স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ফিফা বিশ্বকাপ ফুটবলের বাছাইপর্বে কোন জয় না থাকলেও মোটামুটি ভাল সময়ই যাচ্ছিল বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের। আফগানিস্তানের পর কাতার এবং ভারতের সঙ্গে পারফরম্যান্স মনে ধরেছিল সবার। কিন্তু ওমানের সঙ্গে এসে ঘটলো ছন্দপতন, ৪-১ গোলের পরাজয়। কোন সন্দেহ নেই, হতাশাজনক নৈপুণ্য। তবে লাল-সবুজ বাহিনীর জেমি ডের ধারণা ভিন্ন। তিনি মনে করেন বাংলাদেশ দল তাদের সেরাটা দিয়েই খেলেছে। তাদের দোষ দিয়ে লাভ নেই। প্রতিটি ম্যাচেই ফুটবলাররা তাদের সামর্থ্যরে পুরোটাই দিচ্ছে এবং প্রতিনিয়ত শিখছে বলে মনে করেন এই ব্রিটিশ কোচ। তিনি বলেন, ‘আমি মনে বাংলাদেশ দল তাদের সেরাটাই উপহার দেয়ার চেষ্টা করেছে। একেকটি ম্যাচে তারা আগে চেয়ে ভাল খেলছে এবং নতুন কিছু শিখে তা মাঠে প্রয়োগ করার চেষ্টা করছে।’
জেমি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ এ পর্যন্ত বাছাইপর্বের যে কটি ম্যাচ খেলেছে, তার মধ্যে সেরা খেলাটা খেলেছে ভারতের বিরুদ্ধে। ওই ম্যাচে তারা তো প্রায় জিতেই যাচ্ছিল। ভারত অতিকষ্টে গোল করে সমতায় ফেরে এবং হার এড়ায়। সেদিন অবিশ্বাস্য ভালো খেলেছিল বাংলাদেশ দল। আমি মনে করি, তাদের পক্ষে আরও উন্নাত করা এবং আরও ভাল পারফরম্যান্স করা সম্ভব।’
সবশেষে জেমি আরও বলেন, ‘একটানা ভাল খেলা কোন দলের পক্ষেই সম্ভব নয়। বিশ্বের সেরা দলও কোন না কোনদিন ভাল খেলতে পারে না। এটাই ফুটবল। এই খেলায় যেকোন কিছু হতে পারে। তবে আমি বলতে পারি, বাংলাদেশ দল সামনে আরও ভাল খেলবে। তারা আর আগের মতো নয়, অনেক বদলে গেছে। পরিবর্তন এসেছে মানসিকতায় এবং শারীরিক সক্ষমতায়।’
এদিকে ওমানের কোচ এরিয়েখ কোম্যান জানিয়েছেন, ‘আমার দল চার গোলে জেতায় এবং পূর্ণ তিন পয়েন্ট পাওয়ায় খুশি হয়েছি। আর আমাদের পরের ম্যাচ ভারতের বিপক্ষে। আমি মনে করি ওই ম্যাচটা আমাদের জন্য অনেক কঠিন হবে। কেননা বাংলাদেশের চেয়ে ভারতের দলে মানসম্পন্ন খেলোয়াড় বেশি।
রাংকিংয়ে ১০০ ধাপ ওপরে ওমান, তাদের ডেরায় ফলাফল নিয়ে চিন্তা-শঙ্কা ... দুই-ই ছিল। শেষ পর্যন্ত সেই শঙ্কাই সত্যি হয়েছে। তবে বড় ব্যবধানে হারলেও বাংলাদেশ দল কিন্তু মোটেও খারাপ খেলেনি। বিশেষ করে প্রথমার্ধে। ওই অর্ধে তারা এতটাই ভাল খেলে যে, প্রতিপক্ষকে কোন গোলই করতে দেয়নি। বিরতির সময় তাই স্কোরলাইন ছিল ০-০। স্টেডিয়ামে উপস্থিত দর্শকদের অর্ধেকেই ছিল ওমান প্রবাসী বাংলাদেশী। তাদের অকুণ্ঠ সমর্থন ছিল লাল-সবুজ বাহিনীর প্রতি। তবে বিরতির পর বদলে যায় দৃশ্যপট।
বিশ্বকাপ বাছাইয়ের দ্বিতীয় পর্বে বাংলাদেশ খেলছে গ্রুপ ‘ই’তে। গ্রুপের অন্য চার দল হলো কাতার, ওমান, আফগানিস্তান ও ভারত। ৫ দলের মধ্যে র্যাংকিংয়ে সব থেকে পিছিয়ে বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচে তারা আফগানিস্তানের বিপক্ষে ১-০ গোলে হেরে যায়। ১০ সেপ্টেম্বর তাজিকিস্তানে (নিরপেক্ষ ভেন্যু) অনুষ্ঠিত হয় ম্যাচটি। এরপর ১০ অক্টোবর ঢাকায় বিশ্বকাপের স্বাগতিক দল কাতারের বিপক্ষে কঠিন লড়াই করে ২-০ গোলে হেরে যায় তারা। ১৫ অক্টোবর ভারতের বিপক্ষে এ্যাওয়ে ম্যাচে জামাল ভুঁইয়াদের পারফরম্যান্সটা ছিল আরও চোখ ধাঁধানো। কোলকাতায় অনুষ্ঠিত ম্যাচে এগিয়ে গিয়েও শেষ পর্যন্ত ১-১ গোলে ড্র করে বাংলাদেশ।
৯ নভেম্বর ওমানে একটি প্রস্তুতি ম্যাচও খেলে ফেলেছে জাতীয় দল। ওমান মাসকট ক্লাবকে সে ম্যাচে ৩-১ গোলে হারিয়ে ভালই প্রস্তুতি সেরে নেয় লাল-সবুজরা।
গ্রুপে ৫ দলের মধ্যে ৯ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে আছে ওমান। সমান ম্যাচে ১ পয়েন্ট নিয়ে তলানিতে বাংলাদেশ। তাদের পরের ম্যাচ আগামী বছরের ২৬ মার্চ, ঢাকায়। প্রতিপক্ষ আফগানিস্তান।