
স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল ॥ থই থই পানিতে বাদাম তুলে চলছে নৌকা। কোথাও বা জাল দিয়ে মাছ ধরছেন জেলেরা। তীরে কলসি কাঁখে কুলবধূ। আবার হয়তো নদীর দুইপাড় সংযোগকারী সেতুর নিচে বয়ে যায় কুলকুল জলধারা।
এই তো নদীর চিরন্তর রূপ কিন্তু তা না হয়ে যখন জলহীন নদীর বুকে জেগে ওঠা চর দখল করে চাষ হয় ফসল, তখন নদীগুলো দেখে বোঝার উপায় নেই এটা নদী না ফসলের মাঠ। দখলদারদের দাপটে বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার পয়সারহাটে বিবর্ণ হয়ে উঠেছে সন্ধ্যা নদী। পয়সারহাট বন্দর ও সেতুর দুই পাশে অবৈধ দখলদাররা তুলেছেন পাকা স্থাপনাসহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। নদীর তীরে জেগে ওঠা চর স্থানীয় প্রভাবশালীরা দখল করে ধান করেছেন। এতে একসময়ের খরস্রোতা নদীটি সৌন্দর্য হারানোর পাশাপাশি কমেছে নাব্যতা। ফলে বিগত পাঁচ বছর ধরে ঢাকা-পয়সারহাট রুটের লঞ্চ চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফলে চরম বিপাকে পরেছেন পয়সারহাট বন্দরের ব্যবসায়ীরা।
অপরদিকে উচ্চ আদালতের আদেশ অনুযায়ী নদী দখলদারদের তালিকা নদী কমিশনে জমা দেওয়ার কথা থাকলেও অদ্যবর্ধি সন্ধ্যা নদী দখলকারীদের তালিকা করতে পারেনি স্থানীয় প্রশাসন। নদী দখলমুক্ত করে স্বাভাবিক গতি ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
সম্প্রতি সময়ে নদীর দুইপাড় দখল করায় স্রোতধারা কমে পলি জমে বিভিন্নস্থানে চর জেগে উঠেছে। পয়সারহাট বন্দর সংলগ্ন নদীর উপর গৌরনদী-আগৈলঝাড়া-গোপালগঞ্জ মহাসড়কের সেতু সংলগ্ন বিশাল এলাকাজুড়ে চর জেগে উঠেছে। যেখানে জেলেদের জালে ধরা পরতো ইলিশ। বর্তমানে সেই নদীগর্ভে জেগে ওঠা চরে ধান চাষ করা হয়েছে। জরুরিভাবে নদীটি ড্রেজিং করে নাব্যতা ফিরিয়ে না আনলে একসময় এ নদীর ইতিহাস ঐতিহ্য বিলীন হয়ে যাবে।
এ ব্যাপারে আগৈলঝাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবুল হাশেম বলেন, সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সমন্বয়ে সন্ধ্যা নদী পরিমাপ করে দখলদারদের তালিকা প্রণয়ন করা হবে এবং পর্যায়ক্রমে দখলদারদের উচ্ছেদ করে নদী দখলমুক্ত করা হবে। তিনি আরও বলেন, নদীটি ড্রেজিং করার জন্য ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তাদের সাথে কথা হয়েছে।