ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১

অংশ নিচ্ছে ১০৮ প্রকাশনা সংস্থা

চট্টগ্রামে অমর একুশে বইমেলা শুরু মঙ্গলবার

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস 

প্রকাশিত: ২০:২৭, ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

চট্টগ্রামে অমর একুশে বইমেলা শুরু মঙ্গলবার

বই মেলা। ফাইল ফটো

চট্টগ্রাম মহানগরীর এমএ আজিজ স্টেডিয়ামের জিমনেসিয়াম চত্বরে আগামীকাল বুধবার শুরু হচ্ছে অমর একুশে বইমেলা। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ব্যবস্থাপনায় প্রায় ১ লাখ ২ হাজার ৩শ বর্গফুটের সুবিশাল জায়গা জুড়ে এ বইমেলায় অংশ নিচ্ছে ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জেলার ১০৮টি প্রকাশনা সংস্থা। সৃজনশীল অভিজাত এই প্রকাশনা সংস্থাগুলোর অংশগ্রহণে মাসজুড়ে চলবে এই বইমেলা। তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বইমেলার উদ্বোধন করবেন। 

সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) একুশে বইমেলার বিষয়ে বিস্তারিত অবহিত করেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী। এ সময় তিনি বলেন, আমাদের ছেলে মেয়েদের অনেকেই এখন মোবাইল  ফোন ও মাদকে আসক্ত হয়ে পড়ছে। সময়, অর্থ ও স্বাস্থ্য সবই শেষ হচ্ছে এর পেছনে। তারা প্রকৃত শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। বই অন্যতম বন্ধু, যা তাদের মোবাইল ফোন ও মাদকের আসক্তি থেকে বের করে সৃজনশীল মেধাবী প্রজন্ম হিসেবে গড়ে তুলতে পারে। এক্ষেত্রে মা-বাবা, শিক্ষক ও সমাজের সকলকে সচেতন হতে হবে।

 তিনি বলেন, বইমেলা আয়োজনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের উদ্বুদ্ধ করার এক গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব আমাদের ওপর বর্তেছে। বিগত বছরগুলোর মত এবারও মেলায় বিপুল সমাগম ঘটবে বলে আশা প্রকাশ করে তিনি পাঠক সমাজ, বইপ্রেমী, সুধীজন, সুহৃদ, তরুণ ও যুব সমাজসহ সকল স্তরের মানুষকে সপরিবারে ও সবান্ধবে মেলায় আসার আহবান জানান। 

বইমেলা আয়োজনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এবারের মেলায় বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ১৪০টি স্টল। এরমধ্যে ডাবল স্টল ৩২টি এবং সিঙ্গেল স্টল ৭৬টি। মেলার সার্বিক নিরাপত্তার জন্য বেসরকারি পেশাদার একটি নিরাপত্ত াসংস্থা সার্বক্ষণিকভাবে নিয়োজিত থাকবে। বইমেলাকে আকর্ষণীয় ও জমজমাট করে তুলতে বেশকিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। চট্টগ্রামের নাগরিক সমাজ, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী, শিক্ষাবিদ, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং লেখকদের সঙ্গে ২০২৩ সালের শুরু থেকে মতবিনিময় সভা করে একটি সুন্দর মেলা উপহার দেওয়ার প্রয়াস নিয়েছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন। 

চসিক মেয়র জানান, এবারও বইমেলা প্রাঙ্গণে থাকছে দৃষ্টিনন্দন বঙ্গবন্ধু কর্ণার, লেখক আড্ডাসহ নারী কর্ণার এবং ওয়াইফাই জোন। নিরাপত্তার স্বার্থে পুরো মেলাঙ্গন সিসিটিভি নেটওয়ার্কের আওতায় থাকবে। মেলায় থাকছে নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন, মঞ্চ ও সেলফি কর্ণার। 

এছাড়াও মহান ভাষা আন্দোলন ও স্বাধীনতার আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীদের নিয়ে সচিত্র প্রদর্শনীর ব্যবস্থা থাকবে। কার্যালয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের  জন্য সংরক্ষিত আসন থাকবে। মেলামঞ্চে প্রতিদিনই নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন ও বিষয়ভিত্তিক আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। মেলায় প্রতিদিনের আলোচনা সভায় বাঙালির সাহিত্য, ইতিহাস ও ঐতিহ্যসহ নানা বিচিত্র বিষয়ে সমাহার ঘটানো হয়েছে। 

তিনি বলেন, বইমেলা ধর্ম ও রাজনীতিবিরোধী নয়। তবে কোনো অবস্থাতেই মুক্তিযুদ্ধ, বাঙালি সংস্কৃতি, স্বাধীনতা ও বঙ্গবন্ধুর চেতনাবিরোধী কায্যক্রম ও গ্রন্থ প্রশয় দেওয়া হবে না। প্রজন্ম জঙ্গীবাদে উদ্বুদ্ধ হয় এমন কোনো বই থাকবে না। 

চট্টগ্রামের বইমেলার অনুষ্ঠানমালার মধ্যে রয়েছে নজরুল দিবস, মাতৃভাষা দিবস-একুশ ফেব্রুয়ারি, লোক উৎসব, রবীন্দ্র উৎসব, তারুণ্য উৎসব, নারী উৎসব, বসন্ত উৎসব, মরমী উৎসব, আবৃত্তি উৎসব, নৃ-গোষ্ঠী উৎসব, লেখক সমাবেশ, যুব উৎসব, শিশু উৎসব, পেশাজীবী সমাবেশ, মুক্তিযুদ্ধ উৎসব, ছড়া উৎসব, কুইজ প্রতিযোগিতা, চাঁটগা উৎসব, স্বল্প দৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ও আলোকচিত্র প্রদর্শনী, বইমেলার সমাপনি ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান। দেশের খ্যাতিমান কবি সাহিত্যিক, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী, মুক্তিযোদ্ধা, শিক্ষাবিদ ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের বরেণ্য ব্যক্তিগণ প্রতিদিন বিষয়ভিত্তিক আলোচনায় অংশ নেবেন। 
 

 

এসআর

সম্পর্কিত বিষয়:

×