হাসপাতালে ছাগলের চামড়া সেলাই করছেন অফিস সহায়ক। ছবি: জনকণ্ঠ
বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলা ভেটেরিনারি হাসপাতালে নেই প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ও ভেটেরিনারি সার্জন। এতে ধীর গতিতে চলছে অফিসের কার্যক্রম। ফলে উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে আগত খামারিরা সেবা পাচ্ছেন না।
১৭ নভেম্বর (বৃহস্পতিবার) উপজেলা প্রাণি সম্পদ অফিসে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে অসুস্থ পশু নিয়ে এসেছেন খামারিরা। আবার অনেক খামারিরা এসেছেন প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তার কাছে পশুপালন সম্পর্কিত পরামর্শ নিতে। অধিকাংশ পশু–পাখি পোষা মালিকেরা নিয়ে এসেছেন চিকিৎসা দেয়ার জন্য। কিন্তু অফিসে পর্যাপ্ত লোকবল না থাকায় তারা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
উপ-সহকারি প্রাণি সম্পদ সম্প্রসারণ অফিসার মো: হাবিবুর রহমান কে দেখা যায় মোবাইল ফোনে কথা বলে একটি অসুস্থ বিড়ালকে চিকিৎসা ব্যবস্থাপত্র দিচ্ছেন। এ ছাড়া অফিসের অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সময় মতো অফিসে আসেন না বলেও অভিযোগ রয়েছে।
চলতি বছরের ৪ আগস্ট উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. আলাউদ্দিন মাসুদ বদলির কারণে পদটি শূন্য হলে প্রায় ৩ মাস পরে নব যোগদানকৃত প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা আসলেও তিনি সরকারি কাজে দেশের বাইরে রয়েছেন। বর্তমানে পদটিতে দায়িত্ব পালন করছেন উপসহকারী প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা মো: জাকির হোসেন।
উপসহকারী প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো: জাকির হোসেন জনকণ্ঠকে বলেন, বাকেরগঞ্জ প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার পদ শূন্য হওয়ার পর থেকে আমি অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছি। রয়েছে জনবল সংকট, সহকারি প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা নেই। উপসহকারী চার জন থাকার কথা রয়েছে, আছে মাত্র দুই জন। অফিস সহকারী পথ শূন্য। কৃত্রিম প্রজনন সেবা কর্মী ১৪টি ইউনিয়নে থাকার কথা থাকলেও সেখানেও রয়েছে সংকট।
অপরদিকে, কৃত্রিম প্রজনন সেবা কমীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে মাঠ পর্যায়ে অর্থের বিনিময়ে গবাদিপশুর চিকিৎসা দিয়ে আসার।
বাকেরগঞ্জ উপজেলা প্রনিসম্পদ অফিসে সেবা নিতে আসা কয়েকজন লোকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দপ্তরটিতে প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ও ভেটেরিনারি সার্জন কর্মকর্তা না থাকায় পশু চিকিৎসা ও লালন-পালনের বিষয়ে পরিপূর্ণ সেবা পাচ্ছেন না তারা। অনেকে অভিযোগ করে বলেন, পাঁচ বার পশু হাসপাতালে এসেও মুরগির টিকা পাইনি। নিরুপায় হয়ে অধিক মূল্যে ফার্মেসি থেকে ক্রয় করতে হয় মুরগির টিকা।
প্রাণীসম্পদ অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালে হাঁস মুরগির টিকা প্রদান করা হয়েছে ২ লাখ ৬৯ হাজার। গরু ছাগলের ভ্যাকসিন প্রদান করা হয়েছে ১১ হাজার ৯৭০। যাহা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। জনবল সংকট ও ডাক্তার না থাকায় কম্পাউন্ডার ও পিয়ন গবাদি পশু ও হাঁস মুরগির চিকিৎসা দিয়ে আসছে।
এছাড়াও ভেটেরিনারি হাসপাতালে আনা অধিকাংশ পশু-পাখিই পোষা। মালিকেরা নিবিড় সেবার জন্য সেগুলোকে হাপাতালে রাখতে চান। কিন্তু সেই সুযোগ না থাকায় বাড়ি নিয়ে যেতে হয়।
অফিস সহায়ক মো. জসিম উদ্দিন জানান, ড্রেসার ম্যান আইয়ুব আলী চোখে কম দেখেন। তাই আমি ছাগল অপারেশনের পর সেলাইয়ের কাজটি করেছি।
এ বিষয়ে জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. নুরুল আলমকে এসএমএস পাঠানোর পর বারবার ফোন করলেও ফোন রিসিভ করেননি তিনি।
এসআর