
ফসলী জমিতে কাজ করছেন স্থানীয় কৃষকরা
৫০ বছর আগে নাটোরের লালপুর উপজেলায় পদ্মার নদীর ভাঙ্গনে বিলীন হয়ে গিয়েছিল কয়েকটি গ্রাম। এর প্রায় ২০/২৫ বছর পর আবারও পদ্মা নদীর বুকে একে একে জেগে উঠে প্রায় ১৭টি চর। সেই চর গুলোতে এখন বংশ পরমপরায় বসবাস করছেন স্থানীয় লোকজন। কিন্তু ভাঙ্গন জটিলতার কারণে ভূমি অফিস ভূমি উন্নয়ন কর নিতে পারছে না। সর্বশেষ দিয়ারা জরিপ করা হলেও গেজেট প্রকাশ করা হয়নি। একারণে কর নিতে পারছে না ভূমি অফিস।
স্থানীয়দের দাবি, ভাঙ্গনের পূর্বের বৈধ প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র থাকার পরেও কর পরিশোধ করতে না পারায় জমির খাজনা খারিজ করতে পারছেন না চরের বাসিন্দারা। ফলে বন্ধ রয়েছে ক্রয় বিক্রয়। কৃষি উদ্যেক্তারা কৃষি ক্ষেত্রে নানা ভূমিকা রাখলেও ঋনসহ সরকারি সুযোগ সুবিধা থেকেও বঞ্চিত হচ্ছেন। এই অবস্থায় জটিলতা নিরসনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী বাসিন্দারা। এদিকে জটিলতা নিরসনে উদ্যোগ নেওয়ার কথা জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।
জানা গেছে, জেলার লালপুর উপজেলায় পদ্মার বুকে চরমহাদিয়ার, পুলচরা লক্ষীকোল, লালপুর, চরজাজিরা, নওসারা সুলতানপুর, দিয়ার বাহাদুরপুর, রসুলপুর, সেকেন্দারপুরসহ এমন ছোট বড় ১৭ টি চর জেগে ওঠে। স্থানীয়দের মতে প্রায় ৫০ বছর বা তারও আগে এই চরগুলোতে মানুষের বসবাস ছিল। কিন্তু পদ্মার ভাঙ্গনে গ্রামগুলো নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। বিগত ২০-২৫ বছর ওই জায়গা গুলোতে আবার ছোটবড় চর জেগে উঠলে সেখানে বসবাস শুরু করেন স্থানীয়রা। কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, উপজেলার বিভিন্ন চরে প্রায় ৩ হাজার ২ শ’ হেক্টর জমিতে বর্তমানে আধুনিক কৃষির ব্যাপক ফল-ফসল উৎপাদন হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, তাদের কাছে ভাঙ্গনের পূর্বের জমির দলিল, রেকর্ডসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র থাকলেও কর দিতে পারছেন না। ফলে স্থানীয় বাসিন্দা ও কৃষি উদ্যোক্তারা বঞ্চিত হচ্ছেন সরকারি সুবিধা থেকে।
লালপুর, লক্ষীপুর, বিলমাড়িয়া, মোহরকয়া, রামকৃষ্ণপুরের ভুক্তভোগী বাসিন্দা নওশেদ আলম বাদশা লিটন, সেলিম রেজা, ফিরোজ হোসেন, শরীফ হোসেন জানান, আমরা পদ্মা নদীর চরাঞ্চলে আমাদের বাপ-দাদার জমির খাজনা দিতে চাই। জমির খাজনা নেওয়ার জন্য অনুরোধ করছি।
লালপুর সহকারি কমিশনার (ভূমি) দেবাশীষ বসাক জানান, সর্বশেষ সার্ভেয়ার সেটেলমেন্ট অধিদপ্তর থেকে দিয়ারা জরিপ করা হয়েছে। কিন্তু গেজেট প্রকাশ করা হয়নি। গেজেট প্রকাশ হলে আমরা খাজনা নিতে পারব।
জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ জানান, ভূমি ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত কোন আইনি জটিলতা থাকলে প্রয়োজনে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে আইন অনুযায়ী কৃষকদের সর্বোচ্চ সহযোগীতা করতে জেলা প্রশাসন আন্তরিকভাবে বদ্ধপরিকর।
টিএস