স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল ॥ বাড়িতে ছোট ভাই-বোন অপেক্ষা করছে বড় বোন তাদের জন্য ঈদের নতুন পোষাক নিয়ে আসবে। এইতো সোমবার রাতেও বৃদ্ধ মা ও ছোট ভাই-বোনের সাথে কথা বলেছে ফারজানা। ভাইবোনকে সে ফোনে জানিয়েছেন, “আমি স্টীমারে উঠেছি, তোমাদের জন্য জামা, সুন্দর সুন্দর প্যান্ট কিনেছি, আর মায়ের জন্য একটি শাড়ী”। বড় বোনের কাছ থেকে এতো বড় আনন্দের সংবাদ শুনে তার আসার অপেক্ষার প্রহর গুনছিলো ছোট ভাই-বোনেরা।
ভোরে হঠাৎ মায়ের ফোনটা বেঁজে উঠে। সবাই ভাবছিলেন, হয়তো ফারজানা এসে পড়েছে। কিন্তু ফারজানা আসেনি। ফোন করে ফারজানা মাকে জানালো “মা আমার পা নেই, আমি কি করে বাড়িতে আসবো। কবেই বা আসবো আমার পা যে কেটে ফেলেছেন চিকিৎসকরা”। সূত্রমতে, ফারজানার বাড়ি বাগেরহাটের মোড়লগঞ্জ উপজেলা সদরে। পেশায় একজন গার্মেন্টস কর্মী। দিনরাত পরিশ্রম করে কতোইবা বেতন পান। আশা ছিলো পরিবারের সাথে ঈদ করবেন। ঢাকা থেকে পিএস মাহসুদ নামের স্টীমারে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিয়েছিলেন। তার সব স্বপ্ন ভেঙ্গে দিয়েছে বরিশাল থেকে ঢাকাগামী সুরভী-৭ লঞ্চ। সোমবার ভোরে সদর উপজেলার চরবাড়ীয়া এলাকায় পিএস মাহসুদের ওপর বেপরোয়া গতিতে উঠিয়ে দেয় লঞ্চটি। এতে দুমড়ে মুচড়ে যায় স্টীমারের একাংশ। নিহত হয়েছেন ৫ জন। আহত বেশ কয়েকজনকে ভর্তি করা হয় শেবাচিম হাপসপাতালে। তাদের মধ্যে ফারজানার অবস্থা খুবই আশঙ্কাজনক। ইতোমধ্যে কেটে ফেলা হয়েছে তার বাম পায়ের হাঁটুর নিচের অংশ।