ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১

চাঁদাবাজির অভিযোগে বাকেরগঞ্জ থানার দুই এএসআই ক্লোজড

সংবাদদাতা, বাকেরগঞ্জ, বরিশাল

প্রকাশিত: ১৭:০০, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

চাঁদাবাজির অভিযোগে বাকেরগঞ্জ থানার দুই এএসআই ক্লোজড

মামুন ও আহসাব

বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ থানার এএসআই আহসাব ও এএসআই মামুনকে ক্লোজড করা হয়েছে। বুধবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাকেরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এস এম মাকসুদুর রহমান। 

নিজেদের মোবাইলে ভিডিও ফুটেজ রেকর্ড করে একাধিক ব্যক্তিকে ব্ল্যাকমেইল ও চাঁদাবাজি করার অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। 

গত ১৩ ফেব্রুয়ারি দৈনিক জনকণ্ঠ পত্রিকা 'দুই এএসআই বিরুদ্ধে মাদক দিয়ে ফাঁসিয়ে টাকা নেওয়ার অভিযোগ' শিরোনামের সংবাদ প্রকাশ করা হয়। 

ওই সংবাদ প্রকাশ করার পর এএসআই আহসাব ও এএসআই মামুনকে ক্লোজ করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে।

এর আগে গত ১০ ফেব্রুয়ারি পৌর এলাকার ৯ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা নূর হোসেন খানের পুত্র লুৎফর রহমান জীবন খান তার নিজ এলাকায় যুব সমাজের উদ্যোগে আয়োজিত বনভোজন অনুষ্ঠানে পরিবারের সবাইকে নিয়ে দিঘিরপার নামক স্থানে যোগদান করেন। রাত্র ১০টার দিকে সড়কের পাশে বাইসাইকেল রাখতে গেলে ডিবি পুলিশের পরিচয় দিয়ে কথা শোনার কথা বলে হ্যান্ডক্যাফ লাগিয়ে বেধর মারধর করে ওই দুই এএসআই। 

অনুষ্ঠান চলাকালীন সাউন্ডবক্সে উচ্চস্বরে গান বাজতে থাকে বাঁচাও বাঁচাও কান্নাকাটি করলে তখন কেউ শুনতে পায় না। এ সময় তাকে টানাহেঁচড়া করে জোমাদ্দার বাড়ির পাশের বাগানে নিয়ে গিয়ে বেধর মারধর করে ভয়ভীতি দেখিয়ে ইয়াবা ও গাঁজা দিয়ে চালান দিবে বলে হুমকি দেয়। 

হ্যান্ডক্যাফ পরানো অবস্থায় ফোনের মাধ্যমে টাকা আনতে বাধ্য করান এএসআই মামুন। তখন ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেয়। এ সময় এএসআই মামুনের সঙ্গে এএসআই আহাসাব সহ দুইজন কনস্টেবল উপস্থিত থেকে চাঁদাবাজিতে অংশগ্রহণ করে। 

এছাড়াও লুৎফর রহমান জীবন খানকে প্রায় তিন মাস আগে চৌমাথা সিনেমাহল বারাইপাড়া ভাড়াটে বাসায় থাকতেন। তখন তার নিজ বাড়িতে ঘরের নির্মাণ কাজ চলছিল। বাড়িতে ঘুমানো অবস্থায় রাত ১২টার দিকে থানার এএসআই মামুন লুৎফরকে ফোন করে বলে আমি ৮ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জরুরি আপনাকে প্রয়োজন বলে ভাড়াটে বাসায় ডেকে নেয়। 

ভারাটে বাসায় এসে তালা খুলে রুমের মধ্যে প্রবেশ করলে লুৎফরকে হ্যান্ডক্যাফ পরিয়ে বেধর মারধর করেন। তখন একটা কার্টুনে থাকা ইয়াবা সেবনের টাকার পাইপ ও কিছু প্লাস্টিকের বোতলের কর্ক হাতে ধরিয়ে ভিডিও ধারণ করে ব্ল্যাকমেল করে ৩০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। ওইসব ভিডিও পুঁজি করে দ্বিতীয় দফায় একই ব্যক্তিকে ইয়াবা ও গাজা দিয়ে ফাঁসিয়ে বেদর মারধর চাঁদাবাজি করলে লুৎফর গণমাধ্যমের কাছে মুখ খুলেন। 

পৌরসভার ৯ নং ওয়ার্ডের মোসলেম আকনের পুত্র শাকিব আকন কিছুদিন আগে মাগরিবের পরে চৌমাথা গেলে শামীমের দোকানে আটকিয়ে গাঁজা বের করে মোবাইলে ছবি তুলেন এএসআই মামুন। তখন শাকিলকে জেলে পাঠানোর ভয় দেখিয়ে বাসার ফোন করে শাকিলের বড় ভাই রিয়াজকে ডেকে এনে ৭ হাজার টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেয়।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগে সংবাদ প্রকাশ করা হলে পুলিশ সুপার ওয়াহিদুল ইসলামের নজরে আসলে এএস আই আহসাব ও এএসআই মামুনকে ক্লোজড করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করেছেন।
 

 

এসআর

সম্পর্কিত বিষয়:

×