নিজস্ব সংবাদদাতা, কিশোরগঞ্জ ॥ জেলার কটিয়াদীতে পাওনা টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে কৃষক মতিউর রহমান (৬০) হত্যা মামলায় একজনের মৃত্যুদ- ও ছয়জনের যাবজ্জীবন কারাদ- দিয়েছে আদালত। এছাড়া রায়ে প্রত্যেককে দুই লক্ষ টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। একই মামলায় অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় অপর পাঁচ আসামীকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়েছে। সোমবার সকালে কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-১ এর বিচারক মুহাম্মদ আব্দুর রহিম আসামীদের উপস্থিতিতে উপরোক্ত রায় দেন। মৃত্যুদ-প্রাপ্ত মোহাম্মদ ওরফে খোকন (৩৫) কটিয়াদী উপজেলার করগাও পাচলীপাড়া গ্রামের তৈয়বুর রহমানের ছেলে। যাবজ্জীবন দ-প্রাপ্তরা হলো-মৃত্যুদ-প্রাপ্ত খোকনের পিতা তৈয়বুর রহমান (৫২), দুই ভাই স¤্রাট (২২) ও রোমান (২৮), একই এলাকার আশ্রাব আলী (৪০), আরব আলী (৩২) ও মজিবুর রহমান (৩৫)।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, পাচলীপাড়া গ্রামের মৃত আঃ আজিজের ছেলে কৃষক মতিউর রহমানের কাছ থেকে তার ভাগিনা দেওয়ান মিয়াকে রেলওয়েতে চাকরি দেয়ার কথা বলে একই এলাকার মামলার আসামী তৈয়বুর রহমান চল্লিশ হাজার টাকা নেন। কিন্তু চাকরি দিতে না পারায় টাকা ফেরত চাওয়াকে কেন্দ্র করে আসামীদের সঙ্গে মতিউর রহমানের বিরোধ বাধে। ২০১১ সালের ২৭ মার্চ সন্ধ্যায় করগাঁও বাজার থেকে ভ্যানগাড়িতে করে বাড়ি যাওয়ার পথে পাচলীপাড়া এলাকায় আসামীরা গতিরোধ করে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে মতিউর রহমানকে গুরুতর জখম করে। পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় বাজিতপুরের জহুরুল ইসলাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় পরদিন নিহতের ছেলে মোঃ রিয়াজ উদ্দিন বাদী হয়ে ১৯ জনের নামাল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ১০-১২ জনকে আসামী করে কটিয়াদী থানায় হত্যা মামলা করেন। পরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মতিউর রহমান একই বছরের ২১ অক্টোবর ১২ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। সোমবার আদালত আসামীদের মধ্যে উপরোক্ত একজনকে মৃত্যুদ- ও ছয়জনকে যাবজ্জীবন দন্ডাদেশ দেয়। এছাড়া অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় মামলার অপর পাঁচ আসামী পাচলীপাড়া গ্রামের শামীম (৩৫), ইছাম উদ্দিন (৪০), ফরজ আলী (৩০), বাত্তু (২৫) ও ইব্রাহীমকে (২৫) বেকসুর খালাস দিয়েছে। রাষ্ট্রপক্ষে এপিপি আবু সাঈদ ইমাম ও আসামীপক্ষে এ্যাডভোকেট অশোক সরকার মামলাটি পরিচালনা করেন।