পরচুলা তৈরীর কারখানা
মাথার চুল নিয়ে মানুষ নানা সমস্যা পড়েন। কারও মাথার চুল বড়, কারও ছোট, কারও মাথার চুল ঘন আবার কারও পাতলা। কারও মাথার চুল উঠে টাক পড়েছে পুরো মাথা জুড়ে। অনেকে এটা নিয়ে প্রায়ই মনোকষ্টে ভোগেন। এ কারণে অনেক টাকা খরচ করে কেউ পরচুলা মাথায় চাপিয়ে মাথায় চুল না থাকার কষ্ট ভোলার চেষ্টা করেন। তাদের এই কষ্ট লাঘব করতে এবং এটিকে ব্যবসায় পরিণত করে এবার গোবিন্দগঞ্জের এক যুবক প্রতিষ্ঠা করেছেন পরচুলা তৈরীর কারখানা। হেয়ার ওয়েডিং বা পরচুলা তৈরীর কারখানা গড়ে ব্যাপক সাফল্যও পেয়েছেন তিনি।
উপজেলা শহরের মধ্যপাড়ার বাসিন্দা ইসরাফিল শেখ। পরচুলা তৈরীর কারখানা গড়ে নিজের সাফল্যের পাশাপাশি তিনি বহু বেকার যুবক-যুবতী ও নিম্ন আয়ের মানুষের আয়ের পথ তৈরী করেছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গোবিন্দগঞ্জ পৌর শহরের মধ্যপাড়া এলাকায় স্থানীয় যুবক ইসরাফিল শেখ হেয়ার ওয়েডিং বা পরচুলার কারখানা গড়ে তোলেন ২০১৮ সালে । লক্ষ্য ছিল নিজে স্বাবলম্বী হওয়ার পাশাপাশি স্থানীয় বেকার ও অসহায় পরিবারে সদস্যদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা। সে সময় তিনি ঢাকা থেকে দুইজন দক্ষ কারিগর এনে স্থানীয় বেকার যুবক-যুবতীদের হাতে কলমে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করছেন। প্রশিক্ষণ শেষে তাদেরকে কাজে লাগান। এভাবে এক-দুই করতে করতে এখন তাঁর কারখানায় কাজ করছেন ৩৪৬জন যুব মহিলা এবং ১০জন যুবক।
দক্ষতা ও কাজের গতির উপর নির্ভর করে একজন কর্মী প্রতিমাসে ৫ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করছেন। প্রতি পিস হেয়ার ওয়েডিং বা পরচুলা তৈরীর জন্য একজন কর্মী পান ১হাজার ৫৮০টাকা। এছাড়াও উৎসাহ ভাতা হিসেবে প্রতি ৫পিছ হেয়ার ওয়েডিং বা পরচুলা তৈরীর জন্য ১ হাজার টাকা দেয়া হয় কর্মীদেরকে।
সংসারের অভাব-অনটনের লাগাম টানতে নিজেদের এলাকায় এমন একটি উপার্জনের পথ খুজে পেয়ে অনেক খুশি এখানকার কর্মরত নারী কর্মীরা।
প্রতিষ্ঠানটির জেনারেল ম্যানেজার নাদিয়া আকতার উর্মি জানান, বেকার ও অসহায় মানুষদের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে পেরে অনেক খুশি আমরা। সরকারের সহায়তা পেলে আরও বেশী মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা সম্ভব হবে বলে তিনি জানান।
শিল্পক্ষেত্রে অনগ্রসর দেশের উত্তরের জেলা গাইবান্ধায় এমন একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা কতটা কষ্টকর ছিল তা জানালেন প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক। তিনি জানান, প্রথমে ঢাকা থেকে দুইজন দক্ষ কারিগর এনে স্থানীয় বেকার যুবক ও যুব মহিলাকে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা করা হয়। তাদেরকে হাতে কলমে শিখিয়ে চাকুরীতে নিয়োগ করা হয়। এভাবে এক দুই করতে করতে এখন মোট ৩শ’ ৫৬জন কর্মী আমাদের কারখানায় প্রতিদিন কাজ করছেন।
টিএস