ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

বঙ্গবন্ধুর জীবন কাহিনী নিয়ে ভ্রাম্যমাণ রেল জাদুঘর

নিজস্ব সংবাদদাতা, হবিগঞ্জ 

প্রকাশিত: ১৬:৪৫, ৭ নভেম্বর ২০২২; আপডেট: ১৬:৪৬, ৭ নভেম্বর ২০২২

বঙ্গবন্ধুর জীবন কাহিনী নিয়ে ভ্রাম্যমাণ রেল জাদুঘর

রেল জাদুঘরে বঙ্গবন্ধুর ছবি দেখছেন শিশু দর্শনার্থীরা

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন কাহিনী নিয়ে হবিগঞ্জ জেলার শায়েস্তাগঞ্জ রেলওয়ে জংশনে অবস্থান করছে ভ্রাম্যমাণ জাদুঘর। এ জাদুঘর দেখে মুগ্ধ শিশু থেকে বৃদ্ধ পর্যন্ত। এতে তারা অনেক কিছু জানতে পেরেছেন। 

সোমবার (৭ নভেম্বর) সকালের দিকে গিয়ে দেখা যায়, শায়েস্তাগঞ্জ রেলওয়ে জংশনের ৩ নম্বর প্লাটফর্মে একটি বিশেষ ট্রেন দাঁড়ানো। বিশেষভাবে সাজানো একটি বগিতে ভ্রাম্যমাণ জাদুঘর। বাকি দুটি বগি দায়িত্বরত সংশ্লিষ্টদের জন্য বরাদ্দ।

বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামী জীবন উঠে এসেছে এ জাদুঘরের প্রদর্শনীতে। জাদুঘরের নান্দনিক সাজ আগতদের বেশ আকৃষ্ট করেছে। দর্শনার্থীদের ছবি তোলার হিড়িক পড়ে জাদুঘরকে ঘিরে। জাদুঘরটি ঘুরবে দেশের অন্যান্য জেলাগুলোতেও।

শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বগিটি বেশ পরিপাটি। বগিটিতে উঠতেই কানে আসে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ। দরজার পাশেই মুজিব শতবর্ষের লোগোসহ বঙ্গবন্ধুর ছবি। এছাড়া, বঙ্গবন্ধুর জীবন সংগ্রাম ফুটিয়ে তোলা হয়েছে বিভিন্ন ছবির মাধ্যমে। আবছা আলোয় বেশ সুন্দর দেখাচ্ছিল এসব ছবি। 

বঙ্গবন্ধুর আদি পৈতৃক বাড়ি, জাতির জনকের সমাধিস্থল, জাতিসংঘে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ, বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন, মুজিব কোট, বঙ্গবন্ধুর চশমা, মুজিবনগর, স্মৃতিসৌধ ইত্যাদির ছবি ও প্রতিচ্ছবি এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য। রয়েছে বঙ্গবন্ধুর জীবনসংগ্রাম নিয়ে ভিডিও। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে লেখা বই দিয়ে সাজানো হয়েছে একটি তাক। 

কথা হয় ভ্রাম্যমাণ জাদুঘর দেখতে আসা সাবাসপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী রিপন মিয়ার সঙ্গে। রিপন জানায়, বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পেরে সে বেশ খুশি। শিশু মাহিন মিয়া জানায়, এটা তার নতুন একটা অভিজ্ঞতা।

শায়েস্তাগঞ্জ জংশনে দায়িত্বরত রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর এক সদস্য বলেন, বিভিন্ন বয়সের অনেক মানুষ আসছেন জাদুঘরটি দেখতে। বেশ সাড়া ফেলেছে এ জাদুঘরটি।

স্টেশন মাস্টার মো. আবুল খায়ের চৌধুরী জানান, ৬ নভেম্বর থেকে শায়েস্তাগঞ্জে এটির প্রদর্শন শুরু। চলবে ১১ নভেম্বর পর্যন্ত। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা ও বিকেল ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বিনা প্রবেশ ফিতে দর্শনার্থীরা জাদুঘরটি দেখতে পারছে।

উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুর রশিদ তালুকদার ইকবাল বলেন, এটি খুব ভালো উদ্যোগ। এর মধ্য দিয়ে বিশেষ করে নতুন প্রজন্ম বঙ্গবন্ধুকে আরো ভালো করে জানতে পারবে। এ ভ্রাম্যমাণ জাদুঘর বিষয়ে আরো প্রচারণার দাবি জানিয়েছেন তিনি।

ইউএনও নাজরাতুন নাঈম বলেন, এ জাদুঘর  থেকে নতুন প্রজন্মরা ইতিহাস জানতে পারছে। রেল বিভাগের এ উদ্যোগ প্রশংসনীয়। 

১০০ মিটার লম্বার দুটি বিশেষ বগিতে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে জাদুঘর করা হয়। নতুন প্রজন্মকে বঙ্গবন্ধু, স্বাধীনতা ও দেশ সম্পর্কে আরো বেশি জানাতে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ এ উদ্যোগ নেয়।

এর আগে রবিবার (৬ নভেম্বর) শায়েস্তাগঞ্জ জংশনে দর্শনার্থীদের দেখার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ভ্রাম্যমাণ রেল জাদুঘরের উদ্বোধন করা হয়। ফিতা কেটে উদ্বোধন করেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রশিদ তালুকদার ইকবাল। 

এ সময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নাজরাতুন নাঈম, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি হাজী শফিকুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মাসুদউজ্জামান মাসুক, শ্রমিক লীগ নেতা আনোয়ার মিয়া, স্টেশন মাস্টার মো. আবুল খায়ের চৌধুরী, রেল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ বাদশা আলমসহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।    

এসআর

×