ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১

ঢাকা টঙ্গী ময়মনসিংহ সড়ক যানজট মুক্ত, যাত্রী চালকরা স্বস্তিতে

নিজস্ব সংবাদাতা, টঙ্গী

প্রকাশিত: ২১:৩৬, ৩০ অক্টোবর ২০২২

ঢাকা টঙ্গী ময়মনসিংহ সড়ক যানজট মুক্ত, যাত্রী চালকরা স্বস্তিতে

ঢাকা-টঙ্গী-ময়মনসিংহ সড়ক

বিআরটির টঙ্গী মিলগেট অংশে খানাখন্দ গর্তের আধা কিলোমিটার রাস্তা মেরামতে পিচ ঢালাইয়ের পর ঢাকা টঙ্গী গাজীপুর ময়মনসিংহ মহাসড়কে রবিবার সকাল থেকে যানজট একদমই কমে গেছে। 

যানচলাচলে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে এসেছে সড়কটিতে। যাত্রী চালক পথচারীদের এখন আর কোন ভোগান্তি নেই। যানজটে আটকা পড়ে ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে না আর। যাত্রী চালক পথচারী সবাই খুশী। স্বস্তি ফিরে এসেছে এ সড়কে চলাচলকারী ১৬ টি রুটের হাজারো যানবাহন চালক, লাখো যাত্রীর মাঝে। 

টঙ্গীর রাস্তায় যানজট কমে যাওয়ায় উত্তরা এয়ারপোর্ট  বনানী মহাখালী রুটেও যানজট নেই। এয়ারপোর্ট থেকে গাজীপুর শিববাড়ি পর্যন্ত সাড়ে ২০ কিলোমিটার রাস্তায় বিআরটি সড়ক নির্মাণে পুরো রাস্তা জুড়ে বড় বড় গর্ত করে পিলার নির্মাণে রাস্তায় খোঁড়াখুড়ি, নির্মাণ সামগ্রী এলোমেলোভাবে ফেলে রাখা, আট লেনের বিশাল রাস্তায় একলেনে যানবাহন চলাচল করানোয় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয় এই মহাসড়কটিতে। মহাভোগান্তিতে পড়েন এ সড়কে চলাচলকারী যাত্রীরা। 

গত ৮/১০ বছর ধরে চলা যানজটের এই মহাভোগান্তি যাত্রী চালক পথচারী জনসাধারণ ভোগ করে আসলেও স্থানীয় কোন জনপ্রতিনিধি আজ পর্যন্ত বিআরটিকে নানা সমস্যা সমাধান করতে একটিবারও তাগাদা দেননি বিআরটিকে। ক্ষমতায় থাকতে গাজীপুর সিটি মেয়র জাহাঙ্গীর আলম বিআরটির ভুল ডিজাইনে সড়ক নির্মাণ করা নিয়ে নানা সময় নানা কথা বলে উপর মহলের রোষানলেও পড়েন তিনি। কাজের ধীরগতি এবং সড়কের যানজটে পরবর্তীতে সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরও বিআরটি প্রকল্পকে গলার কাটা বলতে বাধ্য হন। বিএনপির মহাসচিব মীর্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও বলেন, বিআরটি এক মহাভোগান্তির প্রকল্প। 

গত মাসে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল যানজটে আটকা পড়ে দেরিতে অনুষ্ঠানে আসা গাজীপুর মহানগর পুলিশের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর সভায় স্হানীয় দু'মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক ও জাহিদ আহসান রাসেলের নাম ধরে বলেন, "বিআরটির নির্মাণ কাজের ধীরগতি ও যানজট নিয়ে আপনারাওতো পারেন বিআরটিকে তাগাদা দিয়ে ভোগান্তি অবসান করাতে। 

এ ব্যাপারে আমরাও সহায়তা করবো।" এদিকে বিআরটির সড়ক নিয়ে এখন সবাই অস্বস্তিতে। বিআরটির জবাবদিহিতা না থাকায় এমন অবস্থা বলছেন সংশ্লিষ্টরা। পিচ ঢালাইয়ের বিকল্প সড়ক নির্মাণ না করে বিআরটি সড়ক নির্মাণ কাজ চালিয়ে নেয়ায় দেখা দিয়েছে এমন মহাবিপত্তি। একটু বৃষ্টি হলেই সড়কে পানি জমে সৃষ্টি হচ্ছে বড় বড় গর্তের। সারা সড়ক জুড়ে লেগে যাচ্ছে মহাযানজট। 

গত ৮/১০ বছর ধরে চলছে এমন মহাভোগান্তি। আলোচিত টঙ্গী মিলগেট সমস্যা সমাধানে যানজট কতদিন স্বাভাবিক থাকে তাও দেখার বিষয়ন এখন। এদিকে গত ৩ দিন আগেও যানজটে আটকা পড়ে এয়ারপোর্ট গাজীপুর সড়কের ২০ কিলোমিটারের এক ঘন্টার রাস্তা পাড়ি দিতে সময় লাগতো ৩/৪/৫ ঘন্টা পর্যন্ত। সড়কে যানজট না থাকায় আজ রবিবার সকাল থেকে এক ঘন্টার কম সময়ে পাড়ি দিতে পারছেন ২০ কিলোমিটারের এই রাস্তা। কি করে 

এমন অসাধ্য সাধন হয়েছে, জানতে চাইলে গাজীপুর মহানগর দক্ষিণ ট্রাফিক পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার আলমগীর হোসেন জনকণ্ঠ বলেন, বিআরটির চলমান কাজে গত ৭ দিন আগে টঙ্গী মিলগেট অংশে আধা কিলোমিটার রাস্তা ঘুর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের ঝড়ো বৃষ্টির পানি রাস্তায় জমে বড় বড় গর্ত হয়ে যায়। ধীরগতি এবং গাড়ি গর্তে আটকে যানবাহন চলাচল থমকে যায়। যানজটে প্রায় অচল হয়ে পড়ে ঢাকা টঙ্গী গাজীপুর ময়মনসিংহ মহাসড়ক। পরিদর্শনে আসেন গাজীপুর মহানগর পুলিশের পুলিশ কমিশনার মোল্লা নজরুল ইসলাম। ভাঙা গর্ত রাস্তা দ্রুত মেরামতে তাগাদা দেন বিআরটি কর্তৃপক্ষকে। 

অপরদিকে জনকণ্ঠসহ নানা মিডিয়া টঙ্গী মিলগেট সমস্যাটি বেশ গুরুত্বসহ তুলে ধরে। বিআরটি কর্তৃপক্ষ মিলগেটের খানাখন্দ গর্ত রাস্তা গত ৩দিন ধরে পিচ ঢালাই দিয়ে স্বাভাবিক অবস্হায় ফিরিয়ে আনে। বাকি মেরামত কাজ শেষ হলে বাকি ভোগান্তি কেটে যাবে বলে আশা পুলিশ বিআরটি কর্তৃপক্ষের। 

ট্রাফিক পুলিশের পাশাপাশি যানবাহন নিয়ন্ত্রণে থাকা টঙ্গী পূর্ব পশ্চিম থানার ওসি আশরাফুল ইসলাম ও শাহ আলম জনকণ্ঠকে বলেন, বিআরটির আলোচিত টঙ্গী মিলগেট অংশে পিচ ঢালাই সমাপ্ত হওয়ায় এক মহাভোগান্তির অবসান হয়েছে। 

টঙ্গী গাজীপুর মহাসড়কে দায়িত্বরত ট্রাফিক সার্জেন্ট তারেক দিপু বলেন, যাত্রী চালকদের পাশাপাশি আমরাও যানজট নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খেয়েছি প্রতিমূহুর্তে। আজ থেকে সেটা আর নেই। ঢাকা টঙ্গী গাজীপুর ময়মনসিংহ মহাসড়ক এখন পুরোপুরি যানজট মুক্ত।
 

সম্পর্কিত বিষয়:

×