বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু ছালেক রিকাবদার
নরসিংদীর শিবপুরে বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু ছালেক রিকাবদারকে হ্যান্ডকাপসহ কোমরে রশি দিয়ে বেঁধে আদালতে প্রেরণের কারণে শিবপুরসহ নরসিংদী জেলা জুড়ে চলছে সমালোচনার ঝড়। তিনি শিবপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও প্রবীন রাজনীবিদ।
জানা গেছে, শিবপুর মডেল থানা পুলিশ আবু ছালেক রিকাবদারকে রাজনৈতিক মামলা দেখিয়ে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারের পর গত ১১ জানুয়ারি বিকেলে তার কোমড়ে রশি বেঁধে ও হাতে হ্যান্ডকাপ পড়িয়ে নরসিংদী জেলা ও দায়রা জজ আদালতে সোপর্দ করে। এ ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ছবি ছড়িয়ে পার পরই শুরু হয় সমালোচনা। এ ছবি দেখে বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ, স্থানীয় রাজনীতিবিদগণ, সুশিল সমাজসহ সাধারণ জনগন ক্ষুব্ধ হয়ে বলছেন, একজন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে এভাবে কোমড়ে রশি দিয়ে বেঁধে আনার কি দরকার ছিল। পুলিশ শুধু একজন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে অসম্মান করেছে না, সকল বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদদের অসম্মানি করেছে। জাতি আজ লজ্জিত।
শিবপুর থানার যুদ্ধাকালীন কমান্ডার প্রফেসর আব্দুল মান্নান খান বলেন, আবু ছালেক রিকাবদার একজন বীরমুক্তিযোদ্ধা। তাকে রাজনৈতিক মামলায় গ্রেফতার করে হাতে হ্যান্ডকাফসহ কোমরে রঁশি বেধে ন্যাক্কার জনক কাজ করেছে। এতে মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের অপমান করা হয়েছে। আমি এই ন্যাক্কার জনক ঘটনার দুঃখ প্রকাশ করে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা হারুনুর রশীদ খান বলেন, রাজনৈতিক মামলায় কাউকে গ্রেফতার করতেই পারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। কিন্তু জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান একজন বীরমুক্তিযোদ্ধাকে রাজনৈতিক মামলার কারণে হাতে হ্যান্ডকাপ থাকার পরও কোমড়ে রশি বাধা খুবই দু:খ জনক। আবু ছালেক রিকাবদার একজন বীরমুক্তিযোদ্ধা। আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
নরসিংদী জেলা বিএনপি সদস্য সচিব মনজুর এলাহী বলেন, আবু ছালেক রিকাবদার শুধু শিবপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নয়, তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। বিনা কারণে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে এই বীর মুক্তিযোদ্ধার মর্যাদা ক্ষুন্ন করেছে বলে শিবপুরের জনগন মনে করেন।
সেক্টর কমান্ডার ফোরাম ৭১' নরসিংদীর সভাপতি ও সাবেক জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আব্দুল মোতালিব পাঠান বলেন, একজন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে সুষ্পষ্ট অভিযোগ ছাড়া গ্রেফতার করতে পারে না। পুলিশ তাঁর হাতে হ্যান্ডকাফ লাগিয়েছে এবং কোমড়ে রশি বেঁধে আদালতে নিয়ে এসেছে এটা খুবই দুঃখজনক। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত পুলিশ সদস্যদের দৃষ্টাতমূলক শান্তির দাবী করছি।
শিবপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফিরুজ তালুকদার বলেন, ওনি যে মুক্তিযোদ্ধা সেটা আমাদের কারো জানা নেই। তাছাড়া ওনিও আমাদের বলেননি যে ওনি মুক্তিযোদ্ধা। সে জন্যই সাধারণ আসামীদের মতই ওনাকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গ্রেফতারের পর গত ১১ জানুয়ারি বিকেলে বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু ছালেক রিকাবদারকে পুলিশ আদালতে সুপর্দ করলে বিজ্ঞ আদালত জামিন নামঞ্জু করে জেল হাজতে প্রেরণ করেন।
এমএস