স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল ॥ প্রেমের ফাঁদ ও যৌণ সর্ম্পকের প্রলোভন দেখিয়ে উচ্চবিত্তদের ফাঁদে ফেলে মুক্তিপন আদায়কারী চক্রের ১০জনকে আটক করেছে বরিশাল মহানগর ডিবি পুলিশ। বুধবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
সূত্রমতে, প্রতারণার শিকার নগরীর প্রতিষ্ঠিত এক ঠিকাদারের দেওয়া অভিযোগের প্রেক্ষিতে নগর ডিবির পুলিশের পরিদর্শক মোঃ সগির হোসেনের নেতৃত্বে একদল গোয়েন্দা পুলিশ মঙ্গলবার দিবাগত গভীর রাতে নগরীর কোতোয়ালী ও কাউনিয়া থানার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রতারক চক্রের গ্রুপের সদস্যদের আটক করেছে। বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের অস্থায়ী কার্যালয়ের সভাকক্ষে সংবাদ সম্মেলনে নগর বিশেষ শাখার উপ-কমিশনার মোঃ জুলফিকার আলী হয়দার বলেন, দুই মাধ্যমে ফাঁদে ফেলে এই প্রতারক চক্র।
এর মধ্যে প্রথমত যৌণ সর্ম্পক স্থাপনের প্রলোভন দেখিয়ে ভাড়া ফ্লাটে নিয়ে ঘনিষ্ঠ অবস্থায় চক্রের অপর সদস্যদের দিয়ে ব্লাক মেইল করা। দ্বিতীয়ত ডিবি পরিচয়ে শারীরীক ও মানসিক নির্যাতন চালিয়ে অর্থ আদায় করা। সূত্রমতে, শুধু ১০ জনই নয় এই চক্রে আরও স্কুল-কলেজের তরুনীরা জড়িত থাকার তথ্য তাদের হাতে রয়েছে। তাদেরকেও আটকের জন্য অভিযান চলছে।
সূত্রমতে, আটককৃতরা হলো- নগরীর চ্যাটার্জি লেনের লাবু মিয়ার বাসার ভাড়াটিয়া শরিয়তপুরের গোসাইরহাট গ্রামের জাকির হোসেন ও তার স্ত্রী মঞ্জুয়ারা বেগম, নগরীর কাশিপুর এলাকার মামুন বয়াতী, কাউনিয়া প্রধান সড়ক প্রথম গলি এলাকার সেলিম হাওলাদার, ভবানীপুর এলাকার মকবুল হোসেন ও তার স্ত্রী লিজা বেগম, চহটা এলাকার আরিফুর রহমান তালুকদার, বরিশাল সরকারী বিএম কলেজের ম্যানেজমেন্ট অনার্স ফাইনাল ইয়ারের ছাত্রী ও কাঠালিয়ার আওরাবুনিয়া গ্রামের জাহাঙ্গীর মোল্লার কন্যা ফারজানা আক্তার ঝুমুর, ফকিরবাড়ি এলাকার আবুল কালাম আজাদের স্ত্রী খুশি বেগম ও চরকাউয়া এলাকার শামীম সরদারের স্ত্রী আশা আক্তার।
সংবাদ সম্মেলনে গোয়েন্দা শাখার উপ-পুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর মল্লিকসহ অন্যান্য পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে উপ-পুলিশ কমিশনার বলেন, নগরীর মুন্সির গ্যারেজ এলাকার বাসিন্দা ও প্রতিষ্ঠিত এক ঠিকাদারের দেওয়া অভিযোগের প্রেক্ষিতে নগর ডিবির পুলিশের পরিদর্শক মোঃ সগির হোসেনের নেতৃত্বে একদল গোয়েন্দা পুলিশ মঙ্গলবার রাতভর নগরীর কোতোয়ালী ও কাউনিয়া থানার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে এসব প্রতারক চক্রের গ্রুপের সদস্যদের আটক করেছে।
জানা গেছে, অভিযোগকারীকে প্রেমের ছলনায় মঙ্গলবার বিএম কলেজের শিক্ষার্থী ফারজানা আক্তার ঝুমুর মোবাইল ফোনে মাধ্যমে সরকারী বরিশাল কলেজের সামনে ডেকে আনেন। পরবর্তীতে অন্তরঙ্গ সময় কাটাবার জন্য নিকট আত্মীয়ের চ্যাটার্জি লেনের লাবু মিয়ার ভাড়াটিয়া বাসায় নিয়ে যাবার পর জোরপূর্বক অভিযোগকারী ঠিকাদারকে বিবস্ত্র করে। এসময় অন্যান্য প্রতারকরা ঘরে প্রবেশ করে নিজেদের ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে ঠিকাদারকে নির্যাতন করে প্রথমে নগদ সাড়ে ৯ হাজার টাকা পরবর্তীতে বিকাশের মাধ্যমে আরও ১০ হাজার টাকাসহ মোট ১৯ হাজার পাঁচশ’ টাকা হাতিয়ে নিয়ে ছেড়ে দেয়। সূত্রমতে, ঝুমুর নগরীর ড্রীম হাউজ নামের ব্যক্তি মালিকানাধীন একটি মেসে বসবাস করে আসছিলো।
নগর ডিবি পুলিশের ওসি মোঃ মাহাবুব বলেন, এ ঘটনায় একটি মামলা দায়েরের পর ওই মামলায় আটককৃতদের গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।