মসজিদ
জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলা মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্থানীয় এমপি ড. মুরাদ হাসানের নামফলক সরানোকে কেন্দ্র করে বিক্ষুব্ধ এমপির লোকজন হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। হামলায় মডেল মসজিদ প্রকল্পের প্রকৌশলী মাসুদুর রহমান জনিসহ (৩২) চারজন আহত হয়েছে।
সোমবার (১৬ জানুয়ারি ২৩) দুপুর ১২টার দিকে সরিষাবাড়ী রেলওয়ে স্টেশন সংলগ্ন মডেল মসজিদ প্রাঙ্গণে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও লাইভে সারাদেশে একযোগে ৫০টি মডেল মসজিদ উদ্বোধন করছিলেন। এমপির লোকদের হামলায় গুরুতর আহত অন্য তিনজন হলেন মডেল মসজিদ নির্মাণ প্রকল্পের উপ-ঠিকাদার (সুপারভাইজার) মো. রকিব (৩০), ঠিকাদারের কর্মচারী ওসমান গণি বিপুল (২৮) ও সৌরভ (২৫)। আহত চারজনকেই সরিষাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ মোতাবেক সরিষাবাড়ী রেলওয়ে স্টেশন সংলগ্ন স্থানে স্থাপিত মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র উদ্বোধনের জন্য মডেল মসজিদ প্রাঙ্গণে নির্মাণ কাজ বাস্তবায়নকারী গণপূর্ত বিভাগ ও স্থানীয় প্রশাসন সোমবার সবধরনের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করে।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারাদেশে মডেল মসজিদ উদ্বোধনী ভিডিও লাইভে ছিলেন। অনুষ্ঠানে সরিষাবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. ছানোয়ার হোসেন বাদশা ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ হারুন অর রশিদ, উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা গিয়াস উদ্দিন পাঠান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) উপমা ফারিসা, সরিষাবাড়ী পৌরসভার মেয়র মো. মনির উদ্দিনসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে ডা. মুরাদ হাসান এমপি উপস্থিত ছিলেন না। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান চলাকালে বেলা সাড়ে ১২টার দিকে আকস্মিক স্থানীয় এমপি ডা. মুরাদ হাসানের প্রতিনিধি ও সরিষাবাড়ী পৌরসভার কাউন্সিলর সাখাওয়াত আলম মুকুল ও তার লোকজন অতর্কিত হামলা চালায়। হামলাকারীরা মডেল মসজিদ প্রকল্পের প্রকৌশলী মাসুদুর রহমান জনিসহ (৩২) চারজন বেধড়ক পিটিয়ে রাস্তা পর্যন্ত নিয়ে যায়। পরে হামলাকারীরা তাদের তিনটি মোবাইল ফোন সেট এবং মসজিদের সিসিটিভি ক্যামেরার হার্ডডিস্ক খুলে নিয়ে যায়।
প্রকল্পের ঠিকাদার ও পৌর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মনজুরুল মোর্শেদ তরফদার সোহেল অভিযোগ করেন, মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের সময় ডা. মুরাদ হাসান এমপির নামফলক ছিলো। উদ্বোধনের আগে সেটি সরিয়ে রাখা হয়। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ মোতাবেক প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনী নামফলক স্থাপন করা হয়। এমপির নামফলক না পাওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে তার সমর্থকরা এ হামলার ঘটনা ঘটায়।
অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে ডা. মুরাদ হাসান এমপির মুঠোফোনে কল করলেও তিনি কল রিসিভ করেননি। তবে অভিযোগ প্রসঙ্গে এমপির প্রতিনিধি ও হামলার নেতৃত্বদানকারী সাখাওয়াত আলম মুকুল বলেন, মডেল মসজিদ নির্মাণের শুরুতে লাগানো এমপি ভিত্তিপ্রস্তরফলকটি কেন সরানো হয়েছে, এ নিয়ে প্রকল্প ঠিকাদার মনজুরুল মোর্শেদ তরফদার সোহেলের সাথে আমার কথাকাটাকাটি হয়েছে।
সেখানে কোন হামলা বা কাউকে মারধরের ঘটনা ঘটেনি। সরিষাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ মহব্বত কবীর জনকণ্ঠকে বলেন, এমপির নামফলক সরানো নিয়ে মসজিদ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কিছুটা বিশৃঙ্খলা হয়েছিলো। এ সময় পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে কারো হাসপাতালে ভর্তি সংক্রান্ত বিষয় জানি না। এ ব্যাপারে অভিযোগ পেলে বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।
এমএস