ঘরের অর্ধাংশ জুড়ে দেওয়াল নির্মাণ করা হয়েছে। ছবি: জনকণ্ঠ
টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর পৌরসভায় সরকারের আশ্রায়ণ প্রকল্পের ঘর পেয়েও সেখানে বসবাস করতে পারছেন না স্থানীয় রতন শেখ নামে এক ব্যক্তি। প্রতিবেশী জমির মালিকরা সরকারের দেওয়া ঘরের অর্ধাংশ জুড়ে দেওয়াল নির্মাণ করায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, ভূঞাপুর পৌরসভার রতন শেখ নাবালক থাকাবস্থায় তার বাবা জুলহাস শেখ মৃত্যুবরণ করেন। তার মা খুকি বেওয়া ভিক্ষাবৃত্তি করে টাকা জমিয়ে পশ্চিম ভূঞাপুর মৌজার বিআরএস দাগের ৩.৫০ শতাংশের কাছে ২ শতাংশ ভূমি ক্রয় করেন। সরকার আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় রতন শেখকে একটি কাঁচাপাকা ঘর দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। সে সময় ওই ২ শতাংশ ভূমি খুকি বেওয়া তার ছেলে রতন শেখকে হেবা দলিলমূলে রেজিস্ট্রি করে দেন। পরে ওই ভূমিতে সরকার আশ্রায়ণ প্রকল্পের একটি কাঁচাপাকা ঘর নির্মাণ করে রতন শেখকে হস্তান্তর করে।
ওই জমির উত্তর পাশের প্রতিবেশী বাবু তালুকদার তার ২৪ শতাংশ ভূমি পরিমাপ করে দেওয়াল নির্মাণ করেন। প্রতিবেশীর দেওয়ালটি রতন শেখকে দেওয়া আশ্রায়ণ প্রকল্পের ঘরের অর্ধাংশ জুড়ে দখল হয়ে যায়। এতে সরকারের দেওয়া ওই ঘরে বসবাস করা রতন শেখ ও তার মায়ের পক্ষে অসম্ভব হয়ে পড়েছে। বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার গ্রাম্য সালিশ হলেও কোনো সুরাহা হয়নি।
স্থানীয় তোফাজ্জল তরফদার, খোকা শেখ, আছমা বেগমসহ অনেকেই জানান, প্রতিবেশী একটি ধনাঢ্য পরিবারের কারণে একটি ভিক্ষুক পরিবার আশ্রায়ণ প্রকল্পের ঘর পেয়েও বসবাস করতে পারছে না। এটা অত্যন্ত লজ্জার বিষয়, মাতাব্বরদের নিয়ে এলাকায় সালিশ হলেও কোনো সমাধান হয়নি।
ভুক্তভোগী রতন শেখ বলেন, আমার মা বাড়ি বাড়ি ভিক্ষা করে টাকা জমিয়ে জমিটুকু কিনেছিলেন। সরকার তাকে আশ্রায়ণ প্রকল্পের ঘর দিলেও তিনি ব্যবহার করতে পারছেন না। তিনি পৌরসভাসহ স্থানীয় মাতাব্বরদের কাছে বারবার ঘুরেও কোনো সুরাহা পাননি।
জমির চারপাশে দেওয়াল নির্মাণকারী প্রতিবেশী বাবু তালুকদার বলেন, রতন শেখ একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী হলেও তার মা খুকি বেওয়া একজন ভিক্ষুক। তিনি সরকারের দেওয়া আশ্রায়ণ প্রকল্পের ঘরের অর্ধাংশ জুড়ে দেওয়াল নির্মাণ করেননি। পরিমাপ করায় জমির সীমানা রতনের ঘরের অর্ধাংশ পর্যন্ত গিয়েছে। পরিমাপে যদি রতন শেখ জায়গা পান, তাহলে অবশ্যই তিনি নিজ খরচে দেওয়াল ভেঙে সরিয়ে নিবেন।
ভূঞাপুর পৌরসভার কাউন্সিলর শাহিনুজ্জামান শাহীন বলেন, রতন শেখের আশ্রায়ণ প্রকল্পে পাওয়া ঘরের অর্ধাংশ জুড়ে প্রতিবেশীর দেওয়াল নির্মাণের বিষয়ে কয়েকবার ঘরোয়া বৈঠক হয়েছে। জমির পরিমাপগত ত্রুটির কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। পৌরসভার সার্ভেয়ারের মাধ্যমে পুন:পরিমাপ করে বিষয়টির সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে ভূঞাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইশরাত জাহান জানান, বিষয়টি সম্পর্কে তিনি অবগত নন। ভুক্তভোগী যদি প্রতিকার চেয়ে আবেদন করেন, তাহলে তিনি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
এমএইচ