ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

রোগীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ৫ নার্সকে মারধরের অভিযোগ

নিজস্ব সংবাদদাতা, জামালপুর

প্রকাশিত: ২১:৪১, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

রোগীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ৫ নার্সকে মারধরের অভিযোগ

জামালপুর জেনারেল হাসপাতাল 

জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে জেসমিন আক্তার (৫০) নামে এক রোগীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে রোগীর কতিপয় সন্ত্রাসীদের হামলা। এ ঘটনায় নার্সরা ৩ঘন্টা কর্মবিরতি করে প্রশাসনিক কর্মকর্তার কার্যালয়ে অবস্থান করেন। 

রবিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের মহিলা ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ৬মাসের গর্ভবতী নার্স শারমিন ইসলাম ও শিখা খানম, মারুফা, আশরাফুন নাহার, লাকি খাতুন নামে ৫নার্সকে মারধর করে কতিপয় সন্ত্রাসীরা হামলা করে। মৃত ওই রোগী পৌর শহরের চন্দ্রা এলাকার দেলোয়ার হোসেনের স্ত্রী। 

হাসপাতাল ও নার্স সুত্রে জানা যায়, গতকাল শনিবার বিকালে পৌর শহরের চন্দ্রা এলাকার জেসমিন আক্তার নামে এক রোগী উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস নিয়ে মহিলা ওয়ার্ডে ভর্তি হয়। হাসপাতাল কতৃপক্ষকে অবগত না করে রোগীর স্বজনরা রাতে রোগীকে বাড়ি নিয়ে যায়। পরে সকালে রোগীর অবস্থার অবনতি হলে আবার হাসপাতালে নিয়ে আসেন। হাসপাতালে আসার পরে মুক্তিযোদ্ধা কেবিনে তাকে ভর্তির ফাইল অনুযায়ী সেবা দেন। পরে কর্তব্যরত চিকিৎসক এসে রোগীর অবস্থা বিবেচনায় চিকিৎসা সেবা দেন। এ সময় দায়িত্বরত চিকিৎসক ইসিজিসহ বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা দেন। ইসিজি করে চিকিৎসক তার মৃত্যু নিশ্চিত হয়। 

পরে চিকিৎসক রোগীর স্বজনদের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন। রোগীর স্বজনরা দায়িত্বরত নার্সদের কক্ষ বাইরে থেকে আটকে দেন। পরে প্রতিপয় সন্ত্রাসী ও উত্তেজিত স্বজনরা নার্সদের কক্ষের ভিতরে গিয়ে এক গর্ভবতী নার্সসহ ৫নার্সকে মারধর করে। এ সময় নার্সরা হাসপাতালের কর্মবিরতি করে প্রশাসনিক কর্মকর্তার কার্যালয়ে অবস্থান নেন। তখন হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা চলছিল। সেই সভায় নার্সদের অভিযোগ শুনেন এবং আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি তা নিয়ে আলোচনা সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহনের আশ্বাস দিলে নার্সরা কাজে ফেরেন। 

নার্স আশরাফুন নাহার বলেন, গত কাল বিকালে ওই রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করেন। চিকিৎসা সেবা নিয়ে রাতে কোন কিছু না বলে তারা রোগীকে বাড়ি নিয়ে যায়। সকালে রোগীর অবস্থার অবনতি হলে আবার হাসপাতালে নিয়ে আসেন। হাসপাতালে আসার পরে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সেবা দেয়া হয়েছে। তবে রোগী মারা যায়। এ নিয়ে রোগীর কতিপয় সন্ত্রাসীসহ ৪-৫ স্বজনরা মিলে আমাদের মারধর করেছে। 

নার্স শামসামছুন নাহার জানান, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোগী মারা গেছে। এখানে কোন অবহেলা ছিল না। তারা আমাদের মারধর করেছে। এ মারধরের সঠিক বিচার না হলে  ১৪ তারিখের পরে কঠিন কর্মসূচির হুশিয়ারি দেন। হাসপাতালে ভর্তি রোগীর স্বজন শিপলু হোসেন বলেন, আমি হাসপাতালে রোগী নিয়ে আসছি। ভর্তি করা হয়েছে। কিন্তু কোন নার্স সেবা দিচ্ছে না। ডাক্তারের দেয়া ঔষুধ নার্স পাচ্ছে না। রোগী নিয়ে বিপাকে পড়েছি। 

জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে সহকারী পরিচালক ডা.মুহাম্মাদ মাহফুজুর রহমান বলেন, এ নিয়ে হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও মেয়র মহোদয় দায়িত্ব নিয়েছেন। ১৪ তারিখে বসে ব্যবস্থা গ্রহন করবেন। তাদের আশ্বাসে নার্সরা কাজে ফিরেছে। হাসপাতালে স্বাভাবিক কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। 

জামালপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কাজী শাহনেওয়াজ জানান, হাসপাতালে রোগীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে বিশৃঙ্খলা হয়েছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায়। হাসপাতালের মহিলা ওয়ার্ডে অনেক লোক সমাগম দেখি। বিশৃঙ্খলা ও ঝগড়াঝাটি হয়। দুই পক্ষের অভিযোগ শুনি এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। এ বিষয়ে কোন পক্ষ অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 
 

এমএস

সম্পর্কিত বিষয়:

×