ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১

বাউফলে তেঁতুলিয়া নদী থেকে ইলিশ উধাও!

নিজস্ব সংবাদদাতা, বাউফল 

প্রকাশিত: ২০:৪৯, ২৯ অক্টোবর ২০২২

বাউফলে তেঁতুলিয়া নদী থেকে ইলিশ উধাও!

নদীতে জাল ফেলেও ইলিশের দেখা পাননি জেলেরা। ছবি:জনকণ্ঠ।

পটুয়াখালীর বাউফলের তেঁতুলিয়া নদীতে ২২ দিনের অবরোধ শেষ হয়েছে শুক্রবার (২৮ অক্টোবর) দিবাগত রাত ১২টায়। ওই দিন রাতেই বুক ভড়া আশা নিয়ে ইলিশ শিকারের জন্য নদীতে নামেন জেলেরা । শনিবার (২৯ অক্টোবর) দুপুর পর্যন্ত তিন দফায় তারা তেঁতুলিয়া নদীতে জাল ফেলেও ইলিশের দেখা পাননি। ২-৪ জন জেলে ৩-৪টি করে ইলিশ পেলেও অন্যান্য জেলেরা হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।

তেঁতুলিয়া নদীর তীরবর্তী নিমদি গ্রামের ছেলে জামাল মাতুব্বর,  রুবেল গাজী ও আবদুর রহমান। তারা তিনজন শনিবার সকাল ১১টার দিকে তেঁতুলিয়া নদীতে জাল ফেলেন। ২ ঘণ্টা পরে দুপুর ১টার দিকে সেই জাল টেনে তুলেন। কিন্তু ইলিশের দেখা পাননি। তাই হতাশ মনে বাড়ি ফিরে গেছেন।

রুবেল গাজী জানান , ২২ দিনের অবরোধের ফলে তাদের সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হয়েছে। মহাজনদের কাছ থেকে দাদনে টাকা এনে জাল কিনেছেন। নৌকা মেরামত করেছেন। মাছ বিক্রির টাকা দিয়ে কিস্তি পরিশোধ করবে ভেবেছেন । কিন্তু সে আশায় গুড়েবালি। নদীতে জাল ফেলেও ইলশ মিলছেনা। এমন হলে দাদনের টাকা কিভাবে শোধ করবেন, তা নিয়ে দুঃচিন্তায় পরেছেন।

একই গ্রামের জেলে বাপ্পি ব্যাপারী জানান, তেঁতুলিয়া নদীতে প্রায় পাঁচ হাজার জেলে মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করে। সকাল ও সন্ধ্যা দুই বেলা তারা নদীতে জাল ফেলেন। তারা আশা করেছিলেন অবরোধ শেষে নদীতে ইলিশে দেখা পাবেন। কিন্তু ইলিশ নদী থেকে উধাও হয়ে গেছে।

আজ শনিবার সরজমিনে তেঁতুলিয়া নদীর নিমদি পয়েন্টে দেখা গেছে, প্রায় শতাধিক জেলে  ইলিশ শিকারে জন্য নদীতে জাল ফেলেছেন। দুই ঘণ্টা অপেক্ষার পর যখন জাল টানা হয়েছে তখন কারো জালেই ইলিশের দেখা মেলেনি। ওই পয়েন্ট থেকে একটু দক্ষিণ দিকে গিয়ে হোসেন গাজী নামের এক জেলের দেখা মিলেছে। তাদের নৌকায় বাপ ছেলে দুইজন। তারা সকাল ১১টায় জাল ফেলেছেন। দুপুর ১টায় জাল টেনেছেন। তাদের জালে ২টি ইলিশ মিলেছে, তাও সাইজে ছোট আকারের। তারমতো আরও ২-৩ জনে ২-১টি করে ইলিশ পেয়েছেন। কিন্তু অন্যান্য জেলেদের জালে কোনো ইলিশ মিলেনি।

হোসেন গাজী নামের ওই জেলে জানান, আশা নিয়ে নদীতে জাল ফেলেছিলেন । কিন্তু সেই আশা অধরা রয়ে গেছে। এভাবে চলতে থাকলে তাদেরকে স্ত্রী সন্তান নিয়ে না খেয়ে থাকতে হবে। মহাজনের দাদনের টাকা পরিশোধের সুযোগ থাকবে না। জাল ও নৌকা বিক্রি করে টাকা শোধ করতে হবে।

এ ব্যাপারে উপজেলা মৎস্য সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মাহাবুব আলম বলেন,‘নির্দিষ্ট সময় প্রজনন শেষে ইলিশ তাদের গতিপথ পরিবর্তন করেছেন। তাই হয়তো তেঁতুলিয়া নদীতে ইলিশের দেখা মিলছেনা। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে তেঁতুলিয়া নদীতে ইলিশের দেখা মিলবে।’

উল্লেখ, গত ৭ অক্টোবর থেকে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত ২২ দিন নদীতে ইলিশের নিরাপদ প্রজননের জন্য সকল ধরণের মাছ শিকার নিষিদ্ধ করে সরকার।

এমএইচ

সম্পর্কিত বিষয়:

×