অনলাইন রিপোর্টার ॥ সরকার সারের দাম আরও কমানোর চিন্তা করছে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক।
তিনি বলেন, আমরা এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর ও মন্ত্রিসভা কমিটিতে পাঠাবো। বিশেষ করে ডিএপিপি সারের দাম কমানোর চিন্তা করা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (০৭ নবেম্বর) সচিবালয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সার বিষয়ক জাতীয় সমন্বয় ও পরামর্শক কমিটির দ্বিতীয় সভা শেষে তিনি এ কথা জানান।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, আমরা সারের দাম আরও কিছু কমাতে পারি। সারে যদি সাবসিডি দেই, তাহলে সব চাষিরাই তার সুফল পাবেন। সে দিকটা বিবেচনায় রয়েছে। সম্ভব হলে দ্রুত উচ্চ পর্যায়ে এ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হবে। যাতে সারের দাম আরও কমানো যায়। কমালে আমাদের কৃষকরা লাভবান হবেন।
তিনি বলেন, বোরো মৌসুমে সারের অনেক প্রয়োজন হবে, তাই এ সভা করা হয়েছে। সারের দাম জাতীয় পর্যায়ে নির্ধারণ করা হয়ে থাকে। কিন্তু কতটুকু কিনবো, কীভাবে কিনবো, সরকারি বা বেসরকারি পর্যায়ে কোন সংস্থা কতটুকু আনবে এগুলো আমরা নির্ধারণ করে থাকি। আমরা আজ সবকিছু আলোচনা করেছি। আলোচনায় একটা বিষয় সুস্পষ্ট, আমাদের এ মুহূর্তে ২৪ লাখ ৩২ হাজার টন সার মজুদ রয়েছে। এরমধ্যে টিএসপি ৩ লাখ ৪৯ হাজার টন, ডিএপি ৫ লাখ ৯৭ হাজার টন, এমওপি ৭ লাখ ১৫ হাজার টন, ইউরিয়া ৭ লাখ ৭১ হাজার টন। আর দেশের বার্ষিক সারের চাহিদা ৫০ লাখ টন। অন্য বছরের তুলনায় সব সারই বেশি আছে।
আব্দুর রাজ্জাক বলেন, এখন রবি মৌসুম চলছে। রবির চারা রোপন চলছে। ডিসেম্বরের শেষে বোরো মৌসুম শুরু হবে। মূলত এ সময়ে সারের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন হয়। সারের কোনো সমস্যা হবে না, এটুকু বলতে চাই। যথেষ্ট মজুদ রয়েছে। পাইপ লাইনে যা আছে, তা দিয়ে আগামী বোরো মৌসুম পর্যন্ত সার নিয়ে সমস্যা হবে না। কৃষকেরও কোনো ভোগান্তি হবে না।
‘এছাড়া আমরা কৃষি যন্ত্রপাতি আমদানিতে ভর্তুকি দিচ্ছি। এ বছর আমরা কৃষি যন্ত্রপাতিতে ভর্তুকি শুরু করেছি। একটা প্রকল্পও আমরা নিয়ে আসছি। কাজে কৃষিকে লাভবান করতে সরকার নানা রকম পদক্ষেপ নিয়েছে। যাতে কৃষক ফসল উৎপাদন করে ন্যায্য দামটা পায়।’
তিনি বলেন, বাংলাদেশ কৃষি প্রধান দেশ। এ দেশে কৃষির গুরুত্ব অপরিসীম। জিডিপির ১৪ ভাগ কৃষি থেকে আসে। ৪০ ভাগ মানুষ কৃষির ওপর জীবিকা নির্বাহ করেন। দেশের ৬০ থেকে ৭০ ভাগ মানুষ গ্রামে বাস করেন। তারা কোনো না কোনোভাবে কৃষির সঙ্গে জড়িত। ফলে সার কৃষি কাজের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ।
‘সারের দাম নিয়ে এ দেশে অনেক রাজনৈতিক অস্তিরতা হয়েছে। অনেক কৃষককে জীবনও দিতে হয়েছে। কাজেই এ কমিটির গুরুত্ব অনেক। সার ক্রয় এবং বিতরণে কৃষক যেন কোনো হযরানির শিকার না হয়, এজন্য যথেষ্ট পরিমাণে ও যথা সময়ে কৃষকের কাছে সার পৌঁছে যায়। সার নিয়ে যাতে কোনো ফসলের ক্ষতি না হয় বা এর কোনো বিরুপ প্রভাব না পড়ে এ বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে এ কমিটি কাজ করে।’