ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১

খুলনায় ১০২৫টি দুর্গা মন্দিরে পূজা 

দূর্গাপূজার আলোর ঝলকানিতে বর্ণিল সাজে খুলনা নগরী

প্রবীর বিশ্বাস, খুলনা অফিস

প্রকাশিত: ১৭:১০, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২২

দূর্গাপূজার আলোর ঝলকানিতে বর্ণিল সাজে খুলনা নগরী

লাইটে বর্ণিল সাজে সাজানো

মহালয়ার মাধ্যমে দেবীকে আহ্বান জানানো হয়েছে। এরপরের ক্ষণ গণনাও শেষ। মাত্র একদিন পর সায়ংকালের দেবীর আমন্ত্রণ, অধিবাস ও অকাল বোধন। আর শনিবার ষষ্ঠীপূজার মধ্যদিয়েই শুরু হচ্ছে হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা। 

এ উপলক্ষে চিরচেনা খুলনাকে মনে হচ্ছে এক অচেনা নগরী। আলোর ঝলকানিতে ঝলমল করছে খুলনা শহর। শুধু শহরই নয়, এ ধরনের আয়োজন হয়েছে খুলনার এক হাজার ২৫টি পূজা মন্দিরে। এছাড়া, পূজায় শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখতে প্রশাসন নিয়েছে নানা উদ্যোগ।

যেদিক দিয়েই সন্ধ্যার পর খুলনার ধর্মসভা মন্দিরের দিকে যাওয়া হবে সেদিক দিয়েই চোখে পড়বে বিভিন্ন আকৃতি ও রঙের বাতির সমাহার। দেখলে চোখ জুড়িয়ে যাবে। শুধু ধর্মসভাই নয়, নগরীর হাসপাতাল পাড়া, কালীবাড়ী, ডেল্টা ঘাট, সোনা পর্টি, সিমেট্রি রোড, দোলখোলা, রপসা শ্মশানঘাট, শীববাড়ী, বয়রা, টুটপাড়া গাছতলা, খালিশপুর, দৌলতপুরসহ সমস্ত মন্দির সংলগ্ন এলাকায় সাজ সাজ রব। 

এলইডি পার্কার, এলইডি সীমার, স্পর্ক, বন্ধু লেজার, সিঙ্গেল লেজার, ফুল লেজার, ডিসকো লেজার ও ডিজিটাল গেটসহ নানা আকৃতির গাছকে লাইটে বর্ণিল সাজে সাজানো হয়েছে।

খুলনা জেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদের তথ্য মতে, এ বছর নয় উপজেলায় ৮৯৫টি ও মহানগরের আট থানায় ১৩০টি সব মিলিয়ে এক হাজার ২৫টি মন্দিরে পূজা অনুষ্ঠিত হবে। মাহানগর পূজা উদ্যাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রশান্ত কুমার কুন্ডু জানান, সিটির ১৩০টি পূজা মন্দিরের মধ্যে সদর থানায় ২৮টি, সোনাডাঙ্গায় ১১টি, খালিশপুরে ১০টি, দৌলতপুরে ১৯টি, খানজাহান আলীতে ৬টি, হরিণটানায় ৫টি, লবণচরায় ৯টি ও আড়ংঘাটা থানায় ৪২টি। 

অপরদিকে জেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রবীন্দ্রনাথ দত্ত জানান, নয় উপজেলার ৮৯৫টি মন্দিরের মধ্যে বটিয়াঘাটায় উপজেলায় ১১১টি, ডুমুরিয়ায় ২০৬টি, রূপসায় ৭৬টি, দিঘলিয়ায় ৬০টি, কয়রায় ৫৬টি, দাকোপে ৮৫টি, পাইকগাছায় ১৫৪টি, ফুলতলায় ৩৪টি, তেরখাদা উপজেলায় ১০৯টি।

জেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদের সাভাপতি কৃষ্ণপদ দাস বলেন, এবারের পূজা নির্বিঘ্ন করতে ইতোমধ্যে নগর পুলিশ কমিশনার, জেলা পুলিশ সুপার ও জেলা প্রশাসকের সঙ্গে পূজা মন্ডপে শান্তি শৃঙ্খলার বিষয়ে মত বিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

এমনকি থানা ভিত্তিকও প্রশাসনের সঙ্গে নেতাদের বৈঠক সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়া প্রতিটি মন্দিরে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় স্বেচ্ছাসেবক দলও থাকবে। প্রায় সব মন্দিরের বসানো হয়েছে সিসি ক্যামেরাও। 

মহানগর পূজা উদ্যাপন পরিষদের সাভাপতি শ্যামল হালদার বলেন, এবার পূজা উপলক্ষে জেলা প্রশাসন, হিন্দু কল্যাণ ট্রাস্ট, সিটি কর্পোরেশন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছ থেকে অনুদান পাওয়া গেছে। অনেক মন্দিরে লাইটের কাজ প্রায় শেষ। প্যান্ডেল ও তোরণের কাজও সমাপ্তির পথে। 

কোন কোন মন্ডপে দেবী দুর্গাকে প্রতিষ্ঠত করা হয়েছে। তিনি বলেন, দুর্গাপূজা এখন সার্বজনীন। তাই প্রতি বছরের মতো এবারও সুন্দর, শান্তিপূর্ণ উৎসব মুখর পরিবেশে দুর্গোৎসব উদযাপিত হবে এবং সকল ধর্মের মানুষ এই উৎসব উপভোগ করবে।

পুলিশ সুপার মো. মাহাবুব হাসান বলেন, জেলার সব মন্দিরগুলোতে পুলিশের পাশাপাশি আনসার সদস্যরা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় দায়িত্ব পালন করবে। এছাড়া পূজা আয়োজনকারী ও দর্শনার্থীদের নিরাপত্তায় থাকবে মোবাইল পেট্রোল ও মোটরসাইকেল পেট্রোল। নারী পুলিশের পাশাপাশি থাকবে মেটাল ডিটেক্টর।
 

এসআর

সম্পর্কিত বিষয়:

×