ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১

বিনামূল্যে চিকিৎসার বাতিঘর জহুরুন্নেছা-মতিন ক্লিনিক

মো. মামুন চৌধুরী, হবিগঞ্জ

প্রকাশিত: ১২:৫৩, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২২; আপডেট: ২০:১৯, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২২

বিনামূল্যে চিকিৎসার বাতিঘর জহুরুন্নেছা-মতিন ক্লিনিক

রোগীকে সেবা দিচ্ছেন ডা. সাবিনা ইয়াসমিন। ছবি: জনকণ্ঠ

পাশ দিয়ে বয়ে গেছে খোয়াই নদী। সামনে-পেছনে মরা নদী। চারদিকে সবুজ গাছপালা। শান্ত পরিবেশ। এমন স্থানটি হবিগঞ্জ জেলার বাহুবল উপজেলার কোর্টআন্দর গ্রাম। এ গ্রামের দেওয়ানবাড়িতে জহুরুন্নেছা-মতিন ক্লিনিক নামে স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র গড়ে উঠেছে। 

এখানে বিভিন্ন গ্রামের দরিদ্র লোকেরা এসে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করছেন। লোকজন এ ক্লিনিককে সুচিকিৎসার বাতিঘর বলেন। সপ্তাহে শুক্রবার ও শনিবার চিকিৎসা দেয়া হয়। প্রতি সপ্তাহে ১৩০ থেকে শুরু করে ১৪০ জন পর্যন্ত রোগী হয়।

২০২০ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি এ ক্লিনিকের যাত্রা শুরু হয়েছে। ২০২১ সালে ৬ হাজার ৩৪২ জন রোগীকে সেবা দেয় হয়। সর্বশেষ চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসের ১৭ তারিখ পর্যন্ত সাড়ে ৪ হাজার রোগী সেবা গ্রহণ করেছেন।

নাবিক ইউএসএ অর্থায়নে ও ডু বেটার ফর দি চিলড্রেন (ডিবিসি) বাস্তবায়নে নাবিক সেন্টার ফর হিউমিনিটি প্রকল্পের আওতায় এ ক্লিনিকে বিনামূল্যে সেবা প্রদান করা হচ্ছে।  ক্লিনিকটিতে নারী ও শিশু রোগীর সংখ্যা বেশি।  

জহুরুন্নেছা-মতিন ক্লিনিকএমবিবিএস ডা. সাবিনা ইয়াসমিন রোগীদের সেবা দেন। রোগীদের সেবা প্রদান থেকে শুরু করে ক্লিনিকের যাবতীয় তদারকি করেন ডিবিসি নির্বাহী পরিচালক ডা. মো. শফিকুল ইসলাম।

দেওয়ান বাড়ির বাসিন্দা ইউএসএ টিউলিইন ইউনিভার্সিটির প্রফেসর ড. দেওয়ান সৈয়দ আব্দুল মজিদ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে এ ক্লিনিক প্রতিষ্ঠা করেন তিনি।

প্রকল্প সমন্বয়কারী মো. ওয়াহিদুল ইসলামের মাধ্যমে ঢাকা থেকে ওষুধ নিয়ে আসেন ক্লিনিকের ম্যানেজার সৈয়দ মাহমুদুল হাসান। রোগীদের নাম লিপিবদ্ধ ও ওষুধ প্রদান করেন প্রকল্প সহকারী সৈয়দা ফাতেমা তুজ জোহরা এবং  সৈয়দা সালসাবিলা। দেওয়ান বাড়ির বাসিন্দা স্কুলের প্রধান শিক্ষক দেওয়ান সৈয়দ আব্দুল ওয়াদুদ ও প্রবাসী দেওয়ান সৈয়দ আব্দুল মোতাস্সির মঞ্জু সার্বক্ষণিক এ ক্লিনিকের খোঁজ খবর নিচ্ছেন।  

সরেজমিন গেলে রোগীরা জানান, গ্রামের সুচিকিৎসার বাতিঘর এ ক্লিনিক। তারা এখানে এসে সেবা পাচ্ছেন। এ সেবায় তারা বিরাটভাবে উপকৃত হচ্ছেন। এ সময় দেখা গেছে, রোগীরা একে একে ক্লিনিকে এসে বিনামূল্যে ওষুধ নিয়ে বাড়ি ফিরছেন। 

সেবা নিতে অপেক্ষা করছেন রোগীরা। ছবি: জনকণ্ঠদেওয়ান সৈয়দ আব্দুল ওয়াদুদ ও দেওয়ান সৈয়দ আব্দুল মোতাস্সির মঞ্জু বলেন, আমাদের ভাই মরহুম দেওয়ান সৈয়দ আব্দুল বাছিত মিরপুর ইউনিয়ন পরিষদের একাধিকবার চেয়ারম্যান ছিলেন। তিনি তৃণমূল মানুষের কল্যাণে কাজ করে গেছেন। মানুষ তাকে ভালবাসতেন। এক কথায় এ বাড়ির বাসিন্দাদের স্বপ্ন ছিল মানুষের পাশে থাকার। সেই থেকে আমাদেরকে সঙ্গে নিয়ে ড. দেওয়ান সৈয়দ আব্দুল মজিদ আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে প্রতিষ্ঠা করেন জহুরুন্নেছা-মতিন ক্লিনিক। এখানে বিনামূল্যে সেবা দেয়া হয়। সেবা পেয়ে তৃণমূল লোকেরা উপকৃত হচ্ছেন। 
   
ডা. সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, গ্রামে এসে এ ক্লিনিকে রোগী সেবা দিতে পেরে ভাল লাগছে। রোগীরা উপকৃত হচ্ছেন।  

ডিবিসি নির্বাহী পরিচালক ডা. মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, গ্রামে বসে রোগীরা চিকিৎসা সেবা পাচ্ছেন। এ কাজে নিজেকে যুক্ত করতে পেরে গর্বিত মনে হয়।

এসআর

×