ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

আট মাস বন্ধ ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রম,ভোগান্তিতে সাধারণ মানুষ 

নিজস্ব সংবাদদাতা, পটুয়াখালী 

প্রকাশিত: ২০:৫৪, ২৮ ডিসেম্বর ২০২২; আপডেট: ২১:০২, ২৮ ডিসেম্বর ২০২২

আট মাস বন্ধ ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রম,ভোগান্তিতে সাধারণ মানুষ 

চেয়ারম্যান তানজিন নাহার সোনিয়া

পটুয়াখালী সদর উপজেলার বদরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের দ্বন্দ্বে গত ৭ মাস ধরে স্থবির হয়ে পড়েছে পরিষদের স্বাভাবিক কার্যক্রম। চলতি বছরের মে মাসে ইউপি চেয়ারম্যান তানজিন নাহার সোনিয়া’র একাধিক সুনির্দ্দিষ্ট অনিয়মের অভিযোগ উল্লেখ করে ১১ জন ইউপি সদস্য তার বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত ভাবে অনাস্থা দেয়। এর পর থেকেই এলাকার সাধারণ মানুষ সেবা ও উন্নয়ন কার্যক্রম থেকে বঞ্চিত।

এদিকে ইউপি চেয়ারম্যান তানজিন নাহার সোনিয়ার বিরুদ্ধে অনাস্থা দেওয়ার অভিযোগে একটি তদন্ত করেছে জেলা প্রশাসন এবং তদন্ত করা হলেও এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। 

বদরপুর ইউনিয়ন পরিষদ

খোঁজ নিয়েজানা গেছে, সদর উপজেলার বদরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তানজিন নাহার সোনিয়া দীর্ঘদিন বিধি বহির্ভূত ভাবে অনিয়ম ও দুর্নীতি করে আসছিলেন। এ নিয়ে পরিষদের ইউপি সদস্যরা বিভিন্ন সময়ে প্রতিবাদ করলে তিনি সদস্যদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন। 

এর প্রেক্ষিতে গত ৯ মে পরিষদের ১১ সদস্য সভা করে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা দেয় এবং ওই দিনই জেলা প্রশাসক বরাবর ১১ জন ইউপি সদস্য স্বাক্ষরিত লিখিত অনাস্থা অভিযোগ দায়ের করেন। এ অনাস্থার ঘটনায় জেলা প্রশাসন তদন্তের দায়িত্ব দেয় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গত অক্টোবরে তদন্তের দায়িত্ব দেন সদর উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা বদরুল আমিন খানকে তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ দেন। তদন্ত কর্মকর্তা তদন্ত  প্রতিবেদন জমা দিলেও এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেয়নি জেলা প্রশাসন। 

এ দিকে এ অচালাবস্থার মধ্যে বদরপুর ইউনিয়ন পরিষদের সচিবের পদটি শুন্য রয়েছে। ফলে ইউনিয়নের জন্ম ও মৃত্যু সনদ, ওয়ারিশ সার্টিফিকেট এবং বিভিন্ন প্রত্যয়নসহ সকল সেবা থেকে গত ৮ মাস পর্যন্ত বঞ্চিত ওই ইউনিয়নের বাসিন্দারা। 
এ বিষয়ে ইউনিয়নের হকতুল্লাহ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক জাকির হোসেন বলেন,গত ৮ মাস ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান-সচিব না থাকার কারনে শিক্ষার্থীরা জন্মনিবন্ধন করতে পারছে না। এ বিষয়ে সংশ্লিস্ট সবাইকে অনুরোধ করা হলেও কোনো লাভ হয়নি। 

এ ব্যাপারে সংরক্ষিত মহিলা ইউপি সদস্য নাসিমা রহমান বলেন,‘চেয়ারম্যান জন্ম নিবন্ধন করতে ৫০০ টাকা নেয়, মৃত্যু সার্টিফিকেট নিতে হলে ২ হাজার টাকা দিতে হয়। এ গুলো জনগন মানছেন না। আমরা প্রতিবাদ করলেও তিনি হাবিব এমপির মেয়ে বলে ক্ষমতা দেখান। তাই আমরা অনাস্থা দিয়েছি।’

অনাস্থা কমিটির সভাপতি ও ইউপি সদস্য বশির উদ্দিন বলেন,‘এমন কোনো দুর্নীতি নাই যা চেয়ারম্যান করে না। জনগনসহ আমরা অতিষ্ট। আমরা অনিয়ম দুর্নীতি চাইনা, আমরা চাই সুন্দর পরিষদ।’ 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত চেয়ারম্যান তানজিন নাহার সোনিয়া বলেন,‘ জেলা প্রশাসন আমার বিরুদ্ধে একাধিক তদন্ত করেও কিছু পায়নি। কিন্তু আমি অসুস্থ ছিলাম এই সুযোগে মেম্বাররা ও একটি কুচক্রী মহল আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে যে কারনে গত ৮ মাস পরিষদ সব কার্যক্রম বন্ধ করে রেখেছে।’

এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মো : শরীফুরল ইসলামের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি জানান, ‘বদরপুরবাসীর ভোগান্তি লাঘবের জন্য বিষয়টি মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। ’
 
 

এমএস

সম্পর্কিত বিষয়:

×