ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১

সন্তানকে হত্যার দায়ে মায়ের যাবজ্জীবন কারাদন্ড

স্টাফ রিপোর্টার, দিনাজপুর 

প্রকাশিত: ১৯:০৪, ১ ডিসেম্বর ২০২২

সন্তানকে হত্যার দায়ে মায়ের যাবজ্জীবন কারাদন্ড

সাদিয়া আক্তার আশা

দিনাজপুরে নিজ সন্তানকে হত্যার দায়ে সাদিয়া আক্তার আশা (২৫) নামে এক নারীকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছে আদালত। একইসঙ্গে আসামিকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। 

বৃহস্পতিবার দুপুরে দিনাজপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক যাবিদ হোসেন এই রায় প্রদান করেন।

আসামি সাদিয়া আক্তার আশা জেলার পার্বতীপুর উপজেলার হরিরামপুর (ভাটিপাড়া) গ্রামের এরশাদ আলীর স্ত্রী। আদালতে আসামির উপস্থিতিতে এই রায় ঘোষণা করা হয়। মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, সাদিয়ার স্বামী এরশাদ কাজের সুবাদে ঢাকায় থাকতেন। 

সাদিয়া তার মেয়ে মাইমুনাকে নিয়ে স্বামীর বাড়ি হরিরামপুরে থাকতেন। ২০১৭ সালের ৬ জুলাই রাত ১১টার দিকে বাড়ির সবাই ঘুমাতে যাওয়ার আগে সাদিয়া তার শাশুড়ি রেজিয়া খাতুনকে নফল রোজা রাখার জন্য ভোর রাতে সেহরি খাবে বলে ডেকে দিতে বলে। 

ভোর রাতে শাশুড়ি রেজিয়া খাতুন ঘুম থেকে উঠে সাদিয়াকে ডাকতে যায়। ভেতর থেকে দরজা না লাগানো থাকায় দরজা খুলে শাশুড়ি দেখতে পান সাদিয়া এবং তার মেয়ে মাইমুনা ঘরের মেঝেতে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। পরে রেজিয়ার চিৎকারে পরিবারের অন্যান্য সদস্য ও স্থানীয়রা ঘরে এসে মাইমুনাকে মৃত অবস্থায় দেখতে পায়। পাশাপাশি সাদিয়ার বাম হাত এবং ডান পায়ের কব্জিতে জখম হয়ে অচেতন অবস্থায় পায়। 

এ সময় পরিবারের লোকজন সাদিয়াকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করায়। সেখানে চিকিৎসার পর সাদিয়ার জ্ঞান ফিরলে পরিবারের কাছে স্বীকার করে যে, তার মেয়ে মাইমুনাকে নিজেই শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে।

এই ঘটনায় সাদিয়ার দেবর ইব্রাহিম আলী বাদী হয়ে ২০১৭ সালের ৭ জুলাই পার্বতীপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় পুলিশ সাদিয়াকে গ্রেফতার করলে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করেন তিনি।

দিনাজপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পি.পি) রবিউল ইসলাম রবি জানান, মামলা দায়েরের পর আদালতে চার্জ গঠন হয়। আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করেন যে, পারিবারিক কলহের জের ধরে স্বামীর ওপর অভিমান করে শিশুকে হত্যা করে নিজেও আত্মহত্যার চেষ্টা করেন সাদিয়া। মামলাটির সমস্ত সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে আদালত আসামিকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদন্ড এবং ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। 

এমএস

×