ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কৃষকের পাশাপাশি দিনমজুরদের মাঝেও বেড়েছে চরম ব্যস্ততা
চলনবিল অধ্যুষিত পাবনার চাটমোহরে রোপা আমন ধান কাটা ও মাড়াই উৎসবে মেতেছেন চাষিরা। চলতি মৌসুমে রোপা আমন ধানের ভাল ফলন হচ্ছে। কৃষক ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কৃষকের পাশাপাশি দিনমজুরদের মাঝেও বেড়েছে চরম ব্যস্ততা। ধানের ফলন ও দাম ভাল পাওয়ায় কৃষকের চোখে মুখে এখন হাসির ঝিলিক।
সরজমিনে উপজেলার বিভিন্ন মাঠে ঘুরে দেখা গেছে, কোথাও ধান কাটা ও মাড়াই চলছে। কেউ ধান কাটার প্রস্তুতি নিচ্ছেন, আবার কিছু মাঠে ধানের হলুদ বর্ণ ধরেছে। কৃষকেরা বলেন, স্থান বা এলাকা ভেদে বিভিন্ন সময়ে চারা রোপণের কারণে এ অবস্থা। কৃষি অফিসের মতে সাধারণত বছরের জুন থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত রোপা আমন ধান চাষাবাদের মৌসুম ধরা হয়। এ সময়ের আগে পিছে যারা যে সময়ে চারা রোপণ করবেন সেই অনুযায়ী ধান পরিপক্ক হবে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে চাটমোহরে ৭ হাজার ৪৩০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। অর্জন হয়েছে ৭ হাজার ৬১০ হেক্টর। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৮০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধান চাষ বেশি হয়েছে।
উপজেলার গুনাইগাছা ইউনিয়নের বড় শালিখা গ্রামের চাষী মোঃ আফসার আলী বলেন, এক বিঘা জমিতে রোপা আমন ধান আবাদে জমি চাষ, বীজ, চারা রোপন, আগাছা অপসারণ, সার, কীটনাশক ও কাটা বাবদ খরচ হয় ১১ হাজার টাকা। বিঘায় ফলন হচ্ছে ১৬ থেকে ১৮ মন। সেচযন্ত্রের মালিককে এক পঞ্চমাংশ ধান জমি থেকেই দিয়ে আসতে হচ্ছে। বিঘায় কৃষকের টিকছে প্রায় ১২ মন ধান যার বাজার মূল্য প্রায় ১৫ হাজার টাকা। দুই হাজার টাকার খড় পাওয়া যাচ্ছে প্রতি বিঘা জমি থেকে। ফলে বিঘা প্রতি কৃষকের লাভ থাকছে প্রায় ৬ হাজার টাকা।
বিলচলন ইউনিয়নের রামনগর গ্রামের কৃষক এনামুল হক বলেন, ধানের দাম যেমন বেড়েছে তেমনি কৃষি উপকরণের দামও বেড়েছে। রোপা আমন চাষ করে কৃষক বিঘা প্রতি প্রায় ৫ হাজার টাকা লাভ করতে পারছেন।
এ ব্যাপারে চাটমোহর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এ.এ মাসুম বিল্লাহ জানান, চাটমোহরে সাধারণত ব্রীধান ৩৯, ৪৯, ৫৬, ৭১, ৭৫, ৮৭ ও বীনা ৭, ১৭, ২২ জাতের রোপা আমন ধান চাষ হয়। চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ভাল ধান হয়েছে। হেক্টর প্রতি প্রায় সাড়ে ৪ টন বা তারও বেশি গড় ফলন পাওয়া যাচ্ছে। রোপা আমন ধান চাষ করে কৃষক লাভবান হচ্ছেন।
টিএস