চাঁদাবাজি
জেলার বাকেরগঞ্জ থানার এএস আই আহসাব ও এএস আই মামুন এর বিরুদ্ধে ইয়াবা ও গাঁজা দিয়ে নিজেদের মোবাইলে ভিডিও ফুটেজ রেকর্ড করে একাধিক ব্যাক্তিকে ফাঁসিয়ে ব্যাপক চাঁদাবাজি করার অভিযোগ উঠেছে।
রবিবার (১২ ফেরুয়ারি) সকালে ভুক্তভোগী বাকেরগঞ্জ পৌর এলাকার ৯ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা নূর হোসেন খানের পুত্র লুৎফর রহমান জীবন খান জানান, ১০ ফেব্রুয়ারি রাতে ৯ নং ওয়ার্ডের যুব সমাজের উদ্যোগে এলাকাবাসী সবাই মিলে বনভোজনের আয়োজন করে।
লুৎফর পরিবারের সবাইকে নিয়ে উক্ত বনভোজন অনুষ্ঠানে দিঘিরপার নামক স্থানে যোগদান করেন। রাত্র আনুমানিক ১০ টায় অনুষ্ঠান স্থানের সড়কের পাশে বাইসাইকেল রাখতে গেলে ডিবি পুলিশের পরিচয় দিয়ে কথা শোনার কথা বলে হ্যান্ডক্যাফ লাগিয়ে বেধড়ক মারধর করে।
অনুষ্ঠান চলাকালীন সময়ে সাউন্ডবক্সে উচ্চস্বরে গান বাজতে থাকে বাঁচাও বাঁচাও কান্নাকাটি করলে তখন কেউ শুনতে পায় না।
এসময় তাকে টানাহেঁচড়া করে জোমাদ্দার বাড়ীর পশ্চিম পার্শ্বের বাগানে নিয়ে গিয়ে বেধড়ক মারধর করে ভয়ভীতি দেখিয়ে ইয়াবা ও গাঁজা দিয়ে চালান দিবে বলে হুমকি দেয়। হ্যান্ডক্যাফ পরানো অবস্থায় ফোনের মাধ্যমে টাকা আনতে বাধ্য করান এএসআই মামুন। তখন ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেয়। এ সময় এএসআই মামুনের সাথে এএসআই আহাসাব সহ দুইজন কনস্টেবল ছিলেন।
এছাড়াও লুৎফর রহমান জীবন খান আরো জানান, প্রায় তিন মাস আগে চৌমাথা সিনেমাহল বারাইপাড়া ভাড়াটে বাসায় থাকতাম। তখন আমার নিজ বাড়িতে ঘরের নির্মাণ কাজ চলছিল। আমি বাড়িতে ঘুমানো অবস্থায় রাত অনুমান ১২ টায় থানার এএসআই মামুন আমাকে ফোন করে বলেন ভাড়াটে বাসায় আসুন জরুরী কথা আছে। আমি ভারাটে বাসায় এসে তালা খুলে রুমের মধ্যে প্রবেশ করলে আমাকে হ্যান্ডক্যাফ পরিয়ে বেধড়ক মারধর করেন। তখন একটা কার্টুনে থাকা ইয়াবা সেবনের টাকার পাইপ ও কিছু প্লাস্টিকের বোতলের কর্ক হাতে ধরিয়ে ভিডিও ধারণ করে ব্ল্যাকমেল করে ৩০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়।
অপরদিকে পৌরসভার ৯ নং ওয়ার্ডের মোসলেম আকনের স্ত্রী জানান, আমার পুত্র শাকিব আকন কিছুদিন আগে মাগরিবের পরে চৌমাথা গেলে শামীমের দোকানে আটকিয়ে গাঁজা বের করে মোবাইলে ছবি তুলে এএসআই মামুন। আমার ছেলেকে জেলে পাঠানোর ভয় দেখিয়ে বাসার ফোন নম্বর চায়। আমার বড় ছেলে রিয়াজকে ফোন করে চৌমাথা ডেকে নেয়। তখন আমার বড় ছেলে রিয়াজ ৭ হাজার টাকার বিনিময়ে আমার ছোট ছেলেকে ছাড়িয়ে রাখে। আমার স্বামী কৃষক ঘর উঠানোর জন্য কিছু টাকা জমা করছিল সেই টাকা থেকে পুলিশ ৭ হাজার টাকা নিয়ে গেছেন। অসহায় ভুক্তভোগীরা পুলিশের উর্দ্বতন কর্মকর্তাদের সহায়তা কামনা করেন।
এ বিষয়ে এএসআই মামুনকে ফোন দিলে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে। ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে আদায়কৃত টাকা ফেরত দিতে চায়। যাহাতে সংবাদ প্রকাশ করা না হয় অনুরোধ জানান।
লুৎফর কে মারধর করে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার বিষয় কনস্টেবল রাসেলের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমি আমার রুমে সোয়া ছিলাম। মামুন স্যার আমাকে ফোন করে আসতে বলেন। লুৎফর কে মারধরের সময় আমি থামিয়েছি। আমি টাকা পয়সা ধরিনি স্যারদের কাছে দিয়েছে।
এ বিষয়ে বাকেরগঞ্জ থানার ওসি এস এম মাকসুদুর রহমান জানান, যদি থানার কোনো পুলিশ সদস্য অপকর্ম ও চাঁদাবাজি করে থাকে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ বিষয়ে বরিশার পুলিশ সুপার ওয়াহিদুল ইসলাম জানান, বিষয়টা আমি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
এমএস