বাঁশখালীতে চিংড়ি ঘেরসহ ঘরবাড়ির ব্যাপক ক্ষতি
চট্রগ্রামের বাঁশখালীর উপকূলীয় এলাকায় ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে ৫ টি ইউনিয়নের চিংড়ি ঘেঁর, ঘরবাড়ি ও বেড়িবাঁধের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
সোমবার (২৪ অক্টোবর) রাত ৯টার পর থেকে জোয়ারের প্রভাবে বাড়তে থাকে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা। ফলে বাঁশখালীর উপকূলীয় এলাকার বেড়িবাঁধ উপচে জোয়ারের পানি লোকালয়ে প্রবেশ করতে শুরু করে। ফলে মানুষের ঘরবাড়ি, চিংড়ি ঘের ও ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতবিক্ষত হয়ে গেছে বেড়িবাঁধ। মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত উপকুলের প্রায় ২০ হাজার মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে বলে জানিয়েছেন বিভিন্ন ইউপির চেয়ারম্যানগন।
জোয়ারের পানিতে কুতুবদিয়া চ্যানেলের তীরবর্তী বেড়িবাঁধ ভেঙে উপকূলীয় এলাকার ছনুয়া, খানখানাবাদের রায়ছটা, কদমরসুল ও প্রেমাশিয়া, বাহারছড়া রত্নপুর, সরল ইউনিয়নের মিনজীরিতলা, কাথরিয়ার বাগমারা, গন্ডামারা ইউনিয়নের খাটখালী, পশ্চিম বড়ঘোনা ও পূর্ব বড়ঘোনা গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। অপরদিকে জলকদর খালের বেড়িবাঁধ ভেঙে পুঁইছড়ি ইউনিয়নের ফুটখালী, আরবশাহ্ ঘোনা, সরলিয়া ঘোনা, ছনুয়া ইউনিয়নের মধুখালী, আবাখালী ও খুদুকখালী, চাম্বল ইউনিয়নের ডেপুটিঘোনা, বাংলা বাজার, শীলকূপ ইউনিয়নের পশ্চিম মনকিচর, শেখেরখীল ইউনিয়নের লালজীবন গ্রামে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করে। নিম্নাঞ্চলের প্রায় ৭০ ভাগ বসতঘরে জোয়ারের পানি প্রবেশ করেছে। তলিয়ে গেছে মাছের ঘের, পুকুর ও রাস্তাঘাট। অনেক এলাকা পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ধানি জমিসহ ফসলি বিভিন্ন জমি পানির নিচে তলিয়ে গেছে।
গতকাল বৃষ্টি ও ধমকা হাওয়া বাতাসে বিভিন্ন এলাকায় গাছ পড়ে বিচ্ছিন্ন আছে বিদ্যুৎ সংযোগ। স্বাভাবিকের চেয়ে ৩-৪ ফুট পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় তলিয়ে গেছে ফসলি জমি। উপজেলার নিম্নাঞ্চলে সবজি ক্ষেত ও ধানি জমি পানিতে ডুবে গেছে। এতে ক্ষেত নষ্ট হয়ে কৃষকদের অপূরণীয় ক্ষতির আশংকা করা হচ্ছে। এদিকে প্রায় ২৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হলেও টেকসই বেড়িবাঁধ এখনো অধরাই থেকে গেল। বাঁশখালীর প্রায় ২৬ কিলোমিটার সমুদ্র সৈকত এলাকার বৃহত্তম অংশ জুড়ে এখনো অরক্ষিত বেড়িবাঁধ।
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং এর সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে উপকূলীয় এলাকা ও আশ্রয়কেন্দ্র সরেজমিনে পরিদর্শন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাঈদুজ্জামান চৌধুরী, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) খোন্দকার মাহমুদুল হাসান, বাঁশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. কামাল উদ্দিন।
বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাঈদুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘রাতে উপকূলীয় এলাকার বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্র পরিদর্শন করেছি। ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে বেড়িবাঁধ উপচে বিস্তৃত এলাকা প্লাবিত হলেও মানুষজন আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেওয়ায় এখন পর্যন্ত প্রাণহানির কোন সংবাদ পাওয়া যায়নি। তিনি আরও বলেন, ‘উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করে ক্ষতিগ্রস্তদের সহযোগিতা করা হবে।
টিএস