অনলাইন রিপোর্টার ॥ রাজধানীর পুরান ঢাকার চকবাজারের ব্যবসায়ী আব্দুল হান্নান বাহার হত্যা মামলায় চার জনের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
সোমবার (৬ জানুয়ারি) দুপুরে ব্রাহ্মবাড়িয়া জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ সফিউল আজম এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- নুরু মিয়া, জিয়াউল হক, লোকমান খান ও কাদির হোসেন। এদের মধ্যে জিয়াউল আদালতে উপস্থিত ছিলেন এবং অন্যরা পলাতক রয়েছেন।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, নোয়াখালীর সোনাইমুড়ি উপজেলার অম্বরনগর গ্রামের আব্দুল লতিফের ছেলে আব্দুল হান্নান বাহার (৪৫) পুরান ঢাকার চকবাজারে কসমেটিকস ও ইমিটেশনের ব্যবসা করতেন। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পাইকাররা বাহারের দোকান থেকে মালামাল কিনে নিয়ে যেতেন। প্রতি বছর ঈদ শেষে পাইকারদের কাছ থেকে বকেয়া টাকা আদায় করে ঢাকায় ফেরত আসতেন। গত ২০১৪ সালের ৪ আগস্ট বিকেলে কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা এলাকায় পাইকার লোকমান খানের কাছে বকেয়া আদায় করতে যান বাহার। সেসময় বাহারকে তার পাওনা টাকা পরিশোধ করবেন বলে বাঙ্গরা বাজারে ডেকে নেন লোকমান।
মামলায় দণ্ডপ্রাপ্তরা জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশকে জানায়, বাঙ্গরা বাজার থেকে লোকমান তার শ্বশুর বাড়িতে বেড়ানোর নাম করে বাহারকে ইঞ্জিনচালিত একটি নৌকায় করে নিয়ে যান। পরে নৌকায় আটকে রেখে মুক্তিপণ আদায়ের জন্য বাহারের তার আত্মীয়-স্বজনদের কাছে টাকা দাবি করেন। আসামিরা ৪ আগস্ট থেকে ৬ আগস্ট পর্যন্ত বাহারের হাত-পা বেঁধে তাকে নির্যাত করেন। কিছু টাকা আদায়ের পর আরও টাকার জন্য বাহারকে হত্যার হুমকি দেয় আসামিরা। ৬ আগস্ট রাত আনুমানিক সাড়ে ৯টার দিকে আসামিরা বাহারকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার উজানচর লঞ্চ ঘাটের বিপরীত দিকে তিতাস নদীতে ফেলে তার মৃত্যু নিশ্চিত করেন। এরপর ৮ আগস্ট বিকেল ৩টার দিকে নদী থেকে বাহারের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
বাহার হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ৯ আগস্ট বাঞ্ছারামপুর মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন তার ছোট ভাই বেলাল হোসেন। হত্যার ঘটনা প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় আসামিদের বিরুদ্ধে ওই বছরের ১০ নভেম্বর আদালতে চার্জশিট (অভিযোগপত্র) জমা দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। দীর্ঘ শুনানি শেষে অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় সোমবার এ রায় দেন আদালত।
মামলার রায়ে সন্তুষ্টি জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এস এম ইউসুফ।
এদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী জসিম উদ্দিন আহমেদ বলেন, রায়টি সঠিক হয়নি বলে মনে করছি। আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করবো।