়ামী লীগের বিজয় নিশ্চিত।
সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এ আসনে আওয়ামী লীগ বেশ শক্ত অবস্থানে রয়েছে। রাজধানীর অন্যান্য আসনে কমবেশী দলীয় কোন্দল ও বিভাজন থাকলেও এখানে তেমনটি নেই। দলীয় কোন্দল না থাকায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী যেই হোক, তিনি বেশ নিরাপদেই নির্বাচনী বৈতরণী উতরে যাবেন। মহাখালী টার্মিনালের পরিবহন অফিসের স্টাফ শাহ আলম বলেন, আসাদুজ্জামান খান কামাল বিগত প্রায় দশ বছর ধরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে সফলভাবে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি এলাকায় যথেষ্ট উন্নয়ন করেছেন। এ সময়ে তিনি দলকেও বেশ সুসংগঠিত করেছেন। মূলত উন্নয়নের জোয়ারেই তিনি আবারও মনোনয়ন পাবেন এবং পাসও করবেন বলে আমাদের বিশ্বাস। আমরা চাই তার মতো জনদরদী নেতাই এখানে বারবার জিতুক।
টার্মিনাল এলাকার সাধারণ শ্রমিকদের একজন মিনহাজ বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হলে জনগণের বিপুল ভোটে আসাদুজ্জামান খান আবারও জিতে যাবেন। তার সামনে একে তো বিএনপির কোনো শক্তিশালী প্রার্থী নেই, দ্বিতীয়ত তিনি যে উন্নয়ন করেছেন, মানুষকে তার মূল্যায়ন করতে হলেও ভোট দিতে হবে।
এ আসনের সাধারণ ভোটারদের দৃষ্টিতে, এবারও মনোনয়ন পাবেন আসাদুজ্জামান খান কামালই। কারণ মানুষ হিসেবে তিনি যথেষ্ট ভালো। নেতা হিসেবেও জনপ্রিয়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে শতভাগ সফল ও সার্থক। সব দিক থেকেই তিনি সর্বেসর্বা। সেজন্যই দল তাকে সেই মূল্যায়ন করবে আবারও। আবার দল হিসেবে আওয়ামী লীগ এখানে যথেষ্ট সংগঠিত ও সুশৃঙ্খল ও ঐক্যবদ্ধ। সেজন্যই নির্বাচন যতই কঠিন হোক, তারা জিতবেন এমন বিশ্বাস সাধারণ মানুষেরও।
এখানকার হোটেল ব্যবসায়ী জব্বার বলেন, বিএনপিকে নির্বাচনে জিততে হলে অবশ্যই কামালের চেয়ে শক্তিশালী ও জনপ্রিয় নেতাকে মনোনয়ন দিতে হবে। যা এ আসনে আপাতত দেখা যাচ্ছে না। সে রকম সম্ভাবনাও নেই। এজন্য আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে কামালই নাম্বার ওয়ান হিসেবে বিবেচিত হবেন বলে দলীয় নেতাকর্মীর পাাশাপাশি সাধারণ মানুষের দৃঢ় বিশ্বাস।
জানতে চাইলে ২৬ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি শামীম হাসান বলেন, আওয়ামী লীগ প্রার্থী বর্তমান এমপি ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি এর আগেও এ আসন থেকে দুবার নির্বাচিত হয়েছেন। ব্যাপক উন্নয়নমূলক কার্যক্রম আর পরিষ্কার ইমেজের মানুষ হওয়ায় খুব সহজেই আমরা সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছাতে পারছি। আশা করি, আসন্ন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের জন্য আমরা আবারও সফলতা বয়ে নিয়ে আসব।
এদিকে নির্বাচন নিয়ে চরম অনিশ্চয়তা ও হতাশায় রয়েছেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। তাদের বিশ্বাস, বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচনে কিছুতেই বিএনপি জিততে পারবে না। আবার নির্বাচনে গেলেও তেমন শক্তিশালী প্রার্থী এখানে নেই। সর্বশেষ একাদশ সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন পেয়েছিলেন জাতীয়তাবাদী যুবদলের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম নীরব। নেতাকর্মীদের বিশ্বাস, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি আবারও মনোনয়ন চাইবেন। এ ছাড়া মনোনয়ন চাইবেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আব্দুল আউয়াল মিন্টু, ঢাকা উত্তর বিএনপির সহ-সভাপতি ও ব্যবসায়ী মো. সাহাবুদ্দিন আহমেদ, সাবেক কমিশনার ও ঢাকা উত্তর বিএনপির ১ নম্বর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান আনোয়ার।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এখন পর্যন্ত মাঠে সক্রিয় হয়নি বিএনপি। আওয়ামী লীগ থেকে ইতোমধ্যে ভোটের জন্য গেলেও, বিএনপির পক্ষ থেকে এখনো কাউকে আসতে দেখা যায়নি। নির্বাচন উৎসাহী ভোটাররা বলছেন, দুই প্রার্থী নিয়ে বিএনপির হিসাব-নিকাশ একটু জটিল রয়েছে।
জানা গেছে, আন্দোলনের হুঁশিয়ারির মধ্যেও নির্বাচনে ভেতরে ভেতরে প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি। দলের পক্ষ থেকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য তিন ক্যাটাগরিতে প্রার্থীর মনোনয়ন চূড়ান্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এক্ষেত্রে সাবেক এমপি, যুবদল ও ছাত্রদলের সাবেক নেতাদের পাশাপাশি পেশাজীবীদের মধ্য থেকেও সক্রিয়দের সুযোগ হবে। তবে প্রার্থী চূড়ান্ত করার আগে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মতামত নেওয়া হতে পারে বলেও শোনা যাচ্ছে। দলের এমন সিদ্ধান্তের খবরে অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার লক্ষ্যে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। নির্বাচনী এলাকাতেও যাওয়া-আসা করছেন। বাড়িয়ে দিচ্ছেন নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ।
এই আসনে নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার দৌড়ে বেশ কয়েকজন বিএনপি নেতার নাম শোনা যাচ্ছে। সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে যুবদলের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি সাইফুল আলম নীরবের নাম জোরেশোরে শোনা যাচ্ছে। নীরব ছাড়াও এই আসনে যেসব বিএনপি নেতার নাম শোনা যাচ্ছে তারা হলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আব্দুল আউয়াল মিন্টু, ঢাকা উত্তর বিএনপির সহ-সভাপতি ও ব্যবসায়ী মো. সাহাবুদ্দিন আহমেদ, সাবেক কমিশনার ও ঢাকা উত্তর বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান আনোয়ার। বিএনপি নেতা আলহাজ মোসাদ্দেক আলী ফালু এই আসন থেকে এর আগে উপনির্বাচনে বিজয়ী হন। তিনি আবারও চাইতে পারেন মনোনয়ন।
জানা গেছে, এই এলাকাতে নোয়াখালী ও চাঁদপুর অঞ্চলের লোকজনের বসবাস বেশি। যে কারণে আব্দুল আউয়াল মিন্টু প্রার্থী হলে আঞ্চলিক হিসেবে তিনি নির্বাচনে ভালো করতে পারেন তার সমর্থকরা আশা করছেন।
এদিকে সাইফুল ইসলাম নীরবও প্রত্যাশা করছেন এই আসন থেকে নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার। তার প্রার্থিতা নিশ্চিত বলে দাবি করছেন তার কর্মী-সমর্থকরা। যুবনেতা হিসেবে এলাকায় জনপ্রিয়তার পাশাপাশি দলেও শক্ত অবস্থান ইতোমধ্যে তৈরি করতে পেরেছেন। গত আন্দোলনের সময় একশ’র উপরে মামলাও হয়েছে নীরবের বিরুদ্ধে। যে কারণে তার মনোনয়ন প্রত্যাশা একটু বেশি।
সাবেক যুবদল সভাপতি সাইফুল আলম নীরবের সমর্থকরা জানিয়েছেন, বিএনপির চরম দুর্দিনে এলাকার নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছেন। কারাবন্দি থাকলেও নেতাকর্মীরা তার ওপরই যথেষ্ট আস্থাশীল। আন্দোলন-সংগ্রামে সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে তিনিই সক্রিয়। বাকিরা তো কেউ মাঠে নেই। একশ’র বেশি মামলা কাঁধে নিয়ে ফেরারির মতো চলাফেরা করতে হচ্ছে। যে কারণে আশাবাদী দল বিবেচনা করবে।
প্রার্থী হওয়ার আগ্রহের কথা জানিয়ে আনোয়ারুজ্জামান আনোয়ার বলেন, ১৯৯২ সাল থেকে এখন পর্যন্ত বিএনপির সঙ্গে আছি। এই এলাকার কমিশনার ছিলাম। দলের কর্মকা-ের বাইরেও সামাজিক অনেক কাজে জড়িত আছি। যে কারণে নেতাকর্মী ছাড়াও এই এলাকার মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্যতা আছে বলে মনে করি। আমার গ্রামের বাড়ি চাঁদপুর। এই এলাকায় চাঁদপুরের অনেক মানুষ বসবাস করে। যে কারণে আঞ্চলিক টানেও মানুষ আমাকে পছন্দ করে। তাই আশা করি দল মনোনয়ন দিলে ভালো করতে পারব। তারপরও দল যে সিদ্ধান্ত দেয় সেটাই মেনে নেব।
অন্যদিকে জাতীয় পার্টি কীভাবে নির্বাচনে অংশ নেবে, এটা এখনো পরিষ্কার নয়। বিএনপি যদি শেষ মুহূর্তে নির্বাচনে আসার ঘোষণা দেয়, তখন হবে এক হিসাব, না এলে হবে আরেক হিসাব। বিএনপি নির্বাচনে এলে আওয়ামী লীগও ১৪ দলীয় জোট অটুট রাখার পাশাপাশি এর কলেবর বৃদ্ধি করতে পারে।
সেক্ষেত্রে জাতীয় পার্টিও মহাজোটে শরিক দল হিসেবে থাকবে। তখন এই আসনে মহাজোটের প্রার্থীর সমর্থনেই নির্বাচনে থাকতে হবে। যদি জাতীয় পার্টি আলাদা নির্বাচন করে তাহলে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর সঙ্গে সরাসরি জাতীয় পার্টির প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। এমন পরিস্থিতিতে এখানে জাতীয় পার্টির মনোনয়ন প্রার্থী হিসেবে সবার শীর্ষে রয়েছেন সরকার মোহাম্মদ সালাউদ্দিন। তিনি জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক। দীর্ঘদিন ধরে নাখালপাড়ার বাসিন্দা। জাতীয় পার্টির জন্মলগ্ন থেকেই ওতপ্রোতভাবে জড়িত। এখন পর্যন্ত জাতীয় পার্টি থেকে তার নামই শোনা যাচ্ছে। তিনি একক মনোনয়ন প্রত্যাশী। দলও তার ওপর যথেষ্ট আস্থাশীল বলে জানিয়েছেন এ আসনের নেতৃবৃন্দ।
সরকার মোহাম্মদ সালাহউদ্দিনের মনোনয়নের বিষয়ে জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন, দলের দুর্দিন সুদিনে তিনিই মাঠে রয়েছেন। জাতীয় পার্টিতে দ্বিধাবিভক্তি থাকলেও মনোনয়ন তিনিই পাবেন। জিএম কাদের গ্রুপের সঙ্গে থাকা সালাহউদ্দিনকে নির্বাচনের মনোনয়ন দেওয়া হবে বলেই মাঠপর্যায়ের কর্মীরা মনে করেন।
জানতে চাইলে সরকার মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন বলেন, জাতীয় পার্টির জন্মলগ্ন থেকে লেগে আছি। এখানে আমাকে ছাড়া আর কেউ নেই যোগ্য প্রার্থী যাকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।