কন্যা পূজা বণিক ও মা বাসন্তী বণিক
একমাত্র মেয়ের মৃত্যুর শোক সহ্য করতে না পেরে হেক্সিসল পান করে বাসন্তী বণিক নামে এক মা আত্মহত্যা করেছেন। শুক্রবার (১১ অক্টোবর) টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার উয়ার্শী ইউনিয়নের নগর ভাতগ্রাম গ্রামে মর্মান্তিক এ ঘটনাটি ঘটে।
বাসন্তী বণিক ওই গ্রামের প্রাণকৃষ্ণ বণিকের স্ত্রী। এ ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে বলে জানা গেছে।
এলাকাবাসী ও পুলিশ জানায়, বাসন্তী বণিক ও প্রাণকৃষ্ণ বণিক দম্পত্তির একমাত্র কন্যা সন্তান পূজা বণিক (১৮)। পূজা কিডনীসহ নানা জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘ দিন ধরে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেখানে তার মৃত্যু হয়। এ বছর মির্জাপুর সরকারি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল পূজার। কিন্তু অসুস্থতার কারণে সে পরীক্ষার ফরম পূরণ করতে পারেননি ।
আজ ভোরে একমাত্র সন্তানের মরদেহ বাড়িতে এসে পৌঁছালে বাসন্তী বণিক শোকে হতভম্ব হয়ে পড়েন। মেয়ের মৃত্যুর বিষয়টি সহ্য করতে না পেয়ে সকলের অজান্তে বাথরুমে ঢুকে হেক্সিসল পান করেন। কিছুক্ষণ পর অসুস্থ্য হয়ে পড়লে তাকে কুমুদিনী হাসপাতলে নেয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
উয়ার্শী ইউপি সদস্য আবুল কালাম জানান, পূজা বণিক ছিল ওই দম্পত্তির একমাত্র সন্তান। কিডনী রোগে আক্রান্ত হলে দীর্ঘ দিন ধরে ঢাকায় তার চিকিৎসা চলছিল। এতে অনেক টাকা পয়সা খরচ হয়। কিন্ত তারপরও মেয়েকে বাঁচাতে পারেনি পরিবার। ভোরে মেয়ের মরদেহ দেখার পর বাসন্তী বণিক হতবিহবল হয়ে পড়েন। একমাত্র সন্তানের মৃত্যু মেনে নিতে না পেরে সকলের অজান্তে হেক্সিসল পান করে আত্মহত্যার পথ বেচে নেন বাসন্তী।
প্রতিবেশী অনন্ত পাল বলেন, মেয়েকে বাঁচাতে গিয়ে জমি জমা বিক্রি করে প্রাণকৃষ্ণ সর্বশ্বান্ত হয়ে পড়েছেন। মা মেয়েকে একসাথে দাহ করা হবে বলে তিনি জানান।
মির্জাপুর থানার এসআই জহির ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, পূজার মা বাসন্তী বণিকের মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে।
মির্জাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ আবু সালে মাসুদ করিম বলেন, ঘটনাটি অত্যন্ত হৃদয় বিদায়ক। পরিবারের আবেদন প্রেক্ষীতে উর্ধ্বতন কর্তপক্ষের অনুমতি সাপেক্ষে বিনা ময়না তদন্তে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
এমএইচ