হিমালিয়ান প্রজাতির শকুন
গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার মাঠের হাট হাশনেরপাড়া গ্রামে একটি শকুন দেখতে পায় এলাকাবাসী। এর মধ্যে একটি শকুন ক্লান্ত হয়ে খাবারের খোঁজে ও বিশ্রামের জন্য গাছের মগ ডাল থেকে মাটিতে নেমে আসে। ১২ ফিটের ডানায় ভর করে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে গিয়ে বিশাল আকৃতির ‘হিমালীয়ান গৃধিনী’ শকুন জাতের পাখিগুলো মানুষের রোষানলে পরে আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ও বিশ্বস্ত সূত্রের মাধ্যমে পরিবেশবাদী সংগঠন ‘টিম ফর এনার্জি এন্ড এনভায়রণমেন্টাল রিসার্চ-তীর’ গাইবান্ধা সরকারি কলেজ শাখার নজরে আসে বিষয়টি।
‘তীর গাইবান্ধা সরকারি কলেজ শাখা’র সভাপতি জাহিদ রায়হান তীর-কেন্দ্রীয় কমিটির পরামর্শ ও সহযোগীতায় ‘আইইউসিএন- বাংলাদেশ’ ও ‘সামাজিক বনবিভাগ রংপুর’ এর বন সংরক্ষক মহোদয়কে বিষয়টি অবহিত করে তাৎক্ষণিক গাইবান্ধা বন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম এর নির্দেশনায় গাইবান্ধা বন বিভাগের আয়নাল ও তীর-গাইবান্ধা শাখার’ স্বেচ্ছাসেবীদের ঘটনাস্থলে যান। আন্তরিক হিমালিয়ান প্রজাতির শকুনটি উদ্ধার হয়। তীর-কেন্দ্রীয় সভাপতি রিফাত হাসানের পরামর্শে শকুনগুলো উদ্ধারের পাশাপশি উক্ত এলাকায় সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ করা হয়। পরে আইইউসিএন ও বন বিভাগের পরামর্শে শকুনটিকে দিনাজপুরের শকুন পরিচর্যা কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে।
শকুনের বিষয় নিয়ে গাইবান্ধা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ ও তীর এর উপদেষ্টা প্রফেসর মো. খলিলুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, শকুন হচ্ছে প্রকৃতির ঝাড়ুদার। শকুন বড় ডানার বৃহদাকার পাখি, এটি তীক্ষ্ণ দৃষ্টির অধিকারী। শকুনই একমাত্র প্রাণী যারা রোগাক্রান্ত মৃত প্রাণী খেয়ে হজম করতে পারে এবং অ্যানথ্রাক্স, যক্ষা, খুরারোগের সংক্রমণ থেকে জীবকূলকে রক্ষা করে।
বাংলাদেশে শকুন নিয়ে কাজ করা আন্তর্জাতিক সংস্থা ‘আই.ইউ.সি.এন- বাংলাদেশ’ এর শকুন সংরক্ষণ প্রকল্পের মুখ্য গবেষক সীমান্ত দীপু এর তথ্যানুযায়ী, বাংলাদেশে সর্বশেষ ২০১৪ সালের শকুন নিয়ে শুমারি বলছে, দেশে মোটে ২৬০টি শকুন রয়েছে তবে বন বিভাগের সঙ্গে আই.ইউ.সি.এন-বাংলাদেশ’ এর যৌথ প্রচেষ্টায় প্রকৃতির এই ঝাড়ুদারকে স্বরূপে সরব উপস্থিতিতে ফিরিয়ে আনার বিজ্ঞান সম্মত কার্যক্রম চলমান। বাংলাদেশে এক সময় সাত প্রজাতির শকুন ছিল কিন্তু এর মধ্যে রাজ শকুন পুরোপুরি বিলুপ্ত হয়ে গেছে।
এসএইচ