ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ৪ পৌষ ১৪৩১

কাঁটা তারের বেড়া দিয়ে বন্দী রাখা হয় চার পরিবারকে 

নিজস্ব সংবাদদাতা, কালকিনি

প্রকাশিত: ১৬:১৬, ২২ ডিসেম্বর ২০২২

কাঁটা তারের বেড়া দিয়ে বন্দী রাখা হয় চার পরিবারকে 

এভাবেই কাঁটা তার দিয়ে ঘিরে রাখা হয় পরিবারের সদস্যদের। ছবি: জনকণ্ঠ।

মামলার সাক্ষী দেয়ার অপরাধে মাদারীপুরের কালকিনিতে কাঁটা তারের বেড়া দিয়ে চারটি পরিবারকে বন্দী করে রেখেছে প্রতিপক্ষ। ফলে ঘর থেকে বেড় হতে না পেরে চরম মানবেতর জীবন-যাপন করছে ওই পরিবারগুলো। 

এদিকে, এ ঘটনায় উপজেলা প্রশাসনের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ভূক্তভোগী পরিবার। পরে আজ বৃহস্পতিবার (২২ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মো. কায়েসুর রহমান ও কালকিনি থানার এসআই মো. রাজিব হোসেন ফোর্স নিয়ে কাঁটা তারের বেড়া কেটে বন্দিদশা থেকে অসহায় পরিবারেকে মুক্ত করেন।

উপজেলা প্রশাসন, ভুক্তভোগী পরিবার ও এলাকা সুত্রে জানা গেছে, উপজেলার রমজানপুর এলাকার উত্তর চর আইরকান্দি গ্রামের সুজন শিকদার বাদী হয়ে প্রায় ১২ বছর আগে একই এলাকার তাইজুল ইসলামসহ বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে মাদারীপুর আদালতে একটি মারামারি মামলা করেন। মামলা নাম্বার জিয়ার ৫২/২০১০ইং। মামলায় সুজনের পক্ষে সাক্ষি দেন একই বাড়ির জাহাঙ্গির শিকদার, মনির শিকদার ও শওকাত শিকদার। মামলায় সাক্ষি দেওয়ায় আসামি তাইজুল ইসলামের নেতৃত্বে সালমান ও সাকিলসহ বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী মিলে সাক্ষী জাহাঙ্গির শিকদার, মনির শিকদার, শওকাত শিকদার ও নাসির শিকদারের বসতঘরের চারপাশে কাঁটা তারের বেড়া দিয়ে আটকে তাদের বন্দী করে রাখে। ফলে ওই চার পরিবারের ৩৫ জন সদস্য ঘর থেকে বের হতে না পেরে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন। 

এদিকে, এই ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার পিংকি সাহার কাছে ও কালকিনি থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ভূক্তভোগী পরিবার। পরে উপজেলা সহকারি কমিশনার ভূমি মো. কায়েসুর রহমান, ইউনিয়ন সহকারি ভূমি কর্মকর্তা মো. হানিফ চোকদার ও কালকিনি থানার এসআই মো. রাজিব হোসেন ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের মুক্ত করেন। 

শওকাত শিকদার ও নাসির শিকদারের পরিবারের সদস্যরা জানান, আমরা সুজনের মামলার সাক্ষী দেওয়ার অপরাধে তাইজুল ক্ষিপ্ত হয়ে আমাদের সকলের বসতঘরের চারপাশে কাঁটা তার দিয়ে বেড়া দিয়ে আটকে রেখেছে। খবর পেয়ে উপজেলা প্রশাসনের লোকজনে এসে আমাদেরকে বেড়া কেঁটে বন্দিদশা থেকে মুক্ত করেছে। তাই আমরা তাদেরকে ধন্যবাদ জানাই। 

অভিযুক্ত তাইজুল ইসলাম বলেন, আমার বিরুদ্ধে সাক্ষী দেওয়ায় বেড়া দিয়েছিলাম।

এ ব্যাপারে উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মো. কায়েসুর রহমান বলেন, অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে কাঁটা তারের বেড়া কেটে বন্দিদশা থেকে অসহায় পরিবারদের উদ্ধার করা হয়েছে। তবে এই ধরনের কাজ পূনরায় কখনও করবেন না বলে অঙ্গীকার করেছেন প্রভাবশালী তাইজুল ইসলাম।

এমএইচ

×