ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ৫ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

বিশ্ব এজতেমা

সাদ’কে ছাড়া এবারেও হচ্ছে আখেরি মোনাজাত

মোস্তাফিজুর রহমান টিটু/নুরুল ইসলাম, টঙ্গী 

প্রকাশিত: ২০:২৪, ২১ জানুয়ারি ২০২৩

সাদ’কে ছাড়া এবারেও হচ্ছে আখেরি মোনাজাত

বিশ্ব এজতেমা

রবিবার আখেরী মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে মুসলিম বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম জমায়েত ৫৬তম বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব। এবারের বিশ্ব ইজতেমার আখেরি মোনাজাত ভারতের মাওলানা সাদ কান্ধলভিকে ছাড়াই অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তাকে নিয়ে বিতর্ক উঠার পর মাওলানা সাদ এবারেও ইজতেমায় অংশ নিতে বাংলাদেশে আসেন নি। তবে তার তিন ছেলে ও জামাতা ইতোমধ্যে জামায়াত নিয়ে ইজতেমা ময়দানে এসেছেন। 

এপর্বের ইজতেমার শেষদিনে মাওলানা সাদ কান্ধলভীর বড় ছেলে মাওলানা ইউসুফ কান্ধলভী আখেরী মোনাজাত পরিচালনা করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। মোনাজাতের আগে তিনি হেদায়েতি বয়ানও করবেন। রবিবার সকাল ১১টার মধ্যে আখেরী মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে। মোনাজাতে বাংলাদেশসহ সারা দুনিয়ার মানুষের সুখ, শান্তি ও কল্যাণ কামনা করে দোয়া করা হবে বলে জানিয়েছেন ইজতেমা কর্তৃপক্ষ। 

দ্বিতীয় পর্বের দ্বিতীয় দিনে শনিবার টঙ্গীর ইজতেমা ময়দানে লাখ-লাখ মুসল্লি উদ্দেশ্যে চলে পবিত্র কোরআন-হাদিসের আলোকে গুরুত্বপূর্ণ বয়ান। আল্লাহর নৈকট্য লাভের আশায় লাখো মুসল্লি যোগ দিয়েছেন এবারের বিশ্ব ইজতেমায়। ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বে শিল্প নগরী টঙ্গী ইতোমধ্যেই ধর্মীয় নগরীতে পরিণত হয়েছে। মহান আল্লাহতাআলার নৈকট্য লাভের ব্যাকুলতায় দ্বীনের দাওয়াতে মেহনত করার জন্য ইসলামের মর্মবাণী সর্বত্র পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্য নিয়ে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা দলে দলে ছুটে আসছেন টঙ্গীর তুরাগ তীর ইজতেমা ময়দানে। টঙ্গীর তুরাগ তীরে বিশ্ব ইজতেমায় আগত লাখ লাখ মুসুল্লীর পদভারে মুখরিত হয়ে উঠেছে। 

শনিবারও টঙ্গী অভিমুখী বাস, ট্রাক, ট্রেন, লঞ্চসহ বিভিন্ন যানবাহনে ছিল মানুষের ভিড়। শনিবার সকালেই টঙ্গী শহর এবং ইজতেমাস্থল ও এর আশ-পাশ এলাকা জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছে। রবিবার আখেরি মোনাজাতের আগ পর্যন্ত মানুষের এ ঢল অব্যাহত থাকবে। ইতোমধ্যে ইজতেমা ময়দান কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে গেছে। মূল প্যান্ডেলে স্থান না পেয়ে অনেক মুসুল্লী নিজ উদ্যোগেই প্যান্ডেলের বাইরে পলিথিন সিট ও কাপড়ের সামিয়ানা টানিয়ে তাতেই অবস্থান নিয়েছেন। 

সৃষ্টিকর্তার বন্দনা, আরজ-গুজার, শোকরানা আর ইবাদত বন্দিগীতে মশগুল মানুষের কলরব। সৃষ্টিকর্তার দিদার লাভের জন্যে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা পায়ে হেঁটে, র‌্যাব ও পুলিশ পাহারায় বাস ও ট্রেনে টঙ্গীর তুরাগ তীরে বিশ্ব এজতেমা ময়দানে সমবেত হয়েছেন। এবারের উজতেমার শেষ দফায় মাওলানা সা’দ অনুসারী দেশের ৬৪টি জেলার মুসল্লিরা ৮৫ খিত্তায় অবস্থান নিয়েছেন।

এবারের দুই পর্বের বিশ্ব ইজতেমার প্রথমপর্ব শুরু হয় গত ১৩ জানুয়ারি। ওই পর্বে মাওলানা যোবায়েরর অনুসারী দেশি-বিদেশি মুসল্লিরা অংশ নেন। ১৫ জানুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হয় প্রথমপর্ব। প্রথম পর্ব সম্পন্ন হওয়ার পর চার দিন বিরতি দিয়ে ২০ জানুয়ারি থেকে শুরু হয় দ্বিতীয় পর্ব। রবিবার (২২ জানুয়ারি) আখেরি মোনাজাতের মধ্যে দিয়ে শেষ হবে এবারের ৫৬তম বিশ্ব ইজতেমা।
 
আখেরি মোনাজাত উপলক্ষে মুসল্লিদের সুবিধার্থে শনিবার দিবাগত মধ্যরাত থেকে ওই এলাকায় যানবাহন চলাচলে বিধিনিষেধ আরোপ করেছে পুলিশ। রবিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত এ বিধিনিষেধ বলবৎ থাকবে। এবারের বিশ্ব ইজতেমা নজীরবিহীন নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। প্রায় ১২ হাজার র‌্যাব ও পোশাকধারী পুলিশের পাশপাশি রয়েছে সাদা পোশাকে প্রায় ৩ হাজার গোয়েন্দা সদস্য। আকাশ ও নৌপথে রয়েছে র‌্যাবের সতর্ক নজরদারী। 

যারা বয়ান করলেন ॥ 
এবারের ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বে মাওলানা সা’দ কান্ধলভী অনুসারী দেশি-বিদেশি মুসল্লিরা অংশ নিচ্ছেন। দুদিন ধরে সার্বক্ষণিক ইবাদত-বন্দেগিতে নিয়োজিত রয়েছেন মুসল্লিরা। প্রতিদিন ফজর থেকে এশা পর্যন্ত ঈমান, আমল, আখলাক ও দ্বীনের পথে মেহনতের ওপর বয়ান অনুষ্ঠিত হয়। শনিবার বাদ ফজর 

ভারতের হযরত মাওলানা ইয়াকুব জিলানীর বয়ানের মধ্য দিয়ে শুরু হয় দ্বিতীয় দিনের কার্যক্রম। তিনি তাবলীগের ৬ উসুলের (মৌলিক বিষয়ে) ওপর বয়ান করেন। এ বয়ান বাংলায় তরজমা করেন বাংলাদেশের মাওলানা মনির বিন ইউসুফ। এরপর বাদ জোহর বয়ান করেন বয়ান করেন তুর্কির মাওলানা ওমর। বাদ আসর মাওলানা সাদ কান্ধলভীর তৃতীয় ছেলে মাওলানা ইলিয়াস বিন সাদ কান্ধলভী বয়ান করেন। তার বয়ান বাংলায় তরজমা করেন মাওলানা ওসামা ইসলাম। মাগরিবের নামাজের পর বয়ান করেন ভারতের মাওলানা আব্দুস সাত্তার, এসময় তার বয়ান বাংলায় তরজমা করেন মাওলানা জিয়া বিন কাসিম।

যা বয়ান করলেন ॥ 
গত দু’দিন ধরে ইজতেমা মাঠে সার্বক্ষনিক ইবাদত-বন্দেগীতে নিয়োজিত রয়েছেন প্রতিদিন ফজর থেকে এশা পর্যন্ত এজতেমা মাঠে ইমান, আমল, আখলাক ও দ্বীনের পথে মেহনতের ওপর বয়ান অনুষ্ঠিত হচ্ছে। শনিবার বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় দিনে দেশ বিদেশী আগত মুরুব্বীগণ তাবলীগের ছয় ওছুলের মধ্যে দাওয়াতে দ্বীনের মেহনতের উপর গুরুত্বারোপ করে বয়ান করেন। 

বয়ানে তাবলীগ মুরুব্বীগণ বলেন, আল্লাহ তায়ালা আপনাকে আমাকে দুনিয়াতে পাঠিয়েছেন এবং আল্লাহ তায়ালা এটা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, দুনিয়াতে যে একবার আসবে তাকে মৃত্যুবরণ করতে হবে। আল্লাহ পাকের এ সিদ্ধান্তের কোন পরিবর্তন হবে না। দুনিয়া হচ্ছে ধোকার ঘর, এ দুনিয়া হচ্ছে ধোকার জীবন। মিছে এই দুনিয়ার আরাম আয়েসের কথা ভুলে গিয়ে আখেরাতের কথা চিন্তা কর। দুনিয়ার জিন্দেগী ক্ষণস্থায়ী, যতক্ষণ পর্যন্ত মানুষের দিল থেকে আসবাবের (সম্পদের) এক্বিন বের না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত তার দিলে কুদরতি এক্বিন পয়দা হবে না। সকলকে দ্বীনের জন্য মেহনত করতে হবে। আল্লাহর কাছে আমল ছাড়া এ দুনিয়ার জিন্দেগীর কোন মূল্য নেই। বয়ানে আরো বলা হয়, দীনের দাওয়াতের মাধ্যমে ঈমান মজবুত হয়। ঈমান মজবুত হলে আল্লাহর সাথে গভীর সম্পর্ক গড়ে ওঠে। আর এ সম্পর্ক গড়ে ওঠলে দুনিয়া ও আখেরাতে কামিয়াবি হাসিল হয়।  

তাশকিলের কামরায় চিল্লাভুক্ত মুসুল্লী ॥ 
ইজতেমার প্যান্ডেলের উত্তর-পশ্চিমে তাশকিলের কামরা স্থাপন করা হয়েছে। বিভিন্ন খিত্তা থেকে বিভিন্ন মেয়াদে চিল্লায় অংশ গ্রহনেচ্ছু মুসুল্লীদের এ কামরায় আনা হচ্ছে এবং তালিকাভুক্ত করা হচ্ছে। পরে কাকরাইলের মসজিদের তাবলিগি মুরুব্বীদের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত অনুযায়ি এলাকা ভাগ করে তাদের দেশের বিভিন্ন এলাকায় তাবলিগি কাজে পাঠনো হবে। 

আখেরি মোনাজাত রবিবার সকালে ॥ 
বিশ্ব ইজতেমার এ পর্বের মিডিয়া সমন্বয়কারী মোহাম্মদ সায়েম জানান, এবারের বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বের আখেরি মোনাজাতের সময়ও এগিয়ে আনা হয়েছে। রবিবার সকাল ১১টার মধ্যে আখেরি মোনাজাত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। মুসুল্লীদের ভোগান্তি কমাতে পরামর্শ করে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তাবলীগ জামাতের শীর্ষস্থানীয় মুরুব্বীদের পরামর্শের ভিত্তিতে বিশ্ব তাবলিগ জামাতের শীর্ষ মুরব্বি মাওলানা সাদ কান্ধলভীর বড় ছেলে মাওলানা ইউসুফ কান্ধলভী আখেরী মোনাজাত পরিচালনা করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। মোনাজাতের আগে তিনি হেদায়েতি বয়ানও করবেন। এজন্য ব্যাপক প্রস্তুতিও নেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান। 

আরো চার মুসল্লির মৃত্যু ॥ 
টঙ্গীতে এবারের বিশ্ব ইজতেমায় আসা আরো চার মুসল্লি মারা গেছেন। শুক্রবার হতে শনিবার সকাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে তারা মারা যান। এ নিয়ে এবারের বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বে মোট ৫ মুসল্লির মৃত্যু হয়েছে। তারা হলেন- ঢাকার কদমতলী থানার পূর্ব জুরাইন এলাকার বাসিন্দা আব্দুল জব্বারের ছেলে আব্দুল হান্নান (৪৫), গাইবান্ধার শুক্কুর মন্ডলের ছেলে আব্দুল হামিদ মন্ডল (৫৫), রাজধানীর গুলিস্তানের বঙ্গবাজার এলাকার ব্যবসায়ী বোরহান উদ্দিন (৪৮) ও ঢাকার সাভারের বাসিন্দা আব্দুল আলীমের ছেলে মফিজুল ইসলাম (৫৪)।  

ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বের মিডিয়া সমন্বয়ক মোহাম্মদ সায়েম শুক্রবার (২০ জানুয়ারি) এশার নামাজের সময় খিত্তায় বসে জিকির করা অবস্থায় আব্দুল হান্নান অজ্ঞান হয়ে সেখানেই মারা যান। ইজতেমায় অংশ নিতে আসা ব্যবসায়ী বোরহান একইদিন রাত ১১ টায় খিত্তায় অবস্থান কালে হৃদরোগে আক্রান্ত হলে মারা যান এবং সন্ধ্যায় গাইবান্ধার শুক্কুর মন্ডল মারা যান। এছাড়া একইদিন ভোরে সাভারের শিমুলতলি এলাকার মফিজুল ইসলাম মারা যান। 

ভিআইপিরা মোনাজাতে অংশ নেবেন ॥ 
বিশ্ব এজতেমার দ্বিতীয় পর্বের আখেরি মোনাজাতে মন্ত্রী পরিষদের একাধিক সদস্য, সংসদ সদস্য বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন সরকারী বেসরকারী সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও বিভাগের কর্মকর্তাগন অংশ নেবেন।  

দ্বিতীয় পর্বেও যৌতুকবিহীন বিয়ে অনুষ্ঠিত ॥ 
বিশ্ব ইজতেমার মূল আকর্ষণ যৌতুক বিহীন বিয়ে এবারের ইজতেমার প্রথম পর্বের মতো দ্বিতীয় পর্বেও অনুষ্ঠিত হয়েছে। কণের সম্মতিতে ও তার অনুপস্থিতিতে দ্বিতীয় পর্বের দ্বিতীয় দিনে শনিবার বাদ আসর ইজতেমা ময়দানে বিয়ের এ কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়। তাবলীগের শীর্ষ মুরুব্বী মাওলানা জোবায়ের ও মাওলানা সা’দ কান্ধলভী অনুসারীদের মতবিরোধের কারণে ২০১৬ সাল হতে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ইজতেমা ময়দানে যৌতুকবিহীন বিয়ে অনুষ্ঠিত হয়নি। তবে বর ও কনে পক্ষের সম্মতিতে তাদের সংশ্লিষ্ট এলাকার মসজিদে যৌতুক বিহীন বিয়ে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছিল। 

তাবলিগের রেওয়াজ অনুযায়ী ইজতেমার দ্বিতীয় দিন বাদ আসর ইজতেমা ময়দানে বসে যৌতুকবিহীন বিয়ের আসর। কণের সম্মতিতে ও তার অনুপস্থিতিতে বর এবং কণে পক্ষের লোকজনের উপস্থিতিতে ওই বিয়ে অনুষ্ঠিত হয়। বিয়েতে মোহরানা ধার্য করা হয় ‘মোহর ফাতেমী’র নিয়মানুযায়ী। এ নিয়ম অনুযায়ী মোহরানার পরিমাণ ধরা হয় দেড়শ’ তোলা রূপা বা উহার সমমূল্য অর্থ। বিয়ের পর নব-দম্পতিদের সুখ-সমৃদ্ধিময় জীবন কামনা করে আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের দরবারে মোনাজাতের মাধ্যমে দোয়া করা হয়। এসময় মঞ্চের আশপাশের মুসল্লিদের মাঝে খোরমা খেজুর ও মিষ্টি বিতরণ করা হয়। 

শেষদিনে যারা বয়ান করবেন ॥ 
রবিবার (২২ জানুয়ারি) বিশ্ব ইজতেমার শেষদিনে ফজরের নামাজের পর বয়ান করবেন মাওলানা মুরসালিন। এরপর হেদায়তী বয়ান ও আখেরী মোনাজাত পরিচালনা করবেন ভারতের মাওলানা সাদ কান্ধলভীর বড় ছেলে মাওলানা ইউসুফ কান্ধলভী। এসময় তার বয়ান বাংলায় তরজমা করবেন মাওলানা জিয়া বিন কাসিম। 

বিদেশী মুসুল্লী ॥ 
শনিবার দুপুর পর্যন্ত  বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বে বিশ্বের ৬০টি দেশের প্রায় ৬ হাজার জন বিদেশী মুসল্লী অংশ নেন। তা’ছাড়া এপর্বে দেশের ৬৪টি জেলার কয়েক লাখ মূসল্লীরা ইজতেমায় অংশ নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন গাজীপুরে জেলা প্রশাসক মো.আনিসুর রহমান।

মোনাজাতের দিন চলবে শ্যাটল বাস ও বিশেষ ট্রেন ॥ 
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মোল্ল্যাহ নজরুল ইসলাম জানান, প্রথমপর্বের মতো দ্বিতীয় পর্বেও রবিবার আখেরী মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এবারের বিশ্ব ইজতেমা। এখন পর্যন্ত আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভাল আছে। কোথাও কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। 

তিনি জানান, ইজতেমায় মুসল্লিদের আসা-যাওয়া নির্বিঘ্ন করতে শনিবার মধ্যরাত থেকে রবিবার আখেরি মোনাজাতের দিন বিকেল পর্যন্ত ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের গাজীপুরের ভোগড়া বাইপাস মোড় থেকে আব্দুল্লাহপুর এবং টঙ্গী-কালীগঞ্জ সড়কের মীরের বাজার হতে টঙ্গী ষ্টেশন রোড হয়ে কামারপাড়া ও সাভারের বাইপাইল থেকে আব্দুল্লাহপুর পর্যন্ত অ্যাম্বুলেন্স ও পুলিশের গাড়ি ছাড়া সকল প্রকার সাধারন যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। এ ছাড়া ঢাকা বাইপাস সড়কের ভোগড়ায়, শাখা রোড বোর্ডবাজার, মীরেরবাজার থেকে আসা প্রত্যেকটি সড়ক ক্রসিংগুলোতে বন্ধ করে দেয়া হবে। তবে মুসল্লিদের যাতায়তের সুবিধার্থে আখেরি মোনাজাতের দিন রবিবার ভোর হতে গাজীপুরের ভোগড়া বাইপাস মোড় এলাকা থেকে ইজতেমাস্থল পর্যন্ত মুসুল্লীদের সুবিধার্থে পুলিশের পক্ষ থেকে শ্যাটল বাস (ইজতেমার স্টিকার লাগানো) চলাচল করবে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত এ ট্রাফিক ব্যবস্থা অব্যাহত থাকবে। এছাড়াও আখেরি মোনাজাত উপলক্ষ্যে বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা রয়েছে। ইজতেমা উপলক্ষ্যে ঢাকা-ময়মনসিংহ ও ঢাকা-চট্রগ্রাম রুটে ট্রেনগুলো টঙ্গী রেলস্টেশনে যাত্রাবিরতি করবে।

নিরাপত্তা ॥ 
বিশ্ব ইজতেমা উপলক্ষ্যে ইজতেমা ময়দানসহ আশপাশ এলাকায় ৫ স্তরের কড়া নিরাপত্তার মধ্যে রয়েছে। ইজতেমা মাঠে প্রবেশের রাস্তায় নিরাপত্তা তল্লাশী পেরিয়ে মুসল্লিদের মাঠে প্রবেশ করতে হচ্ছে। প্যান্ডেলের ভিতর ও বাইরে মুসল্লি বেশে রয়েছে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার প্রায় ৩ হাজার সদস্য। ইজতেমা ময়দানের সব প্রবেশপথে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা ও বিভিন্ন পয়েন্টে পর্যবেক্ষন টাওয়ার স্থাপন করা হয়েছে। ভ্রাম্যমান আদালত সার্বিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় কাজ করছে। 
 

 

এমএস

সম্পর্কিত বিষয়:

×