ট্রেনের টিকেট বাণিজ্য
রাজশাহী থেকে ঢাকাগামী ট্রেনের টিকেটের সংকট সবসময় লেগেই থাকে। পশ্চিম রেলের একটি সিন্ডিকেটের কারণে সময়মত লাইনে দাড়িয়ে কিংবা অনলাইনেও হাওয়া হয়ে যায় টিকেট। সিন্ডিকেটের সদস্যদের বিরুদ্ধে এবার রাজশাহীর একজন এমপির ডিও জাল করে টিকেট বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে।
সর্বশেষ ২২ আগস্ট রাজশাহী-ঢাকাগামী ধুমকেতু এক্সপ্রেসের চারটি বাথের (কেবিন) টিকেট নেওয়া হয়েছে রাজশাহী-৩ আসনের এমপি আয়েন উদ্দিনের সাক্ষর জাল করে।
এমপি আয়েন উদ্দিন বিষয়টি জেনে বিষ্ময় প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, তিনি কাউকে ট্রেনের টিকেটের জন্য কোনো ডিও দেন নি। তার সাক্ষর জাল করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখতে তিনি পশ্চিম রেলের ব্যবস্থাপককে অনুরোধ জানিয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, একজন এমপি হিসেবে নিজের প্রয়োজনে ট্রেনের টিকেটের জন্য ডিও দিতেই পারেন। তবে সর্বশেষ যে ডিও দেওয়া হয়েছে তা এমপি আয়েনের নয়। তার স্বাক্ষর ও সীল জাল করা হয়েছে। এমপির নকল ডিও’র মাধ্যমে ইস্যু করা চারটি টিকেট নিয়ে তিনজন ঢাকায় গেছেন বলে জানা গেছে।
রাজশাহী রেলওয়ের স্টেশন মাস্টার আবদুল করিম বলেন, কেউ কোনো ডিও দিলে তার কাছে আসার কথা।
তবে ডিওটি পশ্চিম রেলের আকতার হোসেন নামের একজন শ্রমিক নেতার সুপারিসে ফয়সাল নামের একজন কর্মচারি সরাসরি বুকিং সহকারীকে দিয়ে কৌশলে টিকেট সংগ্রহ করে অন্যদের দিয়েছেন। বুকিং সহকারীও বিষয়টি বুঝতে না পেরে টিকেট দিয়ে দিয়েছেন। পরে ডিওটি জাল বলে সনাক্ত করা হয়।
তিনি আরও বলেন, ডিও লেটারে এমপি আয়েন উদ্দিনের জাল স্বাক্ষরে উল্লেখ করা হয় ‘আমার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ২২ আগস্ট রাতের ট্রেনের আমি ঢাকা যাবো। এজন্য দুটি ক্যাবিনের টিকেট দরকার’। তবে ওইদিন এমপি আয়েন উদ্দিন ও তার পরিবারের কোনো সদস্য ঢাকা যাননি। এ ঘটনায় আয়েন উদ্দিন বলেন, তিনি কাউকে কোনো ডিও দেননি।
বিশেষ করে ট্রেনের টিকেটের জন্য ডিও দেওয়া হয়নি। তার সাক্ষর কে বা কারা জাল করেছেন। তিনি বিষয়টি অবগত হওয়ার পর পশ্চিম রেলের জিএমকে জানিয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, এমপি আয়েনের পিএস জামিল নামের এক ব্যক্তির কাছ থেকে ডিও’র ফাকা পাতা সংগ্রহ করে তাতে হাতে লিখে টিকেটের জন্য আবেদন করা হয়। তবে ওই ডিও লেটারে কাউকে এড্রেস করা হয়নি। যোগাযোগ করা হল এমপি আয়েনের পিএস জামিলকে পাওয়া যায়নি।
তবে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের ব্যবস্থাপক (জিএম) অসীম কুমার তালুকদার বলেন, একজন এমপি’র ডিও নকল করে টিকেট নেওয়ার বিষয়টি অবগত হয়েছি। যারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদের বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে বলেও তিনি জানান। তিনি বলেন, একজন এমপির নাম ভাঙ্গিয়ে ট্রেনের টিকেট সংগ্রহ করা এবং যাচাই না করে যারা টিকেট দিয়েছেন তাদের ব্যাপারেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।