ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১

দাউদকান্দিতে কিশোর গ্যাং নেতা বাঁধন প্রতিপক্ষের হামলায় নিহত

নিজস্ব সংবাদদাতা, দাউদকান্দি

প্রকাশিত: ২১:০৩, ২৩ এপ্রিল ২০২৩

দাউদকান্দিতে কিশোর গ্যাং নেতা বাঁধন প্রতিপক্ষের হামলায় নিহত

নিহত

কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার ইলিয়টগঞ্জ দক্ষিন ইউনিয়নের বাশরা গ্রামের কিশোর গ্যাং নেতা রাহেজুল আমিন বাঁধন(৩৫) প্রতিপক্ষের হামলায় নিহত হয়েছে বলে জানা গেছে৷

রবিবার(২৩ এপ্রিল)দুপুর সাড়ে ১২টায় উপজেলার ইলিয়টগঞ্জ দক্ষিন ইউনিয়নের বাশরা গ্রামে এ হামলার ঘটনা ঘটে। নিহত রাহেজুল আমিন বাঁধন বাশরা গ্রামের আলী আহমেদের ছেলে। সে নোয়াখালী জেলা পুলিশের বরখাস্তকৃত পুলিশ কনস্টেবল। 

পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, রবিবার সকালে  বাশরা গ্রামের বাড্ডাবাড়ীতে হামলা করে কিশোর গ্যাং নেতা বাঁধন ও তার বাহিনী। হামলায় ওই বাড়ীর নুরু মিয়ার ছেলে হাছান আহত হয়। 

এই হামলার জের ধরে দুপুর সাড়ে ১২টায় এলাকার লোকজন বাঁধনের বাড়ীতে হামলা করে।  হামলাকারীরা তার ঘরের দরজা জানালা ভেঙে তার ঘরে প্রবেশ করে। রামদা লাঠিসোটা দেখে ভয়ে বাঁধন বাঁচার জন্য পাশের রফিকুল ইসলামের দালানের একটি রুমে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেয়। হামলাকারীরা রুমের দরজা ভেঙে বাঁধনকে টেনেহিঁচড়ে বের করে দালানের প্রধান ফটকের সামনে এলোপাতাড়িভাবে কুপিয়ে মারাত্মকভাবে জখম করে তাকে ফেলে রেখে যায়। 

পুলিশ সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে হামলায় আহত বাঁধন ও তার মা এবং ভাই সুমনকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স গৌরীপুরে নিয়ে গেলে প্রাথমিক চিকিৎসার পর আশংকাজনক অবস্থায় তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর সেখানে বাঁধনের মৃত্যু হয়৷ 

নিহত বাঁধনের ভাবি আয়েশা আক্তার বলেন, দক্ষিন পাড়ার হাসেম, রুবেল ও মানিকসহ ২০/২৫ জনের সন্ত্রাস বাহিনী রামদা, হকিস্টিক লোহার পাইপ নিয়ে আমাদের বাড়ীতে হামলা করে। তাদের ভয়ে আমার দেবর পাশের রফিক কাকার দালানে আশ্রয় নেয়। সেখানে গিয়েও তাদের হাত থেকে বাঁচতে পারেনি। এসময় সন্ত্রাসীরা আমার ঘরে থাকা নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে যায়।

দালানের মালিক রফিকুল ইসলাম বলেন, বাঁধন আমার বিল্ডিংয়ে আশ্রয় নিলে হামলাকারীরা রুমের দরজা জানালা ভেঙ্গে  আতংক সৃষ্টি করে এবং তাকে বের করে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে বিল্ডিংয়ের সামনে ফেলে রাখে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার লোকজন জানান, বাঁধনের অত্যাচারে এলাকার সাধারণ মানুষ অতিষ্ঠ ছিল। কোনো অনুষ্ঠান করলেই তাকে চাঁদা দিতে হতো। তার অপকর্মের প্রতিবাদ করলেই  উল্টো মামলা দিয়ে হয়রানি করা হতো। তার হয়রানির শিকার বাসরাসহ আশপাশের  গ্রামের লোকজন বাঁধনের অত্যাচার থেকে বাঁচতে এবং তার বিচার দাবী করে ২০২১ সালের ১৭ আগষ্ট ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পুটিয়া এলাকায় মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেন যা বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক ও স্থানীয় পত্রিকায় প্রকাশিত হয়৷

গৌরীপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ মোঃ আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, খবর পেয়েই আমরা ঘটনাস্থল থেকে বাঁধনসহ তার পরিবারের আহতদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য দ্রুত গৌরীপুর হাসপাতালে পাঠানো হয়। আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকায় পাঠানো হলে সেখানে বাঁধন মারা যায়। বাঁধন পুলিশের কনস্টেবল পদে নোয়াখালী জেলা পুলিশে কর্মরত অবস্থায় বিভিন্ন অভিযোগে কারনেই প্রায় দুই বছর আগে বরখাস্ত করা হয়েছে বাঁধনকে।  তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজিসহ ৭টি মামলা রয়েছে। এ হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতদের গ্রেপ্তারে পুলিশের একাধিক টিম মাঠে কাজ করছে।পাশাপাশি এলাকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

 


 

এমএস

×