অনলাইন ডেস্ক ॥ নতুন করোনা ভাইরাস চীনে আরও ৯৭ জনের মৃত্যু ঘটিয়েছে। চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে প্রথম এ ভাইরাস সংক্রমণের বিষয়টি ধরা পড়ার পর থেকে গত ছয় সপ্তাহে চীনে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১১১৩ জনে। আর চীনের মূল ভূখণ্ডের বাইরে এ পর্যন্ত ফিলিপিন্স ও হংকংয়ে দুই চীনা নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে এ ভাইরাসে, যার নতুন নাম দেওয়া হয়েছে কভিড-১৯ (করোনাভাইরাস ডিজিজ)।
চীনে জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশনের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, মঙ্গলবার একদিনে এ ভাইরাসে মারা গেছেন ৯৭ জন; তাদের মধ্যে ৯৪ জনের মৃত্যু হয়েছে হুবেই প্রদেশে।
দেশটির মূল ভূখণ্ডে এ পর্যন্ত যাদের মৃত্যু হয়েছে তাদের মধ্যে একজন জাপানি ও একজন মার্কিন নাগরিক রয়েছেন, বাকিরা সবাই চীনা নাগরিক।
মঙ্গলবার নতুন ২০১৫ জনের মধ্যে এ ভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ায় চীনে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৪ হাজার ৬৫৩ জনে। চীনের বাইরে অন্তত ২৫টি দেশে আড়াইশর বেশি মানুষের দেহে এ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে। সব মিলিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা ৪৫ হাজার ছাড়িয়ে গেছে বলে তথ্য দিয়েছে সিএনএন।
যে এলাকাকে এ ভাইরাসের উৎপত্তিস্থল বলা হচ্ছে, সেই হুবেই প্রদেশে গত কয়েক দিন ধরে নতুন রোগীর সংখ্যা কমতে থাকায় আশাবাদী হয়ে উঠছেন চীনা চিকিৎসকরা। জানুয়ারির ৩০ তারিখের পর মঙ্গলবারই সবচেয়ে কম মানুষের দেহে নতুন করে এ ভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে।
চীনে নতুন করোনা ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় থাকা সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ জয় নানশান বলেছেন, এ করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব চলতি মাসেই সর্বোচ্চ পর্যায়ে থাকবে এবং এপ্রিলের দিকে বিপদ পুরোপুরি কেটে যাবে বলে আশা করছেন তিনি।
তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) নতুন করোনা ভাইরাসকে বিশ্বের জন্য হুমকি হিসেবেই দেখছে। ডব্লিউএইচওর মহাপরিচালক তেদ্রোস আধানম গেব্রিয়েসাস এ ভাইরাসকে ‘জনস্বাস্থ্যের জন্য ১ নম্বর শত্রু’ হিসেবে বিবেচনা করার আহ্বান জানিয়েছেন।
বিভিন্ন দেশে মানুষ থেকে মানুষে নভেল করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার খবর আসতে থাকায় গত ৩০ জানুয়ারি এ ভাইরাস নিয়ে বৈশ্বিক জরুরি অবস্থা জারি করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হলে প্রাথমিক উপসর্গ হয় ফ্লু বা নিউমোনিয়ার মত। কিন্তু বয়স্ক এবং অন্য অসুস্থতা থাকা ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে এ সংক্রামক রোগ হয়ে উঠতে পারে প্রাণঘাতী। এর কোনো প্রতিষেধকও মানুষের জানা নেই।
আক্রান্ত ব্যক্তির মধ্যে যেসব উপসর্গ দেখা দেয়, সাধারণভাবে সেগুলো সারানোর জন্যই চিকিৎসা দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। অবস্থা গুরুতর হলে নেওয়া হচ্ছে বিশেষ ব্যবস্থা।
চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, করোনা ভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে এ পর্যন্ত ৪ হাজার ৭৪০ জন ভালো হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন।