ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

সড়ক এখন খাল, জনদুর্ভোগ চরমে 

সংবাদদাতা, বাকেরগঞ্জ, বরিশাল

প্রকাশিত: ১৫:৪৭, ২৭ অক্টোবর ২০২২

সড়ক এখন খাল, জনদুর্ভোগ চরমে 

জোয়ারের পানি বাড়ায় প্রায় ১০ কিলোমিটার কৃষ্ণকাঠি সড়কটি খালে পরিণত হয়েছে

জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলার বরিশাল পটুয়াখালী মহাসড়কের সাথে সংযোগ ভরপাশা ইউনিয়নের হাতাকাঠি সড়ক। হাতাকাঠি সড়কের সাথে সংযোগ হয়ে কৃষ্ণকাঠি সড়কটি বয়ে চলেছে ভরপাশা ইউনিয়নের প্রান কেন্দ্র থেকে। প্রায় ১০ কিলোমিটার কৃষ্ণকাঠি সড়কটি এক সময় ইউনিয়নের প্রধান সড়ক হিসেবেই পরিচিত ছিল। সড়কটি এক প্রান্ত মিশেছে শেখ হাসিনা সেনানিবাস এর সাথে। অপর এক প্রান্ত কানকি কৃষ্ণকাঠি হয়ে বরিশাল বরগুনা সড়ক এর সাথে পাদ্রীশিবপুর ইউনিয়নে সংযোগ হয়েছে।

জনগুরুত্বপূর্ণ সড়কটি এখন প্রায় ৩ কিলোমিটার আর সড়ক নেই, যেন একটি খালে পরিনত হয়েছে। সড়কটিতে গেলে দেখা যায় শুধু আছে কেবল বিস্তৃর্ণ খাল আর বিল। এমন জনপদে কোমলমতী শিশুদের স্কুলে আসা যাওয়া চলে জোয়ার ভাটার ওপর নির্ভর করে। শিক্ষার্থীরা স্কুলে আসে খালে ও বিলে ভাটা আসলে। জোয়ারের সময় সড়কে কোমর পর্যন্ত পানিতে তলিয়ে যায়। জোয়ারের সময় স্কুলে আসা যাওয়ার বাহন একমাত্র নৌকা। এমন ঝুঁকি নিয়ে উপজেলা শহরের পার্শ্ববর্তী ইউনিয়ন ভরপাশা অঞ্চলের প্রায় ১০ টি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিশুদের লেখা পড়া চলছে। জোয়ার ভাটার এ জীবনে আছে জীবন হারানোর ভয়। তবুও ঝুঁকি নিয়েই রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে হাজার হাজার মানুষ চলাচল করে আসছে। শিক্ষার্থীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সারাবছর স্কুলে আসা-যাওয়া করে।

সরেজমিনে দেখা যায়, এই সড়কে বর্ষাকালের চিত্র চারিদিকে পানি আর পানি। বর্ষার পানি ও খাল বিলের জোয়ার ভাটার পানির স্রোতে সড়ক ভেঙ্গে  ভুমি হয়ে গেছে। ৩০ বছরেও এই মাটির তৈরি সড়কে সংস্কারের কাজ না হওয়ায় বড় বড় গর্ত হয়ে ডাঙ্গায় পরিনত হয়েছে। শুকনো মৌসুমেও এই সড়কে কাদামাটি দিয়ে চলাচল করে ইউনিয়নে প্রায় ১০ হাজার মানুষ।

২৭ অক্টোবর জনকন্ঠ সংবাদ মাধ্যম ওই সড়কে গেলে  দেখতে পায় কোমর পর্যন্ত পানি পার হয়ে এক গৃহবধুর দুটি পানির কলসি নিয়ে ছুটছেন গভীর নলকুপ থেকে পানি সংগ্রহে। 

গৃহবধুরা জানান, চারিদিকে পানি কিন্তু খাবার পানির সংকট। প্রতিদিন মোড়া এই সড়ক দিয়ে এভাবেই পানি এনে থাকি। ছেলে মেয়েরা স্কুলে যেতে পারছেনা। কেউ অসুস্থ হলে তাকে চিকিৎসা দিতে হাসপাতালে নিতে নিতে পথেই অনেক সময় মারা যায়। 

জনপ্রতিনিধিরা ভোটের সময় এসে বলেন ভোট শেষেই রাস্তা নির্মাণ করে দিবো। কিন্তু যুগের পর যুগ পার হলেও কেউ খবর নিচ্ছে না।

জামিনা মোহাম্মাদ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রী সুইটি জানান, আমাদের এলাকার ছেলে মেয়েরা নিয়মিত স্কুলে যেতে পারছে না। লেখা পড়া থেকে পিছিয়ে পরছে। এ পরিস্থিতিতে অনেক শিশু বর্ষায় স্কুলে যেতে চায় না বা তাদের অভিভাবকরাও তাদের পাঠাতে চায় না। সড়কটির কারণে এলাকার হাজার হাজার মানুষ চরম দুর্ভোগে।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আশ্রাফুজ্জামান খান খোকন  জানান, বর্তমান সরকারের আমলে ব্যাপক উন্নয়নমূলক কাজ হয়েছে ও চলমান রয়েছে। পুরো ইউনিয়নকে সড়ক যোগাযোগের আওতায় আনার পরিকল্পনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে তিনি কাজ করছেন। এই সড়কটির বিষয়ে এলজিইডি অফিসে কথা বলেছি। একটি প্রকল্পে দেয়া হয়েছে তবে এখন পর্যন্তু কোনো অগ্রগতি নেই।

উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী আবুল খায়ের মিয়া জানান, ভরপাশা ইউনিয়নের কৃষ্ণকাঠি সড়কটির আইডি নম্বর ৫০৬০৭৫৪১০ একটি প্রকল্পের মাধ্যমে সড়কটি নির্মাণ করার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

টিএস

×