স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল ॥ মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত রাজাকারের তালিকায় বরিশালের যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা প্রয়াত মিহির লাল দত্তের নাম এসেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে তীব্র ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করেছে এ মুক্তিযোদ্ধার পরিবার।
রবিবার বরিশাল বিভাগের রাজাকারদের নাম নিয়ে প্রকাশিত তালিকার ২২ নম্বর পাতায় ৯৪ নম্বরে মুক্তিযোদ্ধা মিহির লাল দত্তের নাম উল্লেখ করা হয়েছে রাজাকার হিসেবে। সেখানে তার বাবার নাম জিতেন্দ্র দত্ত ও ঠিকানা নগরীর আগরপুর রোড উল্লেখ করা হয়েছে। এ ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মিহির লাল দত্তের পুত্র শুভব্রত দত্ত।
সোমবার বিকেলে শুভব্রত দত্ত বলেন, আমার বাবা একজন ভাষা সৈনিক ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। তার মুক্তিযোদ্ধা গেজেট নম্বর- ২৮৯ ২১/০৫/২০০৫ এবং মুক্তিবার্তা নম্বর-০৬০১০১১০৬০। এছাড়া মন্ত্রণালয় প্রদত্ত সাময়িক সনদ নম্বর-ম ২৮৬১৬। তার নাম কীভাবে রাজাকারের তালিকায় এসেছে সেটা আমার বোধগম্য নয়। যারা এই তালিকার সাথে জড়িত তাদের শাস্তির দাবি করেন শুভব্রত দত্ত।
শুভব্রত আরও বলেন, আমার বাবা, দাদাসহ পরিবারের পাঁচ সদস্য মুক্তিযোদ্ধা। মুক্তিযুদ্ধে দুইজন শহীদ হয়েছেন। রাজাকারের তালিকায় বাবার নাম প্রকাশিত হওয়ায় আমরা আতঙ্কিত ও হতাশগ্রস্থ। সূত্রমতে, মিহির লাল দত্ত ১৯৩৫ সালের ১১ নভেম্বর জন্মগ্রহণ করেন। তারা বাবা এ্যাডভোকেট জিতেন্দ্র লাল দত্ত, মা শোভা রানী দত্ত। শিক্ষাজীবনে তিনি এম.এ (বাংলা), এম.এ (ইংরেজি), এম.এ ও এল.এল.বি ডিগ্রি অর্জন করেন। সাংবাদিক মিহির লাল দত্ত একাধারে কবি, নাট্যকার, গীতিকার, ছোট গল্পকার ও ভাষাবিদ। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন তিনি পেটে গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন। তারা বাবা জিতেন্দ্র লাল ও মেঝ ভাই সুবীর দত্ত পান্থ মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হয়েছেন। ২০০৭ সালের ২০ জানুয়ারি মিহির লাল দত্ত চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমান বলেন, তালিকায় ভুল হতে পারে, সংশোধনের সুযোগও থাকবে।
রাজাকারের তালিকায় বরিশালের ছয় নারী ॥ মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে রবিবার প্রকাশিত রাজাকারের তালিকায় বরিশাল বিভাগে ছয়জন নারীর নাম এসেছে। তালিকার অনেক নামের মতো কিছু নাম নিয়ে তৈরি হয়েছে বিতর্ক। তালিকায় বরিশাল বিভাগের ছয় নারী রাজাকারের নামগুলো হলো-নগরীর ঊষা রানী চক্রবর্তী (সিরিয়াল-৪৫), ঝাউতলা এলাকার কনক প্রভা মজুমদার (সিরিয়াল-৩৭), উজিরপুরের বিজয়া বালা দাস (সিরিয়াল-৩৫), আভা রানী দাস (সিরিয়াল-২৭), পারুল বালা কর্মকার (সিরিয়াল-৩৩) ও বাবুগঞ্জের দেহেরগতি এলাকার রাবিয়া বেগম (সিরিয়াল-১৫১)। এদের মধ্যে ঊষা রানী চক্রবর্তী গেজেটভুক্ত মুক্তিযোদ্ধা তপন কুমার চক্রবর্তীর মা। অবশ্য গেজেটভুক্ত মুক্তিযোদ্ধা তপন কুমার চক্রবর্তীর নামও রাজাকারের তালিকার ৬৩ নম্বরে এসেছে বলে নিশ্চিত করেছেন তারই মেয়ে বাসদ বরিশাল জেলা শাখার সদস্য সচিব ডাঃ মনীষা চক্রবর্তী।