জোয়ারের পানি থেকে রক্ষা পেতে কিল্লায় আশ্রয় নেয়া শতশত মহিষ
নিম্ন চাপ ও লঘু চাপের প্রভাবে গত কয়েক দিন ধরে টানা বৃষ্টি ও মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীর অতিজোয়ারের পানিতে নিম্নাঞ্চল ও বিভিন্ন দুর্গম চরাঞ্চল প্লাবিত হলেও ভোলার ভেদুরিয়া ও ভেলুমিয়া চরের কয়েক শত মহিষ রক্ষা পেয়েছে। ওই চরে আধুনিক ৩টি কিল্লা নির্মাণ করায় চরের মহিষরা বৈরী আবহাওয়ার মধ্যে নিরাপদে থাকায় অনেক মহিষ ভেসে যেতে পারেনি।
মহিষ বাথা নিয়া মোঃ রিয়াজ, মোঃ শরিফ সাংবাদিকদের জানান, ঝড় জলোচ্ছাস থেকে রক্ষার জন্য তারা ইতোপূর্বে মাটি দিয়ে উচু করে মাটির কিল্লার চার পাশে সুপারি গাছ দিয়ে গোলক বৃত্তের মধ্যে মহিষ রাখতো। তখন পানিতেই ভেসে থাকতো মহিষ। অনেক সময় পানির স্রোতে ভেসে যেত তাদের লক্ষ লক্ষ টাকা দামের মহিষ। ওই অবস্থায় অপরিচ্ছন্ন এবং অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে লালন পালন করতো তাদের মহিষগুলো।
বর্তমানে বেশ কয়েকটি চরে আধুনিক ও স্বাস্থ্যসম্মত কিল্লা নির্মিত হওয়ায় এবার তাদের কোন কস্ট হয়নি। পুরো জোয়ারের মধ্যে মহিষগুলো আধুনিক কিল্লায় উঠিয়ে রাখা হয়েছে। স্বাস্থ্য সম্মত ভাবে ওই কিল্লায় আধুনিক ব্যবস্থায় রাখা হয়েছে। যা স্বপ্নেও তারা ভাবেনি বলে জানান। প্রতিটি কিল্লায় আশ্রয় নিয়েছে প্রায় পাঁচ শতাধিক মহিষ।
মহিষ লালন পালন কারী (বাথানিয়া ) রেজাউল, বাশার মাঝিও ইব্রাহীম জানান, মহিষের সাথে তাদের ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশে থাকার ব্যবস্থা রয়েছে কিল্লায়। রয়েছে সুপেয় পানি ও স্যানিটেশনের ব্যবস্থা।
অন্যদিকে লাগানো হয়েছে বজ্র নিরোধক যন্ত্র। যে কারনে আমাদের এবং মহিষের চরে থাকায় কোন অসুবিধা হচ্ছেনা। চরের মধ্যে এমন দৃস্টি নন্দন স্থাপনা আগে কখনই দেখেননি । তারা আরো জানান, কিল্লার সুযোগ পাওয়ার পাশাপাশি পশু সুরক্ষায় তার নিয়মিত চিকিৎসা সেবাও পাচ্ছেন বিনামুল্যে।
ভোলা গ্রামীন জন উন্নয়ন সংস্থার নির্বাহী পরিচালক জাকির হোসেন মহিন জানান, পল্লীকর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের এসইপি প্রকল্পের আওতায় গ্রামীন জন উন্নয়ন সংস্থা ভোলার ভেদুরিয়ার চর চটকিমারা, ভেলুমিয়া ইউনিয়নের চর চন্দ্র প্রসাদ ও চর মুন্সিতে মোট তিনটি আধুনিক কিল্লা চলতি বছর নির্মাণ করে। যা ভোলায় এই প্রথম। গুরুত্ব বিবেচনায় আরো কিল্লা নির্মান কাজ চলমান থাকবে বলে জানান তিনি।
গ্রামীন জন উন্নয়ন সংস্থার এসইপি প্রকল্পের প্রজেক্ট ম্যানেজার ডাঃ তরুন কুমার পাল জানান, কেবল মহিষ ও মহিষ বাথানিয়াদের কথা চিন্তাকরে এ প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হচ্ছে। সাথে রয়েছে বিনামূল্যে মহিষের চিকিৎসা সেবা। মহিষ ছাড়াও আশপাশের জেলেরাও দুর্যোগপুর্ন অবস্থায় আশ্রয় নিতে পারবে কিল্লায়।