নির্মাণকাজ শেষ হতে না হতেই খানাখন্দে ভরা সড়ক
৩শ’ ২১ কোটি টাকা ব্যয়ে যশোর-খুলনা মহাসড়কের ৩৮ কিলোমিটারের নির্মাণ কাজ শেষ হতে না হতে ৮ কিলোমিটার অংশ জুড়ে ফুলে ফেঁপে ওঠে। সেই থেকে সড়কের নির্মাণ কাজ নিয়ে বিভিন্ন মহল থেকে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। সড়কের নির্মাণ কাজের এ অনিয়ম নিয়ে তোলপাড় হয় গোটা সড়ক বিভাগে। ক্ষুব্ধ হন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরও। পরবর্তীতে সড়কের এ অনিয়ম ঢাকতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সড়কের ফুলে ফেঁপে ওঠা ৮ কিলোমিটার জুড়ে শুরু করে জোড়াতালির কাজ। কিন্তু জোড়াতালি দিয়েও অনিয়ম ঢাকতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তমা কনস্ট্রাকশন। গত চারদিনের বৃষ্টিতে সকল জোড়াতালি উঠে সড়কে বড় বড় খানা-খন্দের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে সড়কটিতে চলাচল রীতিমতো বিপজ্জনক হয়ে দেখা দিয়েছে। যদিও ইতোমধ্যে সড়কটির নির্মাণ ব্যয় ১৩ কোটি ৪০ লাখ টাকা বাড়িয়ে চলতি বছরের জুন মাস পর্যন্ত সময় বৃদ্ধি করা হয়েছে। পরামর্শকের সুপারিশের ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে সওজ।
জানা গেছে, ২০১৮ সালের মে মাসে এ সড়কের নির্মাণ কাজ শুরু হয় এবং ২০২০ সালের জুন মাসে কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কাজের শুরুতেই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, সড়ক উন্নয়নের এ কাজে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দরপত্রের কোন নিয়মনীতি মানেনি। তারা গোঁজামিল দিয়ে ইচ্ছেমতো কাজ চালিয়ে যায়। অভিযোগে বলা হয়েছে, ঠিকাদাররা সড়কের পুরনো পাকিস্তান আমলের লোনা ধরা ইট ও খোয়া তুলে সেটাই আবার ভেঙ্গে গর্তে ব্যবহার করেছেন। যা দরপত্রে বলা হয়নি। এ ছাড়া সড়কটি ৫ ফুট গর্ত করে ভিত তৈরির নির্দেশনা থাকলেও সেই নিয়মও মানেনি। সড়কে নতুন ইট বালি, খোয়া ব্যবহার না করে খুঁড়ে উঠানো মালামালই ফের ভরাট করা হয়েছে। তা ছাড়া ভৈরব নদ থেকে উত্তোলিত নি¤œমানের কাদাযুক্ত বালি সড়কে ব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে।
ফলে সড়কের নির্মাণ কাজ চলমান থাকাবস্থায় ৮ কিলোমিটার সড়ক ফুলে-ফেঁপে উঠে। ওই সময় সরকার বুয়েটের একজন শিক্ষককে পরামর্শক নিয়োগ করেন। তিনি সরেজমিন ঘুরে সড়কের দু’পাশে ওয়্যারিং করার সুপারিশ করেন। সেই সুপারিশের আলোকে সরকার পুনরায় সড়কটি নির্মাণে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত সময় বৃদ্ধি করে আরও ১৩ কোটি ৪০ লাখ টাকা বরাদ্দ নির্ধারণ করেছে। সড়ক ও জনপথ বিভাগ যশোরের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী আরিফ মাহমুদ জানান, পরামর্শকের সুপারিশ অনুযায়ী সড়কের দু’পাশে হার্ডসোল্ডার ওয়্যারিং করা হবে। কেননা রাস্তার পাশে দেড় মিটার নিচু থাকার কারণে গাড়ির চাপ পড়ছিল রাস্তার মাঝখানে। যে কারণে সড়কের নির্মাণ ব্যয় বেড়েছে ১৩ কোটি ৪০ লাখ টাকা। গত মাসের একনেক সভায় সরকার এই টাকা বরাদ্দ করেছে।