ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১

মনপুরায় কৃষকদের উপর হামলা,পুলিশ সহ আহত ২০

নিজস্ব সংবাদদাতা, ভোলা 

প্রকাশিত: ২১:১০, ১২ জুলাই ২০২৩

মনপুরায় কৃষকদের উপর হামলা,পুলিশ সহ আহত ২০

হামলা

ভোলার বিচ্ছিন্ন মনপুরা উপজেলার দুর্গম কাজীরচরে লাঠিয়াল বাহিনী বন্দোবস্তীর জমির কৃষকদের উপর হামলা ও সংর্ঘষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে পুলিশ ১২ রাউন্ড ফাঁকা শর্টগানের গুলি ছোড়ে। 

বুধবার (১২ জুলাই) দুপুর ১২ টায় মনপুরা উপজেলার ১ নং মনপুরা ইউনিয়নের উত্তরে বিচ্ছিন্ন কাজীরচরে চাষাবাদ করতে গেলে এই হামলার ঘটনা ঘটে। লাঠিয়াল বাহিনী হামলায় ৭ জন পুলিশ ও ১৩ জন কৃষকসহ ২০ জন গুরুত্বর আহত হয়। এদের মধ্যে গুরুত্বর আহত পুলিশের এসআই সাগরকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ভোলা সদরে ও গুরুত্বর আহত কৃষক মোঃ বাহারকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করা হয়। বিকেল ৫ টায় আহত পুলিশ সদস্য ও কৃষকদের উদ্ধার করে মনপুরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়েছে। আহত কৃষকরা অভিযোগ করেন, স্বপন ডাকাতের নের্তৃত্বে মনপুরা বিচ্ছিন্ন চরকলাতলী ও নোয়াখালীর হাতিয়ার লাঠিয়াল বাহিনী হামলা চালিয়েছে।

আহত কৃষক জাবেদ ফরাজী, ফরিদ ও বাহারসহ অন্যান্যরা স্থানীয় সাংবাদিকদের জানান, বিচ্ছিন্ন কাজীর চরে চাষাবাদ করতে গেলে জমির একর প্রতি ৬ হাজার টাকা চাঁদা দাবী করে স্বপন ডাকাত। তা নাহলে চরে চাষাবাদ করতে দিবেনা বলে হুমকী দেয় ডাকাত স্বপন। তখন কাজীরচরে কৃষকদের পক্ষে মাইনুদ্দিন লিখিত ভাবে ভোলা জেলা পুলিশ সুপারকে অভিযোগ করে। পরে পুলিশ সুপারের নির্দেশে বুধবার সকালে মনপুরা থানার পুলিশসহ কৃষকরা কাজীরচরে গেলে স্বপন ডাকাতের নের্তৃত্বে চরকলাতলী ও হাতিয়ার লাঠিয়াল বাহিনী কৃষক ও পুলিশের উপর হামলায় চালায়। 

এ সময় সংর্ঘষ হয়।  এতে ২০ জন আহত হয়। লাঠিয়াল বাহিনীর হামলায় আহত পুলিশ সদস্যরা হলেন, মনপুরা থানার ওসি তদন্ত শংকর তালুকদার, এস আই লুৎফুর, এস.আই সাগর, কনস্টেবল জাহাঙ্গীর, কনস্টেবল শাহীন, কনস্টেবল নাইম ও কনস্টেবল সাইদুল। এছাড়া আহত কৃষকরা হলেন, মোঃ বাহার, মোঃ ফরিদ, জাবেদ ফরাজী, নুর ইসলাম ফরাজী, ছোট মনির ফরাজী, খোকন মেলেটারী, রাসেল ফরাজী, নুরনবী ফরাজী, মতিন ফরাজী, কাসেম, নাসির, মাইনুদ্দিন ও আলাউদ্দিন। এদের সবার বাড়ি উপজেলার হাজিরহাট ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে।

এই ব্যাপারে মনপুরা উপজেলার ১ নং মনপুরা ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান আমানত উল্লা আলমগীর সাংবাদিকদের জানান, সাবেক চেয়ারম্যান আলাউদ্দিনের প্রত্যক্ষ মদদে স্বপন ডাকাতের নের্তৃত্বে লাঠিয়াল বাহিনী বন্দোবস্তীর জমির কৃষকসহ পুলিশের উপর হামলা চালায়। ওই চেয়ারম্যানের নের্তৃত্বে স্বপন ডাকাত কাজীরচরে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করছে। স্বপন ডাকাতের ভয়ে কৃষকরা চরে চাষাবাদ করতে পারছেনা।

এদিকে অভিযোগ অস্বীকার করে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন হাওলাদার জানান, এই ঘটনার সাথে আমি জড়িত নই। আমাকে রাজনৈতিকভাবে কোনঠাসা করার জন্য আমার প্রতিপক্ষ তার লোকজন দিয়ে মিথ্যা রটাচ্ছে। তিনি পাল্টা অভিযোগ করেন,স্বপন ডাকাত সরকারি আবাসনে থাকে। বর্তমান চেয়ারম্যান স্বপন ডাকাতকে আবাসনে ঘর দিয়েছে। বরং স্বপন ডাকাত বর্তমান আলমগীর চেয়ারম্যানের লোক।

মনপুরা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ জহিরুল ইসলাম জানান, কাজীর চরে কৃষকদের চরে চাষাবাদ করতে দিচ্ছেনা স্বপন ডাকাত এই রকম একটি লিখিত অভিযোগ ভোলা জেলা পুলিশ সুপারের কাছে করে কৃষক মাইনুদ্দিন। পরে পুলিশ সুপারের নির্দেশে পুলিশ কৃষকদের নিয়ে ঘটনার তদন্ত করতে বুধবার কাজীরচরে যায়। পরে একপর্যায়ে কাজীরচরে দুই পক্ষ সংঘাতে জড়িয়ে পরে। এ সময় সংর্ঘষের এক পর্যায়ে পুলিশসহ কৃষকদের উপর হামলা চালানো হয়। এতে ওসি তদন্ত সহ পুলিশের সাত সদস্য ও কয়েকজন কৃষক আহত হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে পুলিশ ১২ রাউন্ড শর্টগানের ফাঁকা গুলি ছোঁড়ে। এ ব্যপারে পুলিশ এ্যাসল্ট মামলা প্রস্তুতি চলছে।  রাত ৮ টায় এ রির্পোট লেখা পর্যন্ত হামলার ঘটনায় কৃষকদের পক্ষে কোন লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন মনপুরা থানার ওসি।

 

এমএস

সম্পর্কিত বিষয়:

×