অনলাইন রিপোর্টার ॥ আওয়ামী লীগ স্বাধীনতার মূল স্পিরিটের বিরোধী বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ। তিনি বলেছেন, আওয়ামী লীগের থলের বিড়াল বের হতে শুরু হওয়ায় তা প্রত্যাহারের প্রশ্ন উঠেছে। প্রকাশিত রাজাকারের তালিকায় আওয়ামী লীগের চেহারা ফাঁস হয়ে যাওয়ায় তারা এখন নিজেরাই কুতর্কে লিপ্ত হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দিচ্ছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দোষ, আর মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় দায় চাপাচ্ছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওপর।
বুধবার রাজধানীর নয়া পল্টনে বিএনপির প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে রিজভী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘যে মন্ত্রণালয়ই দায়ী থাকুক আওয়ামী লীগ মূলত স্বাধীনতার মূল স্পিরিটের বিরোধী। মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনা হচ্ছে গণতন্ত্র-সাম্য-মানবিক মর্যাদা এবং ন্যায়বিচার। এর কোনোটিই আওয়ামী রাজনীতির ঐতিহ্যে নেই। এদের ঐতিহ্য ময়দান থেকে বিরোধীদেরকে নিশ্চিহ্ন করে নিজেদের অবৈধ ক্ষমতাকে দখলে রাখা।’
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘রাজাকারের তালিকা প্রকাশ করতে গিয়ে আরেক কেলেঙ্কারির জন্ম দিয়েছে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। অন্যকে ফাঁসাতে গিয়ে এবার আওয়ামী লীগ নিজেরাই ফেঁসে গেছে। প্রকাশিত রাজাকারের তালিকায় দেখা যায়, অধিকাংশই আওয়ামী লীগের চিহ্নিত নেতাকর্মী। এতে জনগণ বিস্মিত নয়। কারণ, একাত্তর সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেছিলেন কিনা, এ নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।’
রিজভীর দাবি, প্রকাশিত তালিকায় প্রমাণিত হয়েছে— জনগণের আশঙ্কাই সত্যি হয়েছে। প্রকাশিত রাজাকারের তালিকা সঠিক নয় বলে সমালোচনা করছেন আওয়ামী লীগের কিছু নেতা। আবার মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী বলেছেন, তালিকায় বেশি ভুল প্রমাণিত হলে তা প্রত্যাহার করা হবে।’
বিএনপি নেতা রিজভী বলেন, ‘দীর্ঘ একমাসের বেশি সময় পর কারারুদ্ধ বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার সঙ্গে তার স্বজনদের দেখা করতে দেওয়া হয়েছিল ১৬ ডিসেম্বর। দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার সর্বশেষ শারীরিক অবস্থা নিয়ে আদালতে পেশ করা মেডিক্যাল বোর্ডের রিপোর্টের সঙ্গে তার শারীরিক অবস্থার বাস্তবে কোনও মিল পাননি তার বোনসহ পরিবারের সদস্যরা।’
তিনি আরও বলেন, ‘দেশনেত্রীকে কারাগারে রেখে বিনা চিকিৎসায় তিলে তিলে নিঃশেষ করাটাই এই সরকারের অভিপ্রায়। বাস্তবে তাই হতে চলেছে এখন। তিনি বর্তমানে ভয়াবহ জীবন-মৃত্যুর সংকটের মধ্যে রয়েছেন। তিনি হাঁটাচলা করতে পারেন না। খেতে পারছেন না। হাত ও পায়ের ছোট ছোট জয়েন্টগুলোসহ শরীরের বিভিন্ন জয়েন্ট ফুলে গেছে এবং এতে তীব্র ব্যথা অনুভূত হচ্ছে। জয়েন্টগুলো শক্ত ও বাঁকা হয়ে যাচ্ছে। চিকিৎসার অভাবে হাইলি অ্যাক্টিভ ডিফরমিং, রেমাটয়েড আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, হাইপার টেনশনসহ বেশ কয়েকটি রোগ চরম আকারে পৌঁছেছে।’
রিজভী দাবি করেন,খালেদা জিয়া তীব্র অসুস্থতায় কাতরালেও ডাক্তার আসেন না। ডাক্তার ঠিকমতো ওষুধ দিচ্ছেন না। তিনি রাত্রে ঘুমাতে পারে না। ফাস্টিংয়ে তার সুগার থাকছে ১৪। তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. শামীম এবং ডা. মামুনকে দেশনেত্রীর স্বাস্থ্য পরীক্ষায় যেতে দেওয়া হচ্ছে না। বাস্তবে দেশনেত্রীর কোনও চিকিৎসাই হচ্ছে না এবং ওষুধও দেওয়া হচ্ছে না।