হবিগঞ্জ সদর উপজেলার সীমান্তবর্তী বাহুবল উপজেলায় অবস্থিত লস্করপুর রেলওয়ে স্টেশন। ১৮৯৬ সালে এ স্টেশন নির্মাণ করা হয়। প্রায় ১২৮ বছরের পুরনো এ স্টেশনটি ২০০৮ সালে বন্ধ হয়ে যায়। স্টেশনটি দ্রুত চালুর জন্য দাবি উঠেছে।
পরিত্যক্ত এ স্টেশনটিতে মাদকসেবীদের আনাগোনা দেখা দেয়। স্টাফদের কোয়াটারে বসবাস করছে ছিন্নমূল পরিবারের লোকজন। রেলওয়ে স্টেশনের আশপাশে সরকারি জমি দখল করে রেখেছে একশ্রেণির প্রভাবশালী লোকেরা। তারা এসব জমির সুবিধা ভোগ করছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, স্টেশন ভবনটিতে নেই কোন আসবাবপত্র। পুরনো কিছু কাগজপত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে। দরজা ও জানালা ভেঙে পড়েছে। রাখা হয়েছে জ্বালানির কাঠ (লাকড়ি) ও পাতা। ভবনের স্থানে স্থানে ফাটল। ছাদ ও দেয়াল থেকে প্লাস্টার খসে পড়ছে।
এ অবস্থায় যে কোন সময় ভেঙে পড়তে পারে ভবনটি। স্টেশনকে ঘিরে ঝোপঝাড়ে পরিণত হয়েছে। একই অবস্থা বাকি দুইটি ভবনেরও। যাত্রী বসার পাকা দুইটি আসন কোনভাবে ঠিকে আছে। স্টেশন থেকে যাতায়াতের রাস্তাটির বেহাল অবস্থা।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, ঢাকা-সিলেট-চট্টগ্রাম রেলপথের এ স্টেশনের এক সময় বিরাট সুনাম ছিল। ছিল যাত্রীদের পদচারণা। বিকেলে কাঁচামালের বাজার বসত। ছিল কিছু দোকানপাটও ছিল। বন্ধ থাকায় এ স্টেশনে কোন ট্রেনের স্টপেজ নেই। আসেন না যাত্রী।
বসবাসকারীরা জানান, তাদের জমিজমা না থাকায় পরিত্যক্ত কোয়াটারে বসবাস করছেন। তারা এখন পর্যন্ত সরকারি ঘর পাননি। ঘর পেলে এখান থেকে চলে যাবেন।
আলাপকালে স্থানীয় বাসিন্দা সিরাজ মিয়া, মাহফুজ মিয়া, মঞ্জু মিয়া জানান, এ স্টেশনের ঐতিহ্য ছিল। স্টেশনটির নাম অনুসারে একটি ইউনিয়ন ও গ্রাম রয়েছে। বন্ধ থাকায় কোন ধরণের ট্রেন থামে না। স্টেশনটি চালু করা হলে আবার ফিরবে প্রাণচাঞ্চল্য। আসবে লোকজন। বসবে দোকানপাট ও কাঁচামালের বাজার।
রুবেল মিয়া, কাজল মিয়া, মাসুক মিয়া জানান, প্রাচীন এ স্টেশনটির ঐহিত্য রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে স্টেশনটি বন্ধ আছে। এটি দ্রুত চালু করা হলে স্থানীয় যাত্রীদের ট্রেন যাতায়াতে বিরাট সুবিধা হবে।
হবিগঞ্জ জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য আব্দুল্লাহ সরদার বলেন, দেশজুড়ে উন্নয়ন চলমান আছে। এখানে স্টেশনটি বন্ধ না রেখে দ্রুত চালু করা হোক।
শায়েস্তাগঞ্জ রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই বাদশা আলম বলেন, লস্করপুর স্টেশন বন্ধ আছে। মাঝে মধ্যে সেখানে পরিদর্শন করা হয়। স্টেশনে মাদকসহ কোন প্রকারের অপরাধ সংঘটিত হওয়ার অভিযোগ পেলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ব্যাপারে কোন প্রকারের ছাড় দেওয়া হবে না।
শায়েস্তাগঞ্জ রেলওয়ে জংশনের স্টেশন মাস্টার মো. আবুল খায়ের চৌধুরী বলেন, লস্করপুর স্টেশনটি দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকায় কোন ট্রেনের স্টপেজ নেই। এটি চালু হবে কিনা, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বলতে পারবেন।
এসআর