সংবাদদাতা, নান্দাইল, ময়মনসিংহ ॥ আমন মৌসুমের একটি ধানের নাম তুলসীমালা। স্থানীয় ভাবে এই ধানকে ‘জামাই মুখের ধান’ বলা হয়। সুগন্ধী ও ছোট হওয়ায় পোলাও, রিরিয়ানি ও পায়েস রান্নায় এই ধানের চাল ব্যবহার করা হয়। বিশেষ করে বিভিন্ন উৎসব, পার্বণ ও অনুষ্ঠানে অতিথি আপ্যায়নে বেশি ব্যবহৃত হয়। আর জামাই আপ্যায়নে এই ধানের চাল ছাড়া কল্পনাই করা যায়না।
জানা গেছে, এক সময় নান্দাইল উপজেলাজুড়ে কালো জিরা, চিনিগুড়া ও তুলসীমালা সহ বেশকিছু জাতের চিকন চালের ধান ব্যাপক আকারে চাষ হত।
এখন উচ্চ ফলনসীল জাতের ধান উদ্ভাবন হওয়ার পর চিকন ধানের চাষ কিছুটা কমে গেলেও জামাই আপ্যায়ন ও অতিথি আপ্যায়নে এই ধানের চালের বেশ কদর রয়েছে। তাই সীমিত আকারে কৃষকরা তুলসীমালা ধান চাষ করেন। তবে কৃষি বিভাগ বলছে তুলসীমালা সহ আরও দুটি জাতের চিকন ও ছোট জাতের ধানের চাষ অন্য বছরের তুলনায় এ বছর বৃদ্ধি পেয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এই ধানের অন্যতম একটি বৈশিষ্ট্য ফুল আসার পর থেকে পাকা পর্যন্ত ৫ বার রং পাল্টায়।
প্রথমে হালকা সবুজাভ, এরপর কিছুটা অ্যাশ, এরপর হালকা জাম রং, এরপর গাড় জাম রং এবং শেষে কালো ও অ্যাশ মিলিয়ে নতুন একটি রং ধারণ করে। পালাহার গ্রামের গৃহবধু সুফিয়া খাতুন ও রেশমা আক্তার বলেন, বাড়িতে জামাই এলে এই চাল ছাড়া আপ্যায়ন কল্পনাও করা যায় না।
পোলাও ভাত, বিরিয়ানি ও পায়েস রান্নায় তুলসীমালা চাল ব্যবহার করতে হয়। কৃষক সনজু মিয়া, আব্দুল মালেক, আবু বক্কর ও সনজু মিয়া বলেন, এই চাল যেহেতু জামাই আপ্যায়নে ব্যবহৃত হয় তাই আমরা জামাই মুখের ধান বলেও জানি। পারিবারিক প্রয়োজনে প্রতিবছর সীমিত আকারে তুলসীমালা ধান চাষ করলেও আগামী বছর বানিজ্যিক ভাবে চাষ করার চিন্তু আছে।
নান্দাইল উপজেলা কৃষি অফিসার আনিছুজ্জামান বলেন, এই ধান চাষে উৎপাদন কম হয়। কিন্তু খরচ কম ও বাজার মূল্য ভালো পাওয়ায় কৃষক লাভবান হয়। বিগত বছরের তুলনায় চলতি বছর এই ধানের চাষ বেড়েছে। এই এলাকায় চিকন চালের মধ্যে তুলসীমালা, কালো জিরা ও চিনিগুড়া ধানের চাষ হয়।