নিজস্ব সংবাদদাতা, শেরপুর ॥ শেরপুরের নকলায় ডলি খানম (২২) নামে অন্তঃসত্ত্বা এক গৃহবধূকে গাছে বেঁধে নির্যাতনের চাঞ্চল্যকর মামলায় অবশেষে দীর্ঘ ৬ মাস পর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেছে পুলিশ। তবে হুকুমের আসামি সেনাসদস্য নেছার উদ্দিনকে অব্যাহতির আবেদনসহ ডাক্তারি পরীক্ষা-নিরীক্ষায় নির্যাতিতা গৃহবধূর অকাল গর্ভপাতের প্রমাণ থাকার পরও তার সত্যতা না পাওয়ার কথা উল্লেখ থাকায় সেই অভিযোগপত্রের বিরুদ্ধে আংশিক নারাজী দাখিল করেছে বাদীপক্ষ। আজ বুধবার দুপুরে মামলার সংবাদদাতা বাদী-ভিকটিমসহ জামিনে থাকা ৮ আসামির উপস্থিতিতে আদালতে ওই নারাজী দাখিল হলে জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফারিন ফারজানা তা গ্রহণ করে আগামী ১৯ মার্চ নারাজীর বিষয়ে শুনানীর তারিখ নির্ধারণ করেন।
জানা যায়, গত বছরের ১০ মে নকলা উপজেলার কায়দা গ্রামে জমিসংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে ওই অন্তঃস্বত্ত্বা গৃহবধূকে গাছে বেঁধে বর্বরোচিত নির্যাতন এবং নির্যাতনে গৃহবধূর গর্ভের সন্তান নষ্টের ঘটনা ঘটে। এরপর নির্যাতনের একটি ভিডিও ভাইরাল হলে তোলপাড় শুরু হয়। এর প্রেক্ষিতে পুলিশ সুপার কাজী আশরাফুল আজীমের দ্রুত পদক্ষেপে একই বছরের ১১ জুন এক সেনা সদস্যসহ ওই গৃহবধূর ৩ ভাসুর ও জাসহ ৯ জনকে স্ব-নামে ও অজ্ঞাতনামা আরও ৩/৪ জনের বিরুদ্ধে থানায় একটি মামলা গ্রহণ করা হয়। পরবর্তীতে এজাহারনামীয় ৮ আসামি বিভিন্ন পর্যায়ে জামিন পেলেও পলাতক থাকেন নেছার উদ্দিন।
আদালতে নারাজী দাখিলের বিষয়ে নির্যাতিতা গৃহবধূ ডলি খানম ও তার স্বামী শফিউল্লাহ জানান, নেছার উদ্দিনই ছিলেন ওই ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী ও হুকুমদাতা। ঘটনাস্থলে থাকা তার স্ত্রী লাখী আক্তারসহ অন্যান্য আসামিদের তিনিই মোবাইলে হুকুম দিয়ে পুনঃপুন খোঁজ নিচ্ছিলেন এবং আসামিদের মোবাইলেই নির্যাতনের ভিডিও ধারণ করাচ্ছিলেন। এছাড়া নির্যাতনে অকাল গর্ভপাতের সকল তথ্য-প্রমাণ পাওয়ার পরও তারা তদন্ত প্রভাবিত করে পুলিশ রিপোর্ট হাসিল করেছে। তারা আদালতেই ঘটনার ন্যায়বিচার পাবেন বলে প্রত্যাশা করেন।