রূপসা মহাশ্মশান কালী মন্দিরে আগত ভক্তরা
মহালয়ার মধ্য দিয়ে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বড় উৎসব দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে। খবর স্টাফ রিপোর্টার ও নিজস্ব সংবাদদাতাদের।
খুলনা ॥ নানা আয়োজনে খুলনায় মহালয়া উদ্যাপিত হয়েছে। আয়োজনের মধ্যে ছিল তর্পণ, চন্ডিপাঠ, দেবীর আহ্বান সঙ্গীত, আলোচনা সভা, ধর্মীয় নৃত্য ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। রবিবার সকাল ৮টায় নগরীর রূপসা শ্মশান মন্দিরে চন্ডিপাঠের মধ্য দিয়ে শুরু হয় আনুষ্ঠানিকতা।
এরপর রূপসা মহাশ্মশান ও শ্মশান কালীমন্দির কমিটির সভাপতি বিজয় কুমার ঘোষের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন খুলনার ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনার ইন্দ্রজিৎ সাগর। কমিটির সাধারণ সম্পাদক রতন কুমার নাথের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন, শ্রী শ্রী সত্যনারায়ণ মন্দিরের ট্রাস্টি গোপী কিষাণ মুন্ধড়া, নগর পূজা পরিষদের সিনিয়ির সহ-সভাপতি অরবিন্দ সাহা, সহ-সভাপতি অধ্যাপক তারক চাঁদ ঢালি, সাধারণ সম্পাদক প্রশান্ত কুমার কু-ু, সহ-সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ দে মিঠু, প্রচার সম্পাদক বিমল সাহা, শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ সেবাশ্রমের সভাপতি স্বামী ধর্মানন্দাজী মহারাজ প্রমুখ।
বরিশাল ॥ সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে মহালয়ার মধ্য দিয়ে। রবিবার ভোর ছয়টায় নগরীর স্ব-রোডের রাধা গোবিন্দ নিবাস মন্দিরের সামনের সড়কে অগ্রগামী যুব সংঘের আয়োজনে মহালয়ার অনুষ্ঠান হয়। প্রদীপ প্রজ্বালন ও উলুধ্বনির মধ্যদিয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করা হয়। বিশ্বনাথ রায়ের চন্ডিপাঠের সঙ্গে আগমনী সঙ্গীত পরিবেশন করেন কমল ঘোষসহ অন্য শিল্পীরা। এরপর নৃত্যশিল্পীদের পরিবেশনায় দলীয় ও একক নৃত্য পরিবেশন করে পায়েল সরকার, পূজা মালাকার ও পূজা সেনগুপ্তের দল। পাশাপাশি সাংস্কৃতিক সংগঠন সুদীপ্ত ও চন্দ্রিমার শিল্পীদের পরিবেশনায় দলীয় সঙ্গীত পরিবেশন করা হয়। অনুষ্ঠানে বিশেষ আকর্ষণ গীতি আলেখ্য ‘রূপে রূপান্তরে মহামায়া’ পরিবেশন করে চিত্রাঙ্গদা বরগুনা নৃত্য গ্রুপ। এ বছর জেলায় ছয়শ’টি ও মহানগরে ৪৫টি মন্ডপে দুর্গাপূজার আয়োজন করা হয়েছে। আগামী ১ অক্টোবর ষষ্ঠী পূজার মাধ্যমে দুর্গাপূজার মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। দেবীদুর্গা এবার গজে করে পৃথিবীতে আসবেন এবং নৌকায় করে কৈলাসে ফিরবেন।
শেরপুর ॥ রবিবার সকাল ৭টায় শেরপুর শহরের গোপাল জিউর মন্দির প্রাঙ্গণে মহালয়া আগমনী গীতিনক্সা ‘এসো মা এ ধরায়’ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শুভ মহালয়া অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্য দিয়ে শুরু হলো দুর্গাপূজার ক্ষণগণনা। পঞ্জিকা মতে, আগামী ১ অক্টোবর থেকে মূল পূজা শুরু হয়ে ৫ অক্টোবর দেবীর বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এবারের শারদীয় উৎসব।
টাঙ্গাইল ॥ দুর্গাপূজা উৎসব ঘিরে প্রতিমা তৈরিতে শেষ মুহূর্তে ব্যস্ত সময় পার করছেন টাঙ্গাইলের শিল্পীরা। জেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদ সূত্রে জানা যায়, এ বছর টাঙ্গাইলের ১২ উপজেলায় এক হাজার ২৮৪ পূজামন্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। সদর উপজেলার পূজামন্ডপে ২০৭টি, বাসাইলে ৬৫, সখিপুরে ৫৩, মির্জাপুরে ২৫৬, নাগরপুরে ১৩২, দেলদুয়ারে ১২৭টি, গোপালপুরে ৫০টি, ভূঞাপুরে ৪০, কালিহাতীতে ১৯০, ঘাটাইলে ৮১, মধুপুরে ৫০ ও ধনবাড়ীতে ৩৩ পূজামন্ডপে দূর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে।
মৌলভীবাজার ॥ পূজা উপলক্ষে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সম্প্রীতি কমিটি গঠনসহ নেয়া হয়েছে অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা। হিন্দু সম্প্রদায়ের বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা সামনে রেখে জেলার পূজা মন্ডপগুলোতে প্রতিমা তৈরির শেষ মুহূর্তের সাজ-সজ্জার কাজ এগিয়ে চলছে। সর্ববৃহৎ এই পূজা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য প্রস্তুতি চলছে প্রতিটি মন্ডপে। পূজামন্ডপগুলোতে একেরপর এক প্রতিমা তৈরির পাশাপাশি সাজিয়ে তুলতে প্রতিমা শিল্পীরা দিন রাত কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়া জানান, এবার ১০০৭টি মন্ডপ থাকায় জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে শারদীয় দুর্গাপূজাকে ঘিরে সবকটি উপজেলায় নেয়া হয়েছে সকল ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
ফেনী ॥ ১৪৩ পূজামন্ডপে অনুষ্ঠিত হচ্ছে শারদীয় দুর্গোৎসব। তাই হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মাঝে দেখা দিয়েছে উৎসাহ উদ্দীপনা। চলছে প্রতিমা তৈরি ও রংতুলির কাজ। ১ অক্টোবর ষষ্ঠীপূজার মধ্য দিয়ে শুরু হয়ে ৫ অক্টোবর বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শারদীয় উৎসব সম্পন্ন হবে। তাই দেবী দুর্গাকে সাজাতে জেলার মন্ডপগুলোতে নিরলস পরিশ্রম করছেন প্রতিমা শিল্পীরা।
দাউদকান্দি ॥ উপজেলায় ৪৭টি মন্ডপে দুর্গাপূজার আয়োজন করা হয়েছে বলে জানান উপজেলা হিন্দু- বৌদ্ধ-খ্রীস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অমল আচার্য্য। এদিকে বিগত বছরের তুলনায় এ বছর ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়ায় বেশ হিমশিম খেতে হচ্ছে। ব্যয় বাড়লেও থেমে নেই রকমারি আলোকসজ্জার। বর্ণালি করে সাজানো হচ্ছে পূজা মন্ডপ। সব মিলে উৎসবের রংয়ে সাজছে উপজেলার প্রতিটি মন্ডপ।
ঝালকাঠি ॥ জেলার ৪ উপজেলায় ১৭৩ টি পূজামন্ডপে এ বছর শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিমা তৈরি করার কাজ প্রায় সম্পন্ন, প্রস্তুতি চলছে প্রতিমার গায়ে রংতুলি আঁচড় দেয়া। মন্ডপের বাইরে সাজসজ্জা কাজে ব্যস্ত চারু ও কারুশিল্পীরা। হিন্দু সম্প্রদায় সর্ববৃহৎ উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে মন্দিরে মন্দিরে প্রতিমা তৈরির শেষ সময়ের কাজ নিয়ে ব্যস্ত শিল্পীরা। তারা তাদের সহকর্মীদের নিয়ে একটির পর একটি মন্দিরে ছুটছে।
মাগুরা ॥ ৭৩৫ মন্ডপে দুর্গাপূজার যাবতীয় প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে। নির্মাণ করা হয়েছে প্রতিমা। সাজসজ্জার কাজ চলছে। হিন্দু সম্প্রদায়ের সব থেকে বড় উৎসব শারদীয়া দুর্গাপূজার যাবতীয় কাজ চলছে জোর কদমে। এখন শুধু অপেক্ষা। সদর উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদ সভাপতি সঞ্জিত কুমার বিশ্বাস জানান, অসাম্প্রদায়িক জেলা মাগুরায় এ বছর ৭৩৫টি পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।