অনলাইন রিপোর্টার॥ সকাল ৯টা বেজে ২০ মিনিট। শোকের আবহে রাজধানীর আর্মি স্টেডিয়ামে সুনসান নীরবতা। গুলশানের হলি আর্টিজেন বেকারিতে হামলায় সন্ত্রাসীদের হাতে নিহতদের শ্রদ্ধা জানাতে প্রস্তুত করা হয়েছে গোটা স্টেডিয়াম। স্টেডিয়ামের মাঠে একটি মঞ্চে পতাকা মোড়ানো তিনটি কফিন রাখা। মাঠে শ্রদ্ধা জানানোর জন্য অপেক্ষা করছেন নিহতদের স্বজন, সরকারের মন্ত্রিপরিষদের বেশ কয়েকজন সদস্য, যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, ইতালি, ভারতের রাষ্ট্রদূত-হাইকমিশনাররা ছাড়াও বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক ও দূতাবাসের প্রতিনিধি, সেনা, নৌ, বিমান বাহিনীর প্রধান, পুলিশ, র্যাব, বিজিবি প্রধানসহ সামরিক ও বেসামরিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে সামরিক বাহিনীর সদস্য, বাংলাদেশে অবস্থিত বিভিন্ন দূতাবাসের প্রতিনিধি, বিদেশি নাগরিক, নিহতদের শুভাকাঙ্খীসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ। সবার মুখে বিষাদের ছায়া। কালো ব্যাজ কিংবা পোশাক পরেছেন সবাই। রাজধানীর গুলশানে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় নিহতের ঘটনায় উপস্থিত মানুষের সঙ্গে পরিবেশটাও যেনো কাঁদছে। গুড়ি গুড়ি বৃষ্টির মাধ্যমে আকাশ যেন জানান দিচ্ছে তার বেদনার কথা। স্টেডিয়ামে দেশের বিভিন্ন টেলিভিশন, পত্রিকা, অনলাইন গণমাধ্যমের বাইরেও বিভিন্ন দেশ ও আর্ন্তজাতিক গণমাধ্যমের কয়েক ডজন সংবাদকর্মী উপস্থিত।
উপস্থিত সবার চেহারায় বেদনার স্পষ্ট ছাপের সঙ্গে সন্ত্রাসীদের ঘৃণা প্রকাশ পাচ্ছিল। সকাল ৯টা ৪৫ মিনিটে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের পক্ষে তার একজন প্রতিনিধি কফিনে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। এরপর সকাল ১০টার দিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। এ সময় নিহতদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। শ্রদ্ধা জানানো শেষে প্রধানমন্ত্রী নিহতদের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলেন, তাদের সান্ত্বনা দেন। তিনি হাইকমিশনার-রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গেও কথা বলেন।
এরপর পর্যায়ক্রমে ভারতের হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলা, ইতালির রাষ্ট্রদূত মারিও পালমা, জাপানের রাষ্ট্রদূত মাসাতো ওয়াতানাবে, যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত স্টিফেন ব্লুম বার্নিকাট নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। নিহতদের প্রতি তাদের স্বজন এবং নিহত দুই পুলিশ কর্মকর্তার স্বজনেরা শ্রদ্ধা জানান। বাংলাদেশে থাকা বিভিন্ন দূতাবাসের পক্ষে রাষ্ট্রদূত-হাইকমিশনার ও প্রতিনিধিরাও ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।
এরপর নিহতদের প্রতি বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক সংগঠনসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ শ্রদ্ধা জানান। একে একে আওয়ামী লীগ, ১৪ দল, বিএনপি, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের মেয়র, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, এফবিসিসিআইসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার পক্ষ থেকে ফুলেল শ্রদ্ধা জানানো হয়। এরপর শ্রদ্ধা জানাতে সর্বস্তরের মানুষের জন্য উম্মুক্ত করে দেওয়া হয়। এ সময় বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার বিপুল সংখ্যক মানুষ ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।