অনলাইন ডেস্ক ॥ ভারতে প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ১৭০০ ছাড়িয়েছে। অনেক রাজ্যেই এখনও আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। এরই মধ্যে এলো সুখবর। প্লাজমা থেরাপিতে সুস্থ হয়ে উঠলেন এক রোগী। দিল্লিতে ম্যাক্স হাসপাতালের একটি ব্রাঞ্চে এই ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চালানো হয়েছিল। আর তাতে সাফল্য মিলেছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।
দেশের মধ্যে এই প্রথম প্লাজমা থেরাপিতে সাফল্যের কথা শোনা গেল। ৪৯ বছরের ওই আক্রান্তকে ভেন্টিলেটর সাপোর্ট থেকে বের করে আনা হয়েছে। গত সপ্তাহে ওই রোগীর উপর প্লাজমা থেরাপির ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শুরু হয়।
গত ৪ এপ্রিল ওই রোগীর শরীরে করোনা ভাইরাস ধরা পড়ে। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার হালকা জ্বর ও শ্বাসকষ্ট ছিল। কয়েকদিন বাদে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। ৮ এপ্রিল তাকে ভেন্টিলেটরে রাখা হয়।
তার অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় পরিবার থেকে হাসপাতালের কাছে আবেদন জানানো হয় যাতে তাকে প্লাজমা থেরাপিতে চিকিৎসা করা হয়। এরপরই ক্রমশ সুস্থ হয়ে যান তিনি। তার শরীরে আর করোনা সংক্রমণ নেই।
তার বাবাও হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন সংক্রমণ নিয়ে। ৮০ বছরের ওই বৃদ্ধকে অবশ্য বাঁচানো সম্ভব হয়নি। কারণ আগেই তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছিল। যদিও ম্যাক্স গ্রুপের মেডিকেল ডিরেক্টর ড. সন্দীপ বুধিরাজা বলেন, প্লাজমা থেরাপি ম্যাজিকের মতো কাজ নাও করতে পারে।
তিনি আরও বলেন, প্লাজমা থেরাপিতে রোগী দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠতে পারে। এর সঙ্গে অন্যান্য চিকিৎসাও চলে, যেমন অন্য রোগীদের ক্ষেত্রে চলছে। সেরে গেছেন এমন করোনা আক্রান্তের শরীর থেকে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়। আর সেই অ্যান্টিবডি দিয়েই হয় প্লাজমা থেরাপি।
ভারত সহ বিভিন্ন দেশে এর ট্রায়াল চলছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, একজন সুস্থ করোনা রোগী ৪০০ মিলিলিটার প্লাজমা দিতে পারে। যাতে দু’জন রোগীকে সুস্থ করা সম্ভব। আইসিএমআর-এর সিনিয়র সায়েন্টিস্ট ড, রমন আর গঙ্গাখেদকর জানিয়েছেন, ভারতে ৮০ শতাংশ ক্ষেত্রেই আক্রান্তের শরীরে কোসো উপসর্গ দেখা যাচ্ছে না। সুতরাং সেক্ষেত্রে করোনা আক্রান্তের সংস্পর্শে এসেছে, কিনা তার উপর ভিত্তি করেই টেস্ট করতে হচ্ছে।
মনে করা হচ্ছে ভারতে এমন অনেক আক্রান্ত আছেন, যাদের উপসর্গ না থাকায় টেস্ট করা হয়নি। তার কথায়, ভারতে আক্রান্তের সংখ্যা আর খুব বেশি বাড়বে না। মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে এই সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য দেওয়া সম্ভব বলে জানিয়েছেন তিনি।
দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, মোট ১৭ হাজার ২৬৫ জন আক্রান্তের মধ্যে ২৫৪৬ জন সুস্থ হয়ে গিয়েছে। মৃত্যু হয়েছে ৫৪৩ জনের।