চাঁপাইনবাবগঞ্জ রেল স্টেশন
উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জে কয়েক ধাপে রেলওয়ের যৎসামান্য উন্নয়ন হলেও কাক্ষিত সেবা থেকে এখনো বঞ্চিত জেলাবাসী। সুশীল সমাজ বলছেন, রেল কর্তৃপক্ষের অনীহা চাঁপাইনবাবগঞ্জে রেলওয়ের উন্নয়নে। যেন উন্নয়নের উল্টো গতিতে চলছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ রেলওয়ে। এমতবস্থায় আমের রাজধানীর প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদৃষ্টি কামনা করছেন চাঁপাাইনবাবগঞ্জবাসী।
জানা গেছে. দেশে করোনার প্রকোপ বাড়ার পরপরই ২০২০ সালের ১৫ মার্চ থেকে আন্তঃনগর ট্রেন বনলতা, পদ্মা ও ধুমকেতুর সংযোগ হিসেবে কমিউটারসহ অন্যান্য ৬ জোড়া ট্রেন বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তীতে করোনার প্রকোপ কমে আসলে ২০২১ সালের ১৭ জুলাই থেকে আন্তঃনগর ট্রেন বনলতাসহ দুইটি ট্রেন চালু হয়।
বাকিগুলো নানান অজুহাতে আর চালু হয়নি। দীর্ঘদিন ধরে ট্রেনগুলো চালু না থাকায় রেল সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এ অঞ্চলসহ আশপাশের অঞ্চলের মানুষ।
এসব ট্রেন চালুসহ স্টেশনের আধুনিকায়নের দাবিতে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, নাগরিক কমিটি মানববন্ধনসহ নানান কর্মসূচি পালন করলেও কোন নজর দেয়নি রেল কর্তৃপক্ষ।
জনশ্রুতি রয়েছে, ২০১৯ সালে ১৮ জুলাই আন্তঃনগর ট্রেন বনলতা ট্রেনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে চাঁপাইনবাবগঞ্জ রেলষ্টেশনে রেলওয়ের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বসার জায়গা না পাওয়ায় তারা ক্ষুব্ধ হন এবং এ অঞ্চলের রেলওয়ের উন্নয়নের কাজে আর আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। যার প্রতিফলন পাচ্ছে এ অঞ্চলের মানুষ।
সরকার যোগাযোগ ব্যবস্থা দোড়গোড়ায় নিয়ে যেতে এবং সোনামসজিদ পর্যন্ত রেললাইন সম্প্রসারণ, আধুনিক মানসম্পন্ন স্টেশন নির্মাণে সব ফাইল বন্দি হয়ে পড়েছে। এছাড়া এ রেলস্টেশনে পুরাতন প্লাটফর্মটি পুনঃনির্মিত হলেও যাত্রী ছাউনি বর্ধিত করা হয়নি। এতে করে যাত্রীদের প্রতিনিয়তই অসুবিধায় পড়তে হয়।
স্টেশনটির গুরুত্ব বেড়ে যাওয়ায় ২য় প্লাটফর্ম নির্মাণসহ নতুন রেললাইন স্থাপন করা হয়। তবে প্লাটফর্মটিতে ছাউনি নির্মিত হয়নি। সুশীল সমাজ মনে করছেন, এ রেলষ্টেশনটিতে সীমানা প্রাচীর দেয়া প্রয়োজন। রেলস্টেশনটি অরক্ষিত থাকায় সময় সময় অবাঞ্ছিত ঘটনা ঘটেও থাকে। এ স্টেশনটিকে সুরক্ষিত করার জন্য রেলমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
আন্তঃনগর ট্রেন বনলতা, পদ্মা ও ধুমকেতুর সংযোগ হিসেবে কমিউটারসহ অন্যান্য ট্রেন বন্ধের বিষয়ে জানতে চাইলে চাঁপাইনবাবগঞ্জ রেল স্টেশন মাস্টার শহিদুল ইসলাম বলেন, কী কারণে ট্রেনগুলো বন্ধ রয়েছে জানা নেই। আর কবে নাগাদ চালু হবে এ বিষয়ে কোনো তথ্যও আমাদের কাছে নেই।
নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব মনিরুজ্জামান মনির বলেন, সংশ্লিষ্ট দপ্তরে বন্ধ ট্রেন চালুসহ সমস্যা নিরসনে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। কর্তৃপক্ষ কোন উদ্যোগ গ্রহণ করেনি বরং তাদের অনীহাটাই বেশি। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক এমপি আব্দুল ওদুদ বলেন, রেললাইন সংস্কারের পাশাপাশি আধুনিকায়নের ষ্টেশন নির্মাণে উদ্যোগ গ্রহণ করে রেল কর্তৃপক্ষ। এ ষ্টেশনে নতুন রেললাইন স্থাপনের পাশাপাশি আরেকটি নতুন প্লাটফর্ম নির্মাণ করা হলেও যাত্রী ছাউনি নির্মাণ করা হয়নি। এ বিষয়ে রেলমন্ত্রীকে অবহিত করা হয়েছে।
অপরদিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য ডা. সামিল উদ্দিন আহমেদ শিমুল বলেন, সোনামসজিদ পর্যন্ত রেললাইন সম্প্রসারণের প্রাথমিক পর্যায়ের কাজ হয়ে গেছে। রেলের সামগ্রিক বিষয় নিয়ে রেলমন্ত্রীকে অবহিত করা হয়েছে। তিনি আন্তরিকতার সঙ্গে কথাগুলো শুনেছেন এবং কাজগুলো করবেন বলে আশ্বাস দেন।
এসআর
