সাজু বেগমের মানবেতর জীবন
সাজু বেগম। স্বামী মৃত সালাউদ্দিন। তার তিন সন্তান রয়েছে। স্বামীর মৃত্যুর পর সন্তানদের নিয়ে কোন-রকম খেয়ে না খেয়ে দিন কাটাচ্ছেন তিনি। জীবিকার তাগিদে অন্যের বাড়িতে গৃহপরিচারিকার কাজ করতে হয়। সন্তানদের করাচ্ছেন লেখাপড়া। বর্তমানে তিনি দৌলতখান উপজেলার চরখলিফা ইউনিয়নের কলাকোপা গ্রামে জরাজীর্ণ ঝুপড়ি ঘরে বসবাস করে আসছে। বিদ্যুৎ না থাকায় ওই ঘরে রাতের আধারে কুপির আলোতে সন্তানদের করাতে হয় লেখাপড়া। কুপির তেল জোগার করতে না পারলে আলো জ্বলেনা তাঁর ঘরে। এতে ব্যাহত হয় সন্তানদের লেখাপড়া।
আজ রবিবার হতদারিদ্র সাজু বেগম দৈনিক জনকণ্ঠকে বলেন, ১৪ বছর আগে ওই গ্রামের আবদুল মালেকের ছেলে সালাউদ্দিনের সাথে তাঁর পারবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে তাদের দাম্পত্য জীবন আর্থিকভাবে স্বচ্ছল না হলেও সুখের কমতি ছিলোনা। কিন্তু ছোট সন্তান সজীবের জন্মের পর তাঁর স্বামী সালাউদ্দিনের মরণব্যাধি ক্যান্সার শনাক্ত হয়। অর্থের অভাবে স্বামী সালাউদ্দিনকে উন্নত চিকিৎসা করাতে না পাড়ায় অকালে তার মৃত্যু হয়। এরপর থেকেই সাজু বেগমের জীবনে কালো মেঘ নেমে আসে। অন্যের বাড়িতে কাজ না পেলে সন্তানদের ভিক্ষাবৃত্তি করে খাওয়াতে হয়। তিন সন্তানকে লেখাপড়া করাতে হিমশিম খেতে হয় তার। বিদ্যুৎ না থাকায় কুপির তেল পুড়িয়ে গেলে রাতের অন্ধকারে থাকতে হয় সাজু বেগম ও তার সন্তানদের। বর্ষার মৌসুমে বৃষ্টির পানিতে সাজু বেগমের জরাজীর্ণ ঝুপড়ি ঘরে বৃষ্টির পানি পড়ে থাকে। রাত কাটাতে হয় নির্ঘুম। সন্তানদের নিয়ে থাকতে হয় আতংকে। সাজু বেগম অভিযোগ করে বলেন, সরকারিভাবে কোন সাহায্য-সহযোগিতা জোটেনা তার কপালে। তার নামে নেই বিধবা ভাতা। স্থানীয় জনপ্রতিনিধির কাছে কোন কিছু চাইতে গেলে মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে থাকেন। বর্তমানে সাজু বেগম ও তার সন্তানরা মানবেতর জীবন-যাপন করছে।
প্রতিবেশী রুবেল হোসেন জানান, স্বামীর মৃত্যুর পর সাজু বেগম ছোট তিনটি বাচ্চা নিয়ে অনাহারে-অর্ধহারে দিন কাটাচ্ছে। বিদ্যুতহীন জরাজীর্ণ ঘরে থাকে,যেখানে সামান্য বৃষ্টি হলে পানি পড়ে। তিনি স্থানীয় করিম ,মালেক ও মোরশেদ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং ভোলা-২ আসনের সংসদ সদস্য আলী আজম মুকুলের দৃষ্টি আকর্ষণ করে ওই অসহায় সাজু বেগমের পরিবাবকে মুজিবর্বষের একটি ঘর ও একটি বিধবা ভাতা করিয়ে দেয়ার দাবি জানান। এতে করে অসহায় পরিবারটি উপকৃত হবে।
দৌলতখান সমাজসেবা অফিসার পাপিয়া সুলতানা জানান, আর্থিক সহায়তার আবেদন করলে ওই অসহায় পরিবারকে বরাদ্দ সাপেক্ষে সুবিধার আওতায় আনা হবে।
টিএস