ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১

বদলগাছীতে নারী উদ্যোক্তাকে যৌন হয়রানি, চেয়ারম্যানকে শোকজ

প্রকাশিত: ১৪:৫৮, ৩ নভেম্বর ২০২২

বদলগাছীতে নারী উদ্যোক্তাকে যৌন হয়রানি, চেয়ারম্যানকে শোকজ

চেয়ারম্যান মাসুদ রানা

নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার মথুরাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাসুদ রানার বিরুদ্ধে এক নারী উদ্যোক্তাকে যৌন হয়রানির অভিযোগে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। 

নোটিশ পাওয়ার ১০ কার্যদিবসের মধ্যে তাকে জবাব দিতে বলা হয়েছে।

গত ২৬ অক্টোবর স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব জেসমীন প্রধান সই করা এক স্মারক থেকে এ তথ্য জানা যায়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ওই ইউনিয়ন পরিষদের সচিব প্রদীপ কুমার।

স্মারকে বলা হয়েছে- বদলগাছী উপজেলার মথুরাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাসুদ রানার বিরুদ্ধে একই ইউনিয়নের ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের (ইউডিসি) এক নারী উদ্যোক্তাকে যৌন হয়রানি এবং অনৈতিক প্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। এ ঘটনায় কেন তার বিরুদ্ধে স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন-২০০৯ অনুযায়ী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে না তার জবাব ১০ কার্যদিবসের মধ্যে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে দিতে বলা হয়েছে।

চলতি বছরের ১৩ জুন জেলা প্রশাসকসহ, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছিলেন ওই নারী উদ্যোক্তা।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ২০১০ সালের ১১ নভেম্বর থেকে ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের (ইউডিসি) উদ্যোক্তা হয়ে কাজ করছেন ওই নারী। ২০২১ সালের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের আগ থেকে চেয়ারম্যান মাসুদ রানা তাকে (নারী উদ্যোক্তা) বিভিন্নভাবে যৌন হয়রানি করে আসছেন। মাসুদ রানা তাকে মুঠোফোনে এবং বেশকিছু চিঠির মাধ্যমে দীর্ঘদিন ধরে শারীরিক সম্পর্কের প্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন। চেয়ারম্যান হওয়ার পর থেকে তার হয়রানি আরও বেড়ে যায়। কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে নারী উদ্যোক্তার ব্যবহৃত মুঠোফোনটি কেড়ে নেন। এরপর মুঠোফোন থেকে কিছু গোপন তথ্য ডিলিট করে দেন। পরবর্তীতে স্থানীয় লোকজনের মাধ্যমে ফোন ফেরত দেন।

ওই নারী উদ্যোক্তার সংসার রয়েছে এবং যমজ কন্যাসন্তানও আছে। চেয়ারম্যানের এমন যৌন হয়রানির কারণে তার সংসারে কলহসহ কর্মক্ষেত্রেও সমস্যার সৃষ্টি হয়। অবশেষে স্বামী-স্ত্রীর মাঝে বিচ্ছেদ ঘটে। ঘটনার পর থেকে তার কর্মস্থলসহ সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন হতে হচ্ছে।

ভুক্তভোগী ওই নারী উদ্যোক্তা বলেন, শুনেছি চেয়ারম্যানকে কারণ দর্শানোর নোটিশ করা হয়েছে। যেভাবে আমি হয়রানির শিকার হয়েছি এমনটা যেন আর কারও সঙ্গে না হয়। চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি।

মথুরাপুর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব প্রদীপ কুমার বলেন, বুধবার বিকেলে স্থানীয় সরকার পল্লিউন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের ইউনিয়ন পরিষদ-১ শাখার সিনিয়র সহকারী সচিব জেসমীন প্রধান সই করা নোটিশ পেয়েছি। যেখানে চেয়ারম্যানকে ১০ কার্যদিবসের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে।

এ বিষয়ে মথুরাপুর ইউনিয়ন পরিষদের অভিযুক্ত চেয়ারম্যান মাসুদ রানা বলেন, এ ধরনের কোনো নোটিশ এখনো হাতে পাইনি। আর যদি নোটিশ করা হয় তাহলে সে মোতাবেক জবাব দেওয়া হবে।


 

সম্পর্কিত বিষয়:

×