
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) হলকক্ষে ডেকে কৃষ্ণ রায় নামের সেই সনাতন ধর্মালম্বী শিক্ষার্থীকে ছাত্রলীগের নির্যাতন ও শিবির ট্যাগ দিয়ে হত্যার হুমকির ঘটনার সত্যতা পেয়েছে তদন্ত কমিটি।
মঙ্গলবার দুপুরে গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক জাহাঙ্গীর হোসেন। প্রাধ্যক্ষ বলেন, হলে ছাত্র নির্যাতনের ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তারা ঘটনার তদন্ত সাপেক্ষে একটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন। এতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের সত্যতা মিলেছে। আমরা হল প্রশাসন বিষয়টি নিয়ে একটি সভা করব। সভা শেষে তদন্ত প্রতিবেদন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিকট পাঠিয়ে দিব। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি যে ধরনের শাস্তির সুপারিশ করবেন, তার ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
রাবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু বলেন, এই ঘটনা আমরাও সাংগঠনিকভাবে যাচাই বাছাই করেছি। তবে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মারধরের কোন অভিযোগ পাইনি।
গত ১৪ ফেব্রুয়ারি সোহরাওয়ার্দী হল ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী বিরুদ্ধে শিবির ট্যাগ দিয়ে হত্যার হুমকি এবং শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ তুলেন গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী কৃষ্ণ রায়। প্রক্টর দফতরে দেয়া ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর অভিযোগপত্রে হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাঈম ইসলাম ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. সোলাইমানসহ কয়েকজনের নাম উল্লেখ করা হয়।
এ ঘটনার প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে ওঠে পুরো ক্যাম্পাস। ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের নৈরাজ্যের প্রতিবাদে অনশনে বসেন অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক ফরিদ উদ্দিন খান। মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেন গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। এছাড়া মশাল মিছিল করেন ক্যাম্পাসে ক্রিয়াশীল বাম ছাত্রসংগঠনগুলো। তারা দ্রুতই অপরাধীদের শাস্তি ও ছাত্রলীগের নৈরাজ্য বন্ধের দাবি জানায়।
এ প্রেক্ষিতে ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ে হলের তিন আবাসিক শিক্ষকদের নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করে হল প্রশাসন। এতে ড. অনুপম হীরা মণ্ডলকে আহ্বায়ক করে ড. তানজিল ভূঞা ও ড. রায়হান গফুরকে সদস্য করা হয়। এছাড়া এঘটনায় অভিযুক্তদের কারণ দর্শানোর নোটিশও দেয় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ।
টিএস